নবনীতা মণ্ডল, নয়াদিল্লি : ২০১৫ সাল থেকে চলছিল সংসদ হামলার পরিকল্পনা। জানা গিয়েছে, ১৩ ডিসেম্বর শীতকালীন অধিবেশন চলাকালীন সংসদে নিরাপত্তা লঙ্ঘনের যে ঘটনা ঘটেছে, তার প্রস্তুতি শুরু হয়ে আরও আগে। তদন্তে উঠে এসেছে, অভিযুক্ত ব্যক্তিরা ২০১৫ সাল থেকে লোকসভায় হামলার পরিকল্পনা করছিলেন। আর করছিলেন। এই চাঞ্চল্যকর তথ্যের মাধ্যমে বিরোধীদের তোলা কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা দপ্তরের ব্যর্থতার অভিযোগেই সিলমোহর পড়ল। তদন্তকারী আধিকারিকরা জানান, তদন্তের মাধ্যমে উঠে এসেছে, প্রধান অভিযুক্ত মনোরঞ্জন ডি এবং সাগর শর্মা (যারা লোকসভার ভিতরে ঝাঁপ দিয়েছিলেন) ছিলেন এই দলের প্রাথমিক সদস্য। পরে এতে যোগ দেন ললিত ঝা, নীলম দেবী এবং অমল শিন্ডে।
আরও পড়ুন-প্রধানমন্ত্রী কথা রাখেন না, তুলোধোনা ডেপুটি স্পিকারের, মুখ্যমন্ত্রীর গ্যারান্টি খাঁটি, উপকৃত মানুষ
আরও তিনজনকে, যারা অনলাইন সামাজিক মাধ্যমের অংশ ছিলেন, তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জানা গিয়েছে, তাঁদের মধ্যে একজনকে পরিকল্পনা অনুযায়ী সমস্ত কিছুর ব্যবস্থা করার কাজে লাগানো হয়। এর থেকেই স্পষ্ট, রাজধানীতে খোদ সংসদের ভিতরে প্রশাসনের নাকের ডগায় যেখানে সবথেকে নিরাপদ জায়গা হওয়া উচিত সেখানেই হামলা চালানোর পরিকল্পনা চলছিল গত আট বছর ধরে। অথচ ঘুণাক্ষরেও তা জানতে পারেনি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা দপ্তর। এই চূড়ান্ত গাফিলতি নিয়ে ইতিমধ্যেই সোচ্চার বিরোধীরা।
পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযুক্তরা স্বীকার করেছেন যে তারা পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করার আগে বহুবার নিজেদের মধ্যে দেখাসাক্ষাৎ করেছেন। অভিযুক্তদের দাবি, এই হামলার মাধ্যমে তাঁরা সরকারকে তাদের দাবি পূরণে বাধ্য করতে চেয়েছিলেন।
আরও পড়ুন-মনরেগায় মজুরি নিয়ে কেন্দ্রের ব্যাখ্যা চাইল তৃণমূল
পুলিশ অভিযুক্তদের ‘আসল উদ্দেশ্য’ নিশ্চিত করতে পলিগ্রাফ পরীক্ষা করতে চায়। জানা গিয়েছে, মনোরঞ্জন ডি এবং অপর দুই ব্যক্তি দিল্লির সদর বাজার থেকে তেরঙ্গা পতাকা কিনেছিলেন এবং তারপর ইন্ডিয়া গেটের কাছে একত্রিত হয়ে দলের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তদন্তে জানা গিয়েছে, অভিযুক্তরা উত্তরপ্রদেশের লখনউতে তৈরি করা দুই জোড়া জুতা ব্যবহার করেছিলেন। যেগুলির মধ্যে পার্লামেন্টের ভিতরে ধোঁয়ার ক্যানিস্টার নেওয়ার কাজ করা হয়।
এদিকে, সিআরপিএফ ডিরেক্টর-জেনারেল অনীশ দয়াল সিংয়ের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে, যারা সংসদের নিরাপত্তার বিষয়গুলি খতিয়ে দেখে আগামী সপ্তাহে তাদের চূড়ান্ত রিপোর্ট জমা দেবে।