প্রতিবেদন : আবারও খেলা হবে। তবে এবার শুধু রাজনৈতিক স্লোগান নয়। রাজ্য সরকারের নতুন উদ্যোগ। এবার থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারই জব হোল্ডারদের ১০০ দিনের কাজ দেবে (100 days of work)। টাকাও দেবে রাজ্য সরকারই। কেন্দ্রীয় সরকারের মুখাপেক্ষী না থেকে নিজেদেরটা নিজেরাই বুঝে নেবে রাজ্য। শুক্রবার একুশের মঞ্চ থেকে নিজেই এই ঘোষণা করে বললেন, এই প্রকল্পের নাম হবে খেলা হবে। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে একশো দিনের কাজের টাকা আটকে রেখেছে কেন্দ্র। তার বিরুদ্ধে এবার প্রতিবাদ আছড়ে পড়বে দিল্লিতে। তার আগে মুখ্যমন্ত্রীর এই কুশলী সিদ্ধান্তে নিঃসন্দেহে চাপ বাড়াবে বঙ্গ বিজেপির সেই ধোঁকাবাজ নেতা-নেত্রীদের, যারা বাংলা থেকে ভোট নিয়ে বাংলার মানুষদেরই পেটে লাথি মারার বন্দোবস্ত করেছে। এদিন একই সঙ্গে ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনকে মাথায় রেখে নেত্রী বললেন, ইন্ডিয়া জিতবে, বিজেপি হারবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, আমরা খুশি যে ইন্ডিয়া তৈরি হয়েছে। এখন থেকে সব কর্মসূচি এই ব্যানারে হবে। আমাদের চেয়ার চাই না। দেশ থেকে বিজেপিকে তাড়াতে চাই। পঞ্চায়েতে বিপুল জয়ের জন্য মা-মাটি-মানুষকে ধন্যবাদ জানিয়ে এদিন মণিপুরের ভয়াবহ হিংসা নিয়েও প্রধানমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় সরকারকে তুলোধোনা করেছেন। এবারের একুশের জমায়েত সর্বকালীন রেকর্ড গড়েছে। গ্রাম-বাংলা উজাড় করে মানুষ এসেছেন শহিদ সমাবেশে। আবেগের একুশে সমাবেশ আবারও দেখিয়ে দিল তৃণমূল কংগ্রেসই বাংলার বর্তমান ও ভবিষ্যৎ। মানুষ তৃণমূল কংগ্রেসকেই চায়। নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই চায়।
মণিপুরের পাশে বাংলা : বিজেপি মুখে বেটি বাঁচাও-এর কথা বলে অথচ মণিপুরে মেয়েরা জ্বলছে, মরছে, ধর্ষিত হচ্ছে আর উনি ফিরেও তাকাচ্ছেন না। বিজেপি সরকার মহিলাদের সম্মান করে না। মণিপুরের মৃতদের উদ্দেশ্যে এক মিনিট নীরবতা পালন করে একুশের সভা। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা কয়েকজন মুখ্যমন্ত্রী একসঙ্গে মণিপুর যাব। আমি বাকিদের সঙ্গেও কথা বলব। মণিপুর নিয়ে আমরা ছেড়ে কথা বলব না। আমাদের পড়শি রাজ্য। বাংলা মণিপুরের পাশে আছে।
ইন্ডিয়ার ব্যানারে আন্দোলন : এখন থেকে সব আন্দোলন ইন্ডিয়ার ব্যানারেই হবে। আমি খুশি যে আমাদের জোট হয়েছে। আমি চেয়ার চাই না, শান্তি চাই। বিজেপিকে দেশ থেকে তাড়াতে চাই। বিজেপিকে আর সহ্য করা যাচ্ছে না। ওরা সব সীমারেখা পার করে গিয়েছে।
আরও পড়ুন- নতুন ভারত আজি জাগ্রত দ্বারে জিতেগা INDIA
পঞ্চায়েতে জয়ে ধন্যবাদ : সদ্য হওয়া পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিপুল জয়ের জন্য মা-মাটি-মানুষকে ধন্যবাদ জানালেন নেত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ, ফিরে গিয়ে শান্তিপূর্ণ ভাবে এবার বোর্ড গঠন করবেন। নির্বাচন কমিশনের গাইডলাইন মেনে পুরোটা করতে হবে। ভাল করে কাজ করতে হবে। তিনটি জায়গায় বিক্ষিপ্ত গন্ডগোল বাদ দিলে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হয়েছে। গোটা পঞ্চায়েত পর্বে ১৮ জন তৃণমূল কর্মী খুন হয়েছে। এরপরেও বিরোধীরা কুৎসা-অপপ্রচার করে যাবে! আপনারা সাবধানে থাকবেন, বিজেপি সাজানো ঘটনা দেখিয়ে বাংলার বদনাম করবে। আমাকে গালি দিন কিন্তু বাংলাকে বদনাম করবেন না।
বাম আমলে কত মৃত্যু : বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর আমলে ২০০৩ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনে ৮৯ জন খুন হয়েছিল। ২০০৮ সালে ভোটের দিন ৪০ জন মারা যায়। এরপরেও কোন মুখে কথা বলে ওরা। হিংসা হিংসা করে চেঁচাচ্ছে রোজ।
উন্নয়ন আমরাই করব : বাংলায় ৬৭টি সামাজিক প্রকল্প চলে। দেশে কর্মসংস্থান কমেছে, রাজ্যে কর্মসংস্থান বেড়েছে ৪০%। আবাস যোজনার টাকা আটকে রেখেছে। ১১ লক্ষ বাড়ি চলতি বছরে আমরাই তৈরি করে দেব। আমরা ১০০ দিনের প্রকল্পে ২৬ দিন কাজ দিয়েছি। বাকিটাও দেব। এছাড়া আমার কাছে ৭০-৮০ হাজার বার্ধক্য পেনশনের আবেদন এসেছে। করে দেব। সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকে ফোনে তিন লক্ষের বেশি কল এসেছে। সেগুলির সমস্যাও মেটাব।
এরপরই বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দেগে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, কাক মরলেও কেন্দ্র টিম পাঠায়। রাজ্যে এখনও পর্যন্ত ১৫৪টি কেন্দ্রীয় টিম এসেছে। অথচ টাকা দেওয়ার বেলায় নেই। কেন্দ্রের ১১০০ টাকার গ্যাসে বিনা পয়সার চাল সিদ্ধ হচ্ছে। টমেটো ১২০ টাকা কেজি। মণিপুর জ্বলছে। এরপরেও বিজেপি বড় বড় কথা বলবে! এর সঙ্গে মিডিয়া ট্রায়াল চলছে। চলছে মিথ্যাচারও। বিজেপি তো মিডিয়া কিনে রেখেছে। এরপর যদি বিজেপি ফেরে তবে গণতন্ত্র ধ্বংস হয়ে যাবে। বিজেপিকে ছুঁড়ে ফেলে দিন।