প্রতিবেদন : ফুঁসছে নাগাল্যান্ড৷ ১৪টি কফিনকে ঘিরে নাগাল্যান্ডবাসীর প্রতিজ্ঞা, কেন্দ্রীয় বাহিনীর এই মারণ–অভিযানের বদলা নেবেন তাঁরা৷ গুলিতে নয়, বন্দুকে নয়৷ গণতান্ত্রিক পথে তাঁরা উপড়ে ফেলতে চান নাগাল্যান্ডের ইউডিএ–র খুনি সরকারকে৷ বিনা প্ররোচনায় গুলিতে খুনের ঘটনার পরেই দেশজুড়ে প্রতিবাদ, বিক্ষোভ৷ যার আঁচ পড়ল সংসদেও৷ উত্তাল হল দুই সভা৷ তৃণমূলের নেতৃত্বে বিরোধীদের চাপে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার বাধ্য হল আলোচনা করতে৷ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাধ্য হলেন দুই কক্ষে এসে বিবৃতি দিতে৷ কেন্দ্রকে পথে বসিয়ে নাগাল্যান্ড পুলিশ সরাসরি খুনের অভিযোগ এনেছে কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে৷ সুয়োমোটো এফআইআর দায়ের করেছে৷
সোমবার বিজেপি বুঝল সংখ্যাগরিষ্ঠতা কেবল সংখ্যা মাত্র৷ তৃণমূলের নেতৃত্বে বিরোধীরা একজোট হলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকেও সংসদে টেনে এনে বিবৃতি দিতে বাধ্য করা যায়৷ অন্যদিকে, মৃতদেহ ঘিরে উত্তাল হয় নাগাল্যান্ডের ওটিং গ্রাম৷ শেষকৃত্যে হাজার হাজার মানুষ ভেঙে পড়েন৷ হাতে প্ল্যাকার্ড৷ লেখা, খুনের বিচার চাই৷ গণহত্যা বন্ধ হোক৷ এখনই তোলা হোক আর্মড ফোর্সেস স্পেশাল পাওয়ার অ্যাক্ট (আফস্পা)৷
সকলকে অবাক করে দিয়ে সোমবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সংসদে যা বললেন তা কার্যত আষাঢ়ে গল্প মনে হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস সহ বিরোধীদের৷ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কথায়, ভুল বোঝাবুঝিতে গুলি চলেছে৷ জঙ্গি হামলার সম্ভাব্য খবর গোয়েন্দারা দিয়েছিলেন৷ গাড়ি না থামানোয় প্রথমে গুলি চলে৷
আরও পড়ুন : দুর্যোগ কেটে স্বাভাবিক ছন্দে উপকূল ,আলুর খেতে জমল জল ৭৫ শতাংশ, ধান চাষিদের গোলায়
তারপর গ্রামবাসীদের আক্রমণ ঠেকাতে ফের গুলি চালানো হয়৷ তাঁর এই বয়ান যে বিগত ২৪ ঘণ্টা ধরে অনেক ভাবনার ফসল তা বিরোধীরা বুঝেছেন৷ তৃণমূল কংগ্রেস সরাসরি আক্রমণ করেছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে৷ সকালে তৃণমূল প্রতিনিধি দল নাগাল্যান্ডের মৃতদের পরিবারের পাশে দাঁড়াতে দমদম বিমানবন্দরে পৌঁছে যান৷ কিন্তু জানতে পারেন নাগাল্যান্ড সরকার রাজ্যে ১৪৪ ধারা জারি করেছে৷ বাইরের রাজ্যের সকলেরই প্রবেশ নিষিদ্ধ৷ ক্ষুব্ধ প্রতিনিধিরা বলেন, দেশের নাগরিকরা খুন হচ্ছে দেশের বাহিনীর হাতে৷
এর থেকে লজ্জার আর কী হতে পারে৷ পদত্যাগ করুন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী৷ প্রতিনিধি দলে ছিলেন সুস্মিতা দেব, শান্তনু সেন, প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, অপরূপা পোদ্দার ও বিশ্বজিৎ দেব৷ সুস্মিতা ও শান্তনু বলেন, গণতন্ত্র ভূলুণ্ঠিত৷ এভাবে আমাদের আটকানো যাবে না৷ নাগাল্যান্ড যাব৷ আফস্পা নিয়ে এখনই কেন্দ্রকে আলোচনা করে সিদ্ধান্তে আসতে হবে৷ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পাঁচ সদস্যের সিট গঠন করে এক মাসের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে বলেছেন৷ সে প্রসঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের স্পষ্ট বক্তব্য, রিপোর্টের ভবিষ্যৎ আন্দাজ করা যাচ্ছে৷
আশ্চর্যের হল, গতকালের ঘটনার পর সোমবার নাগাল্যান্ডের বিভিন্ন জায়গায় সংঘর্ষ শুরু হয়েছে৷ সংঘর্ষে দু’জনের মৃত্যুর খবরও মিলেছে৷ নাগাল্যান্ডে শুরু হচ্ছে কেন্দ্র–বিরোধী আন্দোলন৷ ৯ ডিসেম্বর রাজ্যজুড়ে ছাত্র–বিক্ষোভ৷ তবে নাগাল্যান্ড প্রশ্নে এককাট্টা বিরোধীরা৷ ফাঁপরে কেন্দ্র৷