ভারত গণতান্ত্রিক দেশ, আইনের শাসন মেনে চলতে হবে কেন্দ্রকে : সুপ্রিম কোর্ট

Must read

পূর্ণেন্দু রায়, নয়াদিল্লি : মামলার শুনানি চলাকালীন সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতিদের ভর্ৎসনা শুনতে হচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকারের আইনজীবীদের, এই দৃশ্যটা মোদি জমানায় রুটিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। বুধবার আবার সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতি তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। সারা দেশের ট্রাইব্যুনাল নিয়োগের জন্য সুপারিশ থেকে ‘চেরি পিকিং’ অর্থাৎ নির্দিষ্ট পছন্দ করার জন্য সরকারের সমালোচনা করেছে।

আরও পড়ুন :সরফারোশি কি তমান্না, গুরুদ্বারে ঘরের মেয়ে

সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রীয় সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে সমস্ত সুপারিশকৃত ব্যক্তিদের দুই সপ্তাহের মধ্যে নিয়োগ করতে এবং পাল্টা হলফনামা দাখিল করতে। ট্রাইব্যুনাল সংস্কার আইনকে চ্যালেঞ্জ করে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জয়রাম রমেশের আবেদনের ভিত্তিতে মামলার শুনানি চলছে প্রধান বিচারপতি এন ভি রামানার বেঞ্চে। এই বেঞ্চের অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি এল নাগেশ্বর রাও। এদিন শুনানির সময় অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে ভেনুগোপাল এবং প্রধান বিচারপতি-সহ অন্যান্য বিচারকদের মধ্যে উত্তপ্ত বিতর্ক হয়। আদালত ট্রাইব্যুনালের জন্য সুপারিশের মাধ্যমে নিয়োগকে ‘বেছে বেছে’ করার জন্য সরকারকে তিরস্কার করে। সুপ্রিম কোর্ট ন্যাশনাল কোম্পানি আইন ট্রাইব্যুনাল (এনসিএলটি) এবং আয়কর আপিল ট্রাইব্যুনাল (আইটিএটি)-এ নিয়োগের বিষয়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে। বিতর্কের সময়, প্রধান বিচারপতি অ্যাটর্নি জেনারেলকে বলেন, নিয়োগ কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী সবার নিয়োগপত্র নিয়ে দুই সপ্তাহ পর ফিরে আসুন।

প্রধান বিচারপতি বলেন, আমি ন্যাশনাল কোম্পানি ল ট্রাইব্যুনালের (এনসিএলটি) নিয়োগ দেখেছি। আরও অনেক নাম সুপারিশ করা হয়েছিল কিন্তু নিয়োগের ক্ষেত্রে ‘চেরি পিকিং’ করা হয়েছিল। এটি কোন ধরনের নির্বাচন? ইনকাম ট্যাক্স আপিল ট্রাইব্যুনাল-এর ক্ষেত্রেও একই কাজ করা হয়েছিল। অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন যে, কিছু সুপারিশ অনুসরণ না করার অধিকার সরকারের আছে। কিন্তু বিচারপতি এল নাগেশ্বর রাও এতে আপত্তি জানিয়ে জিজ্ঞাসা করেন যে, সরকার যদি নিজের স্বাধীন ইচ্ছায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়, তবে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের নিয়ে গঠিত নিয়োগ সুপারিশ কমিটির পবিত্রতার কিছু অবশিষ্ট থাকে কি? শুনানির সময় কেন্দ্রীয় সরকারের আইনজীবীদের ধারাবাহিক ধারালো মন্তব্যের এক সময় প্রধান বিচারপতি বলেন, আমাদের একটি গণতান্ত্রিক দেশ। আপনাকে আইনের শাসন মেনে চলতে হবে।

আরও পড়ুন : ত্রিপুরা পুলিশের মিথ্যাচার, কোথায় মিছিল! প্রতিবাদে বিক্ষোভ-ধরনায় তৃণমূল কংগ্রেস

প্রধান বিচারপতি এন ভি রামানা বলেন যে, যেভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে তাতে আমরা খুব অসন্তুষ্ট। তিনি বলেন, আমি এনসিএলটি বাছাই কমিটিরও একজন সদস্য। আমরা ৫৪৪ জনের সাক্ষাৎকার নিয়েছি, যার মধ্যে আমরা ১১ জন বিচারবিভাগীয় সদস্য এবং ১০ জন প্রযুক্তিগত সদস্যের নাম সুপারিশ করেছি। কিন্তু তার মধ্যে ইচ্ছেমতো কয়েকজনকে সরকার নিয়োগ করেছে। বাকিরা অপেক্ষার তালিকায়। রামান্না বলেন, আমরা কোভিড মহামারীর মধ্যে এই কাজ চালিয়েছি। তাহলে আমাদের সময় নষ্ট করা হল কেন? এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক।

Latest article