প্রতিবেদন : পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রস্তুতি তো দূর-অস্ত, বঙ্গের বিভ্রান্ত বিজেপি নেতা-নেত্রীরা যখন নিজেদের মধ্যে কোন্দলে মেতে রয়েছেন, গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জর্জরিত, বিজেপি পঞ্চায়েতে সব জায়গায় প্রার্থী দিতে পারবে কি না ভেবে দেওয়ালে মাথা ঠুকছে তখন পঞ্চায়েত নির্বাচনকে সামনে রেখে মাঠে নামছে মহিলা তৃণমূল কংগ্রেস।
‘এবার গ্রামে চলো’ (TMC- Ebar Grame Cholo) কর্মসূচি নিয়েও পথে নামছেন তাঁরা। আগামী ১ নভেম্বর থেকে ১২ জানুয়ারি আড়াই মাস ধরে চলবে কর্মসূচি। ১ নভেম্বর হাওড়া গ্রামীণ সাংগঠনিক জেলা দিয়ে শুরু হবে মহিলা পঞ্চয়েত সভা। ওই দিন হাওড়া সদরেও সভা হবে। সূচনা করবেন মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রী মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। এরপর ৩১টি সাংগঠনিক জেলাতেই উপস্থিত থাকবেন তিনি। একইসঙ্গে মহিলা পঞ্চায়েত সভা ও অন্যদিকে প্রতিটি বুথে মহিলা তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী-কর্মীরা যাবেন। বুথ ধরে প্রতিটি বাড়িতে গিয়ে মহিলাদের সঙ্গে কথা বলবেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের মহিলাদের জন্য লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, বিধবা ভাতা-সহ আরও যেসব প্রকল্প করেছেন সেই প্রকল্পের সুবিধা মহিলারা ঠিকমতো পাচ্ছেন কি না তার খোঁজ নেবেন। তাঁদের পাশে থাকবেন। একইসঙ্গে রাজ্য সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পগুলি তুলে ধরবেন। হিসেব অনুযায়ী একটি বুথে প্রায় ৯০০ ভোটার আছেন। মোট ৭৫ দিনের এই কর্মসূচিতে দলের এক-একজন মহিলা কর্মী রোজ ৪-৫টি করে বাড়িতে যাবেন।
আরও পড়ুন-স্বচ্ছতায় নজির, পরীক্ষার ৪৫ দিন আগেই টেট-গাইড
দলের ৩৬টি সাংগঠনিক জেলা রয়েছে। এর মধ্যে ৩১টিই গ্রামীণ এলকায় পড়ে। রাজ্যে মোট ৩৩৪২ পঞ্চায়েত রয়েছে। স্বাভাবিক ভাবেই পঞ্চয়েত নির্বাচনের আগে মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের এই দ্বিমুখী কর্মসূচিতে (TMC- Ebar Grame Cholo) আখেরে লাভবান হবে দল। রাজ্যের মোট ভোটার ৭ কোটি ২০ লক্ষ। এর মধ্যে ৪৯ শতাংশ মহিলা ভোটার। অর্থাৎ প্রায় সাড়ে তিন কোটি মহিলা ভোটার রয়েছেন। ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যের বেশিরভাগ মহিলার ভোট গিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেসের ঝুলিতে। সেকথা মাথায় রেখেই এখন থেকেই পন্চায়েতের প্রস্তুতিতে নেমে পড়ছে দল। এর আগে রাজ্য জুড়ে প্রায় ১ হাজার বিজয়া সম্মিলনীর সভা করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। এতে ব্যাপক সাড়া মিলেছে। প্রতিটি জেলায় এই সভাগুলিতে উপচে পড়েছে ভিড়। এবার মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাকে কেন্দ্র করেও একই ছবি দেখা যাবে বলেই মনে করছেন তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব। মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, আমরা সারা বছরই মানুষের পাশে থাকি। কিন্তু এ-রাজ্যের ভোটারদের একটা বড় অংশ মহিলা। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে তাই আমরা প্রতিটি বাড়িতে গিয়ে মহিলাদের কাছে পৌঁছতে চাইছি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার মহিলাদের জন্য কী কাজ করেছেন— দলে, বিধানসভায়, মন্ত্রিসভায়, সংসদে মহিলাদের কতটা গুরুত্ব দিয়েছেন আমাদের নেত্রী তা তুলে ধরবেন আমাদের মহিলা কর্মীরা। আরও কী কী করলে ভাল হয় সে-কথাও আমরা শুনব তাঁদের কাছ থেকে।