প্রতিবেদন : আজ খড়দহের উপনির্বাচন। বিধানসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী কাজল সিনহা ২৮,০৪১ ভোটে বিজেপি প্রার্থীকে পরাজিত করলেও তিনি তাঁর জয় দেখে যেতে পারেননি। ফল ঘোষণার আগেই করোনা আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়। উপনির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী বর্ষীয়ান নেতা শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। খড়দহ বিধানসভা কেন্দ্র থেকে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা বরাবরই রাজ্যের মন্ত্রিত্ব সামলেছেন। বাম জমানায় একাধিকবার অসীম দাশগুপ্ত, রাজ্যে পট পরিবর্তনের পরেও ঘাসফুল জমানায় অমিত মিত্রও একাধিকবার রাজ্যের মন্ত্রিত্ব সামলেছেন। সেই ধারাকে বহমান রেখে এবারও রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী যে জয় পাবেন সে বিষয়ে খড়দহের মানুষ দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
আরও পড়ুন :প্লাবনে ক্ষতি ২০০ কোটি
উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক সুমিত গুপ্তা জানান,খড়দহ কেন্দ্রে মোট ভোটার ২ লক্ষ ৩২ হাজার ৩৪৮। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১,১৬,১৪৪, মহিলা ভোটার ১,১৬,১৯৭। ৮০ ও তার ঊর্ধ্বের ভোটার ৪৪৭১ জন, পিডব্লুডি ভোটার ৭১৪ জন। ১৮ থেকে ১৯ বছরের নতুন ভোটারের সংখ্যা ৪৯০৪ জন। পিডব্লুডি ও ৮০ বছরের ঊর্ধ্বে মোট ৬৪৪ জনের ভোট ইতিমধ্যেই বাড়ি গিয়ে পোস্টাল ব্যালটে করিয়েছে নির্বাচন কমিশন। তিনি আরও বলেন, খড়দহ উপনির্বাচনে ২০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। স্পর্শকাতর ও অতি স্পর্শকাতর বুথের সংখ্যা প্রায় ১০০টির মতো। মোট বুথের সংখ্যা থাকছে ৩৩৫। মেন বুথ ২৩৬টি ও অক্সিলারি বুথের সংখ্যা ৯৯টি। এদিকে গোসাবার ফল কী হবে, তা মোটামুটি জানা। ঘরের ছেলে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী সুব্রত মণ্ডল প্রচারে-প্রভাবে এগিয়ে। গোসাবা বিডিও অফিস থেকে ইভিএম-সহ ভোটসামগ্রী নিয়ে ইতিমধ্যে প্রত্যন্ত দ্বীপের উদ্দেশে ভোটকর্মীরা বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে বিভিন্ন জলযানে রওনা হয়েছেন। ৩৩০টি বুথের জন্য ১৫২০ ভোট কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে। নির্বাচনের জন্য নিরাপত্তা আঁটসাঁট করা হয়েছে। ২৩ কোম্পানি আধাসামরিক বাহিনী মোতায়েন থাকবে। এছাড়াও থাকবে রাজ্য পুলিশ। ১৮৯টি বুথে ওয়েবকাস্টিং হবে। ৪৩টি বুথে সিসি টিভি মনিটরিং করা হবে। ৪৩ জন মাইক্রো অবর্জাভার থাকছেন। এই কেন্দ্রের মোট ভোটার ২,৩০,০০৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ ১,১৮,১৩০ ও মহিলা ১,১১,৮৭২ জন। তৃণমূল কংগ্রেসের দৃঢ় বিশ্বাস, প্রয়াত বিধায়ক জয়ন্ত নস্করের যোগ্য উত্তরসূরি হবেন সুব্রত।
আরও পড়ুন :আজ থেকে যোগদান, নির্বাচনের জন্য সাত সদস্যের কমিটি
আবার শান্তিপুরের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী ব্রজকিশোর গোস্বামী উন্নয়নের পক্ষে ভোট করতে প্রস্তুতি সেরে ফেলেছেন। মানুষ তাঁর পক্ষে সাড়া দিয়েছেন। তৃণমূল কংগ্রেসের পোলিং এজেন্টরাও প্রস্তুত এবং বুথে বুথে রয়েছে ব্যস্ততা। সব মিলিয়ে ভোট ঘিরে শান্তিপুরে যেন উৎসবের চেহারা। অন্যদিকে উপ-নির্বাচনে যাতে কোনওরকম বিশৃঙ্খলা তৈরি না হয় সেদিকে কড়া নজর দিয়েছে প্রশাসন। নিরাপত্তায় মুড়ে দিনহাটা কলেজের ডিসিআরসিতে ভোট কর্মীদের বুথে বুথে পাঠানো হয়। ২০২১তে দিনহাটা বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপি সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক ৫৭ ভোটে জয়লাভ করলেও পরবর্তীতে তিনি বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেন। আজ এই কেন্দ্রে উপনির্বাচন। আগামী ২ নভেম্বর ভোট গণনা হবে দিনহাটা কলেজে। তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী উদয়ন গুহর জনসংযোগে আগেই সাড়া দিয়েছেন দিনহাটার মানুষ। দু’হাত ভরে তাঁকে আশীর্বাদ করেছেন। এখন জয় শুধু সময়ের অপেক্ষা। দিনহাটা বিধানসভা কেন্দ্রে ভোটার ২ লক্ষ ৯৮ হাজার ৮০ জন। তার মধ্যে পুরুষ ভোটার রয়েছেন ১ লক্ষ ৫৩ হাজার ৯২৪ এবং মহিলা ভোটার রয়েছেন ১ লক্ষ ৪৪ হাজার ১৫৬ জন। ভোটপ্রক্রিয়া শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে ইতিমধ্যে তৎপর হয়েছে প্রশাসন। এই উপনির্বাচনে মোট ৪১৭টি বুথ রয়েছে এই দিনহাটা বিধানসভা কেন্দ্রে। তারমধ্যে ২০৯টি বুথে থাকছে সিসিটিভির ব্যবস্থা। স্পর্শকাতর বুথ রয়েছে ৫১টি। এবং ১০২টি অতি স্পর্শকাতর বুথ। থাকছে ২৭ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী। এছাড়াও ১৩৬ জন অফিসার সহ মোট ৯০৩ জন রাজ্য পুলিশ কর্মী। ভোট কর্মী রয়েছেন ১৬৬৮ জন। দিনহাটা কলেজের ডিসিআরসি থেকে ভোট কর্মীরা সমস্ত ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে রওনা দিচ্ছেন। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে এবং শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহণ সম্পূর্ণ করতে বিভিন্ন স্পর্শকাতর এলাকায় পুলিশ বাহিনী ও কেন্দ্রীয় বাহিনী রুট মার্চ করছে। পরাজয় নিশ্চিত জেনে বিজেপি বিএসএফকে ব্যবহার করার চেষ্টা চালিয়েছে শেষ মুহূর্তে। বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি-সহ বেশ কয়েকজন নেতা গোপনে দিনহাটায় বিএসএফের ডিআইজির সঙ্গে দেখাও করেছেন। নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দায়ের করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু এই সাক্ষাৎকার কি কোনও গোপন অভিসন্ধি যাতে ভোটের দিন অস্থিরতা তৈরি হয়। তৃণমূল কংগ্রেস অবশ্য সতর্ক। উদয়ন গুহ দিনহাটার প্রতিনিধিত্ব করতে বিধানসভায় আসছেন।