আগরতলা : পুলিশ বলেছিল ১৫ সেপ্টেম্বর অন্য একটি দল নাকি গোটা আগরতলা জুড়ে মিছিল করবে; তাই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদযাত্রা করতে দেওয়া যাবে না। বাস্তবে কোনও দলকে রাস্তায় খুঁজে পাওয়া গেল না। গোটা শহর দূরের কথা, কোনও একটি এলাকাতেই ছাপ ফেলার মতো কিছু নেই। তৃণমূলের রুটও ফাঁকা। বোঝাই গেল ষড়যন্ত্র করে বাধা দেওয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন : দুর্বল পারফরম্যান্সের জন্য কেন্দ্রও কি তাহলে দেশবিরোধী, খোঁচা রঘুরাম রাজনের
উল্টে এর মধ্যেই পথে দেখা গেল সেই তৃণমূল কংগ্রেসকেই। বুধবার আগরতলায় সিপিএম এবং বিজেপি থেকে অনেকে যোগ দেন তৃণমূলে। সাংবাদিক বৈঠকও হয়। তারপর অভিষেকের ১৫, ১৬ তারিখ পদযাত্রায় বাধা দেওয়ার প্রতিবাদে এবং ২২ সেপ্টেম্বর অভিষেকের পদযাত্রার সমর্থনে গান্ধীমূর্তির পাদদেশে প্রতীকী ধরনায় বসে তৃণমূল।
ছিলেন কুণাল ঘোষ, আশিসলাল সিং, মামুন খান, প্রকাশ দাস, তাপস রায়, শর্মিষ্ঠা দেব-সহ ত্রিপুরার শীর্ষনেতৃত্ব। সুবল ভৌমিকের ছোট ভাইয়ের মৃত্যুর কারণে তিনি এই কর্মসূচিতে ছিলেন না। তবে সাংবাদিক বৈঠকে তিনি ছিলেন। ত্রিপুরায় একটি লকআপ ডেথের ঘটনায় বিচারবিভাগীয় তদন্ত দাবি করে তৃণমূল।
সাংবাদিক বৈঠক ও গান্ধীমূর্তির পাদদেশে কুণাল ঘোষ বলেন, ২২ সেপ্টেম্বর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে পদযাত্রা হবে। এবার বাধা দিলে আমরা কোর্টে যাব। এভাবে তৃণমূলকে ঠেকানো যায়নি, যাবে না। পদযাত্রা নিয়ে ঘোষণার পাশাপাশি কুণাল, সুবল, আশিসরা এদিন আরও দুটি বিষয়ে জোর দেন। প্রথমত, গত দু’দিন ধরে বিজেপির নেতারা তৃণমূলকে আক্রমণ করতে গিয়ে যা যা বলেছেন, তার প্রতিটি বিষয়ের জবাব দেন তিনি। দ্বিতীয়ত, হঠাৎ বিজেপি সরকার যে দু’একটি প্রকল্প ঘোষণা করছে, সে সম্পর্কে কুণাল বলেন, ‘‘ঠেলার নাম বাবাজি। সাড়ে তিন বছর ঘুমোল। এখন তৃণমূল যা যা করবে বলছে, বাংলায় যা যা করা হয়েছে বলে মানুষ তুলনা করছেন, সেই চাপে পড়ে এরা ঘোষণা করতে বাধ্য হচ্ছে। এটাও ত্রিপুরাবাসীকে তৃণমূলের উপহার। চাপ না বাড়লে এরা কিছুই করত না। এখনও শুধু ঘোষণা। এরা কাজ করে না। নকল করে। কপিক্যাট। এখানে মুখ্যমন্ত্রী নকল করছেন বাংলার দিদিকে বলো, উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী বাংলার উন্নয়নের ছবিই বসাচ্ছেন নিজের বিজ্ঞাপনে।’’
কুণাল বলেন, ‘‘তফাত দেখুন। ত্রিপুরার সাংসদ ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিক বাংলায় গিয়ে দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে পুজো দিলেন শান্তিতে। আর এখানে অভিষেক মা ত্রিপুরেশ্বরীকে পুজো দিতে গেলে তেরোবার হামলা হয় এবং এখনও কেউ গ্রেফতার হয় না। এর থেকেই বোঝা যায় কোথায় গণতন্ত্র আর কোথায় জঙ্গলরাজ।’’
আরও পড়ুন : সরফারোশি কি তমান্না, গুরুদ্বারে ঘরের মেয়ে
এক সাংবাদিক বলেন, ‘‘ত্রিপুরার এক মন্ত্রী বারবার তৃণমূলের সমালোচনা করছেন। বলছেন তৃণমূল গুরুত্ব পাবে না। কী বলবেন?’’ কুণাল বলেন, ‘‘আপনার প্রশ্নের মধ্যেই উত্তর আছে। যখন ওই মন্ত্রীকে বারবার তৃণমূলকে নিয়ে বলতে হয়, তাতেই বোঝা যায় বিজেপি বুঝতে পারছে তারা হারতে চলেছে এবং তৃণমূল জিততে চলেছে। ওরা ভয় পাচ্ছে।’’