প্রতিবেদন : এক শিবিরে আত্মবিশ্বাসের জোরালো হাওয়া বইছে। অন্য শিবিরে আবার হৃতসম্মান পুনরুদ্ধারের আকুতি! মরশুমের প্রথম ডার্বিতে পরস্পরের মুখোমুখি হওয়ার আগে সবুজ-মেরুন এবং লাল-হলুদের (East Bengal- Mohun Bagan) অন্দরমহলের এই বিপরীত ছবিটাই বলে দিচ্ছে ডার্বিতে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর সাম্প্রতিক কালের পারফরম্যান্স কেমন।
পরিসংখ্যান বলছে, ইস্টবেঙ্গল শেষবার ডার্বি জিতেছিল সেই ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে। তারপর থেকে শুধুই হতাশা। একটার পর একটা ডার্বি জিতেছে মোহনবাগান। আর হতাশায় মুখ লুকিয়েছেন লাল-হলুদ সমর্থকরা। কার্লেস কুয়াদ্রাত কি পারবেন হতাশার এই ছবিটা বদলাতে?
তাঁর প্রতিপক্ষ জুয়ান ফেরান্দো ২০ মাস ধরে সবুজ-মেরুনের দায়িত্বে রয়েছেন। ডার্বির উন্মাদনা তাঁর কাছে নতুন নয়। কোচ হিসেবে ডার্বি জেতার স্বাদও পেয়েছেন। জুয়ানের সবথেকে বড় সুবিধে, তাঁর হাতে একটা তৈরি দল রয়েছে। শুধু তাই নয়, গতবারের থেকে শক্তিও বেড়েছে অনেকটাই। অন্তত কাগজে-কলমে। আর এখানেই পিছিয়ে কুয়াদ্রাত। ইস্টবেঙ্গল কোচের হাতে প্রায় নতুন একটা দল। ঠিকঠাক প্রি-সিজন করার পর্যাপ্ত সময়ও পাননি। এই পরিস্থিতিতে কুয়াদ্রাতের সম্বল মগজাস্ত্র। দুই স্প্যানিশ কোচের মগজের লড়াইয়ে কে কাকে টেক্কা দেন, সেদিকে নজর থাকবে সবার।
আরও পড়ুন- ফাইনালে ভারত
জুয়ানের হাতে হয়েছেন ঝকঝকে প্রোফাইলের সব বিদেশি। গতবারের টপ স্কোরার দিমিত্রি পেত্রাতোসের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন তাঁর দেশেরই আরেক বিশ্বকাপার জেসন কামিন্স। অস্ট্রেলীয় স্ট্রাইকার বেশ কিছুদিন ধরে দলের সঙ্গে প্র্যাকটিস করলেও এখনও মাঠে নামেননি। তবে শনিবার যুবভারতীতে সবুজ-মেরুন (East Bengal- Mohun Bagan) জার্সিতে কামিন্সের অভিষেক হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। হুগো বুমোস এবং ব্রেন্ডল হ্যামিলও রয়েছেন।
মোহনবাগানের ভারতীয় তারকারাও দারুণ ফর্মে। লিস্টন কোলাসো ডুরান্ডের প্রথম ম্যাচেই নিজের সেরা ফর্মের ঝলক দেখিয়েছেন। মনবীর সিংও ভাল খেলেছেন। জাতীয় দলের দুই তারকা মিডফিল্ডার অনিরুদ্ধ থাপা ও সাহালও এবছর যোগ দিয়েছেন সবুজ-মেরুনে। ফলে জুয়ানের হাতে বিকল্পের অভাব নেই।
অন্যদিকে, কুয়াদ্রাতকে ভরসা দিচ্ছে দুই স্প্যানিশ সাউল ক্রেসপো ও জেভিয়ার সিভেরিওর ফর্ম। ডুরান্ডের প্রথম ম্যাচে দু’জনেই নজর কেড়েছেন। আরেক স্প্যানিশ বোরহা হেরেরাও গতবারের আইএসএলে খুব ভাল খেলেছিলেন। শনিবার মাঝমাঠে ক্রেসপো ও বোরহাকে একসঙ্গে খেলানোর পরিকল্পনা রয়েছে ইস্টবেঙ্গল কোচের। গোলের জন্য ভরসা রাখছেন সিভেরিওর উপরে। তবে সবথেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে অস্ট্রেলীয় ডিফেন্ডার জর্ডান এলসে। লাল-হলুদ রক্ষণকে এলসে কতটা নির্ভরতা দিতে পারেন, তার উপরেই নির্ভর করছে কুয়াদ্রাতের ডার্বি ভাগ্য। গতবারের সর্বোচ্চ গোলদাতা ক্লেটন সিলভা শহরে পৌঁছবেন ডার্বির দিন সকালে। ব্রাজিলীয় স্ট্রাইকারকে দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে নামালে অবাকের কিছু নেই।
ইস্টবেঙ্গলের ভারতীয় ফুটবলারদের মধ্যে নাওরেম মহেশ সিং, প্রভসুখন গিল, হরমনজোৎ খাবরা, মন্দার রাও দেশাইদের দিকেও আলাদা করে নজর থাকবে। তবে কাগজে-কলমে শনিবাসরীয় বড় ম্যাচে এগিয়ে কিন্তু মোহনবাগানই। তবে এটা এমন একটা ম্যাচ, যেখানে অতীতের রেকর্ড অনেক সময়ই মূল্যহীন হয়ে পড়ে।