একসময় মরুভূমি ছিল আল খোরের এই জায়গায়। আজ সেখানে ৬০ হাজার মানুষের আধুনিক ফুটবল মাঠ। আল বায়েত স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপের (FIFA World Cup Qatar) উদ্বোধন দেখতে দেখতে সেসব মনে পড়ছিল। মাঠের মধ্যে তখন আলোর খেলা চলছে। মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে যা দেখলেন সবাই।
বিশ্বকাপ নিয়ে সেই কবে থেকে আলোচনা শুনছিলাম। রবিবার তার ঢাকে কাঠি পড়ল। হলিউড অভিনেতা মর্গ্যান ফ্রিম্যান যখন মঞ্চে দাঁড়িয়ে বললেন, ফুটবল স্ট্যান্ডস দ্য ওয়ার্ল্ড, হাততালিতে মাঠ ভরে গেল। খুব সত্যি কথা বলে ফেললেন অশীতিপর অভিনেতা। আমরা যারা এখানে থাকি, গত কয়েকদিনে সেটা বুঝেছি। এত দেশ, এত লোক, এত ভাষা, কিন্তু সবাই এক ফুটবলের টানে কেমন মিলেমিশে একাকার। ব্রাজিল সমর্থককে দেখছি খোলামনে লিও মেসির প্রশংসা করছে। সেই মেসি, যিনি এখানে আসা ইস্তক লুকোচুরি খেলছেন। সেটা অন্য ব্যাপার, কিন্তু ফুটবল কেমন মিলিয়ে দিয়েছে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনাকে। ২৮ দিন পর ফুটবলের এই মহোৎসব শেষ হয়ে যাবে, কিন্তু থেকে যাবে মানুষে-মানুষে ভালবাসার রেশ।
আরও পড়ুন-টানা দুই ম্যাচ হেরে চাপে মহামেডান
বয় ব্যান্ড বিটিএসের জাঙ্গ কুক যখন পারফর্ম করছিলেন, চোখের পলক পড়েনি কারও। বর্তমান প্রজন্মের কাছে খুব জনপ্রিয় এই তরুণ। তিনি গাইলেন ড্রিমার্স, যা এই বিশ্বকাপের থিম সঙ। ব্যাক গ্রাউন্ডে বাজল, প্লিজ ডোন্ট টেক মি হোম এবং ওলে-ওলে-ওলে। তাঁর সঙ্গে গাইলেন কাতারের জনপ্রিয় গায়ক ফাহাদ-অল-কাবাইসি। ‘৯৮-এর উদ্বোধনে রিকি মার্টিন, ২০১০-এ শাকিরা ও ২০১৪-তে পিট বুল ও জেনিফার লোপেজ মঞ্চে যে গান করেছিলেন, তার একটা মিশ্র কম্পোজিশনও কানে ভেসে এল।
আল বায়েত স্টেডিয়াম (FIFA World Cup Qatar) দোহা শহরের প্রাণ কেন্দ্র থেকে প্রায় ৪০ কিমি দূরে। এখানে পথ-ঘাট এত ভাল যে এটা কোনও দূরত্বই নয়। দেখছিলাম আজ শহরের সব রাস্তাই যেন স্টেডিয়ামে গিয়ে মিশেছে। একটা সময় দেখলাম ফ্রান্সের প্রাক্তন ফুটবলার মার্সেই দেশাই গতবারের ট্রফিটা নিয়ে এলেন মাঠে। ফ্রান্স গতবারের চ্যাম্পিয়ন। ছবিটা বেশ প্রতীকি মনে হল। কন্তে, পোগবার পর এবার করিম বেঞ্জেমাকেও হারিয়েছে ফ্রান্স। কাপটা আবার ফেরত নিয়ে যাবেন, দেশাই বোধহয় সাহস করে ভাবতে পারছেন না!