প্রতিবেদন : বিলকিস মামলায় ১১ জন ধর্ষকের মুক্তির সিদ্ধান্ত খারিজ করেছে দেশের শীর্ষ আদালত। গুজরাতের বিজেপি সরকারের অসৎ উদ্দেশ্য ফাঁস করে কড়া সমালোচনা করেছেন বিচারপতিরা। স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, বিলকিস বানো মামলায় ধর্ষণ ও খুনে দোষী সাব্যস্ত সব অপরাধীকেই ফিরে যেতে হবে জেলে। তবে অপরাধীদের কেউই এখনও আত্মসমর্পণ করেনি। বরং একেক জন একেক ‘অজুহাতে’ এড়াতে চাইছে জেলযাত্রা। এখনই জেলে যেতে না চেয়ে ৩ জন দোষী আবেদন করেছে সুপ্রিম কোর্টে। শুক্রবার শীর্ষ আদালতে সেই মামলার শুনানি।
আরও পড়ুন-বিজেপির রামরাজ্যের নমুনা! বিনা দোষে জেল খাটল কিশোর, বুলডোজারে বাড়ি ভাঙল পুলিশ
আবেদনকারী সাজাপ্রাপ্তদের আইনজীবী বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বিভি নগরথানার বেঞ্চে এই মামলার দ্রুত শুনানির আর্জি জানান। সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে যারা এই আবেদন করেছে তারা হল গোবিন্দভাই, রমেশ চন্দনা এবং মিতেশ ভাট। গোবিন্দভাইয়ের আবেদন, বৃদ্ধ বাবা-মার দেখভালের জন্য তাকে সময় দেওয়া হোক, রমেশের বক্তব্য ছেলের বিয়ের জন্য ৬ সপ্তাহ সময় চাই। তৃতীয়জন মিতেশ ভাটের অজুহাত, ফসল উৎপাদন করতে বাড়তি ৬ সপ্তাহ সময় লাগবে। উল্লেখ্য, এই মামলায় অপরাধীদের আগাম জামিন দেওয়ার প্রেক্ষিতে গুজরাত সরকারকে তীব্র ভর্ৎসনা করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। তাদের কীভাবে আগাম মুক্তি দেওয়া হয়েছিল সে নিয়ে প্রশ্নও তোলা হয়। সরকারের বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃতভাবে তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয়। এবার ওই সাজাপ্রাপ্তদের ৩ জন সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করে জানিয়েছে, তাদের যেন জেলে ফেরত যাওয়ার দিন কিছুটা পিছিয়ে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন-জন্মের প্রমাণপত্র হিসেবে আর গণ্য নয় আধার বিজ্ঞপ্তি জারি করল কেন্দ্র
২০০২ সালে গুজরাত হিংসার সময় বিলকিস বানোকে গণধর্ষণ এবং তাঁর শিশুকন্যা-সহ পরিবারের সদস্যদের হত্যার ঘটনায় সাজাপ্রাপ্ত ১১ জনকে মুক্তি দিয়েছিল গুজরাত সরকার। ২০২২ সালের ১৫ অগাস্ট মুক্তি পায় ওই সাজাপ্রাপ্তরা। বিজেপির তরফে এই অপরাধীদের ফুলের মালা-মিষ্টিতে স্বাগত জানানোর মতো কুৎসিত কাণ্ড প্রত্যক্ষ করে গোটা দেশ। সরকারি তরফে সাফাই দেওয়া হয়, জেলে ওই ১১ অপরাধীর ব্যবহার দেখেই নাকি তাদের মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যদিও সুপ্রিম কোর্ট গুজরাত সরকারকে কড়া ভর্ৎসনা করে এই যুক্তি শেষপর্যন্ত খারিজ করে দেয়। সুপ্রিম কোর্ট চূড়ান্ত রায়ে জানায়, ১১ জন আসামিকেই আগামী রবিবারের মধ্যে জেলে ফেরত যেতে হবে।