প্রতিবেদন: এক দেশ, এক নির্বাচন নীতি দেশের উপর চাপিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করল মোদি সরকার। আর্থিক খরচের নাম করে ভারতের যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় আঘাত করার কৌশল নিয়েছে বিজেপি। রাজ্যে রাজ্যে বিজেপি বিরোধী হাওয়া দেখে রাজনৈতিক সুবিধা পাওয়ার লক্ষ্যে এক দেশ, এক নির্বাচনের পক্ষে প্রচার শুরু করেছে মোদি সরকার। প্রত্যাশিতভাবেই বিজেপির এই নীতির প্রতিবাদে সরব বিরোধীরা।
আরও পড়ুন-৪ মাসের শিশু রাস্তায় গড়াগড়ি খাচ্ছে, মাকে ঘিরে ধরে হেনস্তা, ডবল ইঞ্জিন মধ্যপ্রদেশের কুৎসিত ছবি
নিজেদের রাজনৈতিক অ্যাজেন্ডা অনুসারে এক দেশ, এক নির্বাচন চালুর বিষয়টি বিবেচনা করতে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের নেতৃত্বে কমিটি গঠন করছে কেন্দ্রীয় সরকার। সংসদে ১৮ থেকে ২২ সেপ্টেম্বর ৫ দিনের বিশেষ অধিবেশন ডেকেছে কেন্দ্র। তার আগে শুক্রবার হঠাৎ করে এই ঘোষণায় শুরু হয়েছে জল্পনা। মনে করা হচ্ছে, পাঁচদিনের এই বিশেষ অধিবেশনে এক দেশ, এক নির্বাচন ব্যবস্থা লাগু করার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে বিজেপি। তার প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের নেতৃত্বে কমিটিও গড়ছে কেন্দ্র। পাঁচদিনের এই অধিবেশনে ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ সংক্রান্ত বিল ছাড়াও অভিন্ন দেওয়ানি বিধি এবং ও মহিলাদের সংরক্ষণ কোটা সংক্রান্ত বিলও পেশ করার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রসঙ্গত, বহুদিন ধরেই এক দেশ, এক নির্বাচন নিয়ে সুর চড়িয়ে আসছিল বিজেপি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও এর পক্ষে সওয়াল করেছেন একাধিকবার।
আরও পড়ুন-সিব্বলকে নিয়ে তাঁর সমস্যা নেই, জানালেন রাহুল
শুক্রবার সকালে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করে বিষয়টি জানান বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা। উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের ইস্তাহারে এক দেশ, এক ভোট নীতি কার্যকর করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বিজেপি। তাই তড়িঘড়ি কেন্দ্রের এই কমিটি গঠনের পর গুঞ্জন তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের আগে একাধিক রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। লোকসভার সঙ্গে একইসঙ্গে ভোট রয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশ, অরুণাচল, ওড়িশা, সিকিমে। এছাড়াও লোকসভার আগে ভোট রয়েছে ছত্তিশগড়, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, মিজোরাম, তেলেঙ্গানায়। আবার লোকসভা নির্বাচন প্রক্রিয়া মিটে যাওয়ার পরই ভোট রয়েছে দিল্লি, মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা, ঝাড়খণ্ডে।
আরও পড়ুন-মেয়েদের পুষ্টি ও ক্লান্তি
লোকসভা নির্বাচনের ২-৩ বছরের মধ্যে বাংলা-সহ অনেক রাজ্যে ভোট। ফলে এই বিধানসভাগুলিতে কীভাবে এই নীতি কার্যকর করা হবে, তা নিয়েও আলোচনা শুরু হয়েছে। বিজেপির যুক্তি, এর ফলে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় খরচ সাশ্রয় হবে। ২০১৯ লোকসভা নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর এই বিষয়ে আলোচনা করতে সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। যদিও সেই বৈঠকে গরহাজির ছিল অনেক বিরোধী দল। মোদির যুক্তি, কয়েকমাস পরপর ভোট হলে, একদিকে সরকারি পরিষেবায় ঘাটতি হয়, তেমনই দেশের উপর আর্থিক বোঝা চাপে।