প্রতিবেদন : বিধানসভার উপনির্বাচনে নবাগত তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী ব্রজকিশোর গোস্বামী ভোটপ্রচারে যেখানেই যাচ্ছেন, সেখানেই কাতারে কাতারে মানুষ দু’হাত ভরে তাঁকে আশীর্বাদ করছেন। তরুণ প্রজন্মের নবাগত প্রার্থীকে পেয়ে খুশি শান্তিপুরের মানুষ। প্রত্যেকেই বলছেন, নবাগত প্রার্থীকে পেয়ে আমরা ভীষণ আশাবাদী, আগামী দিনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একাধিক উন্নয়নমূলক প্রকল্পের কাজ দ্রুতগতিতে সম্পন্ন হবে ওঁর হাত ধরে। ব্রজকিশোরের সমর্থনে ২৬ অক্টোবর শান্তিপুরে জনসভা করবেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেও জানা গিয়েছে। বুধবার সকাল থেকে লাগাতার বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে উপনির্বাচনের ভোটপ্রচার সারেন সাংসদ ও শান্তিপুর উপনির্বাচনের পর্যবেক্ষক মহুয়া মৈত্র। সঙ্গে ছিলেন প্রার্থী ব্রজকিশোর গোস্বামী, দলের ব্লক সভাপতি নিমাই বিশ্বাস-সহ অন্য নেতারাও। ব্রজকিশোরের সমর্থনে রোড শোতে হাজির ছিলেন তৃণমূলের বহু কর্মী-সমর্থক। বুধবার বেলঘরিয়া ২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় ভোটপ্রচারে যান তৃণমূল নেতৃত্ব। সাংসদ ও মহুয়া মৈত্র বলেন, মানুষ বিজেপির বিভ্রান্তিকর মিথ্যা প্রতিশ্রুতি বুঝে গিয়েছেন। তাই দলে দলে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিচ্ছেন বিজেপির বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। ৩০ অক্টোবর শান্তিপুর বিধানসভার উপনির্বাচন। তার আগে ভোটপ্রচারে ঝড় তুললেন তৃণমূল প্রার্থী।
আরও পড়ুন : উত্তর থেকে দক্ষিণ, বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত বহু এলাকা
অপরদিকে হেভিওয়েটদের দিয়ে প্রচার, বুথে বুথে কর্মীসভা এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার কোনওটাই বাদ দিচ্ছেন না দিনহাটা বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী উদয়ন গুহ। বুধবার বৃষ্টি উপেক্ষা করেই দিনহাটা বিধানসভা কেন্দ্রের বড়শাকদল এলাকার বিভিন্ন বুথে বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার সারছেন ৬৭ বছরের প্রার্থী উদয়ন গুহ। এদিন তিনি বলেন, “বৃষ্টি থাকলেও উপায় নেই। প্রচার করতেই হবে।” দিনহাটা বিধানসভা কেন্দ্রের অধীনে রয়েছে দিনহাটা ১ ব্লকের ৪টি গ্রামপঞ্চায়েত, দিনহাটা ২ ব্লকের ১২টি গ্রামপঞ্চায়েত ও দিনহাটা পুরসভা। এই সব এলাকায় তিনি প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১২ থেকে ১৬টি সভা করছেন। ইতিমধ্যেই তাঁর হয়ে প্রচারে এসেছেন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, মন্ত্রী বুলুচিক বড়াইক, প্রতিমন্ত্রী পরেশচন্দ্র অধিকারী-সহ তৃণমূল কংগ্রেসের তাবড় তাবড় নেতৃত্ব। আগামী ২১ অক্টোবর আসছেন সুব্রত বক্সী, সোহম চক্রবর্তী ও দেবাংশু ভট্টাচার্য। ২৩ অক্টোবর আসবেন সায়নী ঘোষ এবং ২৭ অক্টোবর সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন উদয়ন গুহ বলেন, লক্ষ্মীপুজো এবং প্রবল বৃষ্টির মাঝেও আমাদের কর্মিসভা চলছে। আজ আমরা বড়শাকদল গ্রাম পঞ্চায়েতের বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে ঘুরে প্রচার করছি। বিরোধীদের দেখা পাওয়া যাচ্ছে না। এ বিষয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি গিরীন্দ্রনাথ বর্মন বলেন, ঝড়বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে আমরা কর্মিসভা করছি।
আবার খড়দহের প্রচারে গিয়ে ভূমিপুত্র প্রসঙ্গে বিজেপিকে দশ গোল দিলেন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। জাগোবাংলাকে শোভনদেববাবু জানান, “অসীম দাশগুপ্ত ভূমিপুত্র ছিলেন না। যিনি এবং যাঁঁরা ভূমিপুত্রের দোহাই দিয়ে খড়দহের উপনির্বাচনের বাজার গরম করছেন তাঁরাও ভূমিপুত্র নন। খড়দহের উপনির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বহিরাগত বলে প্রচার চালাচ্ছে বিজেপি। কিন্তু বিজেপি প্রার্থী বহিরাগত।” নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার পর থেকেই প্রচারে ঝড় তুলেছে তৃণমূল। জনসংযোগের খামতি নেই। বিরোধীরা সেখানে অনেকটাই পিছনের সারিতে। খড়দহের বিজেপি প্রার্থীর বহিরাগত প্রশ্নে এমনই যুক্তিপূর্ণ জবাব দেন শোভনদেব। এই প্রসঙ্গেই তিনি আরও বলেন, “অসীম দাশগুপ্ত ভূমিপুত্র ছিলেন না। এবারে যিনি খড়দহে বিজেপি প্রার্থী তিনি নিজেও নৈহাটির বাসিন্দা। অর্থাৎ যে প্রশ্ন করছেন সেই অর্থে তিনি নিজেও বহিরাগত।” শোভনদেবের কথায়, “তৃণমূল কংগ্রেস সংকীর্ণ নয়। বহিরাগত বিষয়টিকে প্রাধান্য দেয় না।”
আরও পড়ুন : বাপ্পি দা’র বাড়ির লক্ষ্মী
আবার নির্বাচনের দিন এগিয়ে আসছে। তাই দলের কর্মী ও বুথের এজেন্টদের নিয়ে শেষ প্রস্তুতি বৈঠক সেরে নিয়েছে গোসাবার তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব। বুধবার লক্ষ্মীপুজোর দিন থাকায় কোনও বড় প্রচার রাখা হয়নি। এদিন দুপুরে গোসাবার দলীয় কার্যালয়ে বুথের এজেন্টের দায়িত্বপ্রাপ্তদের ডাকা হয়েছিল। প্রার্থী সুব্রত মণ্ডল ছাড়া ব্লক ও জেলা নেতৃত্ব উপস্থিত ছিলেন। প্রতিটি এজেন্টকে দায়িত্বভার বুঝিয়ে দেওয়া হয়। বুথের মধ্যে কী কী করণীয় তা-ও নির্দেশ দেওয়া হয় নেতৃত্বের পক্ষ থেকে। এদিনের বৈঠক থেকে দলের কর্মীদের প্রতিটি বাড়ি গিয়ে ভোটের দিন জানিয়ে আসতে বলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকে প্রতিদিন দুটি করে জনসভা করা হবে। কোভিডবিধি মেনে জমায়েত হবে এই সভাগুলিতে। বক্তা হিসেবে জেলা ও রাজ্য নেতৃত্ব উপস্থিত থাকবেন। আগামী শনিবার পাঠানখালি কলেজ মাঠে বড় সভা করবেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।