প্রতিবেদন : শীর্ষ আদালতের রায় পছন্দ না হওয়ায় এবার সংসদীয় কমিটির বকলমে নিজেদের ইচ্ছামতো আইন প্রণয়নে উদ্যোগী হল মোদি সরকার। আর সেজন্য সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ উড়িয়ে পরকীয়াকে আবারও ফৌজদারি অপরাধ হিসাবে চিহ্নিত করতে চায় বিজেপি নেতৃত্বাধীন সংসদীয় কমিটি। কমিটির মতে, বিবাহ প্রতিষ্ঠান পবিত্র এবং এটি অবশ্যই সুরক্ষিত হওয়া উচিত। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের সংসদীয় স্থায়ী কমিটি এই মতের পক্ষে সুপারিশ করেছে।
আরও পড়ুন-বাংলা এখন বাণিজ্যবান্ধব : শশী
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর পেশ করা ভারতীয় ন্যায় সংহিতা বিলের উপর আলোচনা শেষে স্থায়ী কমিটির গৃহীত প্রতিবেদনে সরকারকে এই সুপারিশ করা হয়েছে। মঙ্গলবার দাখিল করা প্রতিবেদনে আরও যুক্তি দেওয়া হয়েছে, সংশোধিত পরকীয়া আইন একটি ‘লিঙ্গ-নিরপেক্ষ’ অপরাধ হিসাবে বিবেচিত হবে এবং পুরুষ ও মহিলাকে সমানভাবে দায়বদ্ধ রাখবে৷ কমিটির এই রিপোর্ট সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ সদস্যের বেঞ্চের যুগান্তকারী রায়কে অগ্রাহ্য করতে চেয়েছে। শীর্ষ আদালতের রায় ছিল ‘‘পরকীয়া অপরাধ হতে পারে না এবং হওয়া উচিতও নয়।’’ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান বিজেপি সাংসদ ব্রিজলাল। কমিটিতে শাসক দলের সংখ্যাগরিষ্ঠতাকে হাতিয়ার করে এবার সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ রদ করতে তৎপর হয়েছে মোদি সরকার।
আরও পড়ুন-বাংলার কুটিরশিল্প এবং বিশ্ববাণিজ্যের মেলবন্ধন, পুরীর বঙ্গনিবাসে গ্রামীণ স্থাপত্য
এদিকে কমিটির অন্যতম সদস্য কংগ্রেস সাংসদ পি চিদম্বরম একটি ভিন্নমতের নোট জমা দিয়েছেন, যাতে বলা হয়েছে, কোনও দম্পতির জীবনে প্রবেশ করার কোনও অধিকার নেই রাষ্ট্রের। ২০১৮ সালে প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্টের একটি বেঞ্চ বলেছিল যে পরকীয়া একজন নাগরিকের অপরাধের ভিত্তি হতে পারে বিবাহ বিচ্ছেদের ক্ষেত্রে, কিন্তু এটি কোনওভাবে ফৌজদারি অপরাধ হতে পারে না। আদালতের যুক্তি ছিল, ১৬৩ বছরের পুরনো, ঔপনিবেশিক যুগের আইনটি স্বামী হবেন স্ত্রীর মালিক— এধরনের অবৈধ ধারণা অনুসরণ করে। আদালত তখন পরকীয়া আইনকে প্রাচীন, স্বেচ্ছাচারী এবং পিতৃতান্ত্রিক বলে অভিহিত করেছিল এবং বলেছিল যে এটি একজন মহিলার স্বাধিকার এবং মর্যাদা লঙ্ঘন করেছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের স্থায়ী কমিটির রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, পরকীয়া সংক্রান্ত আইন ফিরিয়ে আনা হোক। এবং পুরুষ এবং মহিলা উভয়কেই শাস্তির মুখোমুখি হওয়ার বিধান যুক্ত হোক।