অ্যাডিলেড, ৯ নভেম্বর : রোহিত শর্মা (India vs England) বুধবার সাংবাদিকদের বলে গেলেন, তিনি ঠিকই আছেন। চোট সিরিয়াস কিছু নয়। এই এক বার্তায় অনেকটা স্বস্তি ফিরেছে ভক্তদের মধ্যে। এরকম মেগা ম্যাচে হিটম্যানের একটা ইনিংস খেলার চেহারা বদলে দিতে পারে।
ডি রাঘবেন্দ্র ব্যাটারদের থ্রো ডাউন দেন। এটাই তাঁর কাজ। এতে স্পেশালিস্ট। কিন্তু মঙ্গলবার তাঁর ছোঁড়া বল অধিনায়কের কনুইয়ের উপর আছড়ে পড়ার পর সেমিফাইনালে রোহিতকে পাওয়া যাবে কিনা তা নিয়ে চিন্তা শুরু হয়েছিল। ম্যাজিক স্প্রে নিয়ে পরে ব্যাট করতে এসে এক বল খেলে হাল ছেড়ে দিয়েছিলেন তিনি। তবে সেটাই শেষ নয়, আরও সময় নিয়ে পরে ফের এসে রোহিত নেটে ব্যাট করেছেন। আর বুধবার সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বললেন, এখন আর হাতে কোনও সমস্যা নেই।
কিন্তু এরপর সেই নেটেই ব্যাট করার সময় বুড়ো আঙুলে চোট পেলেন বিরাট কোহলি। হর্ষল প্যাটেলের বল সোজা এসে লেগেছে তাঁর আঙুলে। যন্ত্রণায় বিরাট মাটিতে বসে পড়েন। পরে অবশ্য শুশ্রূষা করে এসে আবার ব্যাট করেছেন। ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্টের পক্ষ থেকে বিরাটের চোট নিয়ে কোনও আপডেট না দিলেও জানা গিয়েছে, তাঁর এই চোট তেমন গুরুতর নয়।
অ্যাডিলেডে বৃহস্পতিবার খেলতে নামার আগে দুটো জিনিস রোহিতদের (India vs England) মাথায় রাখতে হচ্ছে। এক, বড় ইভেন্টে ইংল্যান্ড বরাবর শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী। তার উপর অ্যাডিলেডের অপেক্ষাকৃত ছোট সাইড বাউন্ডারি। স্পিনারদের জন্য এটা চাপ। তবে রোহিতের মতো যাঁরা পুল মারতে ভালবাসেন, তাঁদের জন্য এটা সুবিধার। সুবিধা বিরাট কোহলির জন্যও। যিনি স্কোয়ার অফ দ্যা উইকেট বা ইনসাইড আউট খেলেন বেশি।
আরও পড়ুন-ভাল কাজই শেষ কথা, মানুষ ছাড়া আমরা শূন্য
আইসিসি টুর্নামেন্ট ধরলে ভারত ইংল্যান্ডের থেকে জয়ের হিসাবে ২-১-এ এগিয়ে আছে। টি ২০-র সামগ্রিক হিসাবেও টিম ইন্ডিয়া লিড করছে ১২-১০-এ। কিন্তু এই ম্যাচের আগে ইংল্যান্ডের প্রাক্তন-বর্তমান সবাই একযোগে গেমম্যানশিপ চালু করে দিয়েছেন। এতে তাঁরা সিদ্ধহস্ত। নাসের হুসেন মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ২০১৩-র পর ভারত কোনও আইসিসি টুর্নামেন্ট জেতেনি। আইসিসি টুর্নামেন্টে সাফল্যের হারও নাকি বেশ কম। জস বাটলার হুঙ্কার দিয়ে গেলেন, ভারত-পাকিস্তান ফাইনাল হোক তাঁরা সেটা চান না। হুঙ্কার শোনা যাচ্ছে বেন স্টোকসের গলাতেও।
ইংল্যান্ড আসলে সেমিফাইনালের আগে খুব মুশকিলে পড়েছে দাভিদ মালানকে হারিয়ে। তিনি এই ম্যাচ থেকে ছিটকে গিয়েছেন চোটে। মালানের জায়গা নিতে পারেন ফিল সল্ট। মঙ্গলবার প্রাকটিসে হালকা চোট পেয়েছেন ফাস্ট বোলার মার্ক উডও। তাঁকেও ম্যাচের দিন পর্যন্ত দেখা হবে। উড এবারের বিশ্বকাপে সবথেকে দ্রুতগতিতে বল করছেন। ঘণ্টায় ৯২ মাইল। ন’টা উইকেট নেওয়া হয়ে গিয়েছে ৭.৭১ গড়ে। বাটলাররা খুব চেষ্টা করছেন তাঁকে মাঠে নামানোর। উডের সঙ্গে স্যাম কুরান ও ক্রিস ওক্স মিলে খুব বিপজ্জনক এই সিম অ্যাটাক যে কোনও দলের কাছে। অ্যাডিলেডের উইকেটে পরে স্পিনাররা সুবিধা পেলেও শুরুতে জোরে বোলারদের অ্যাডভান্টেজ। সেটা মাথায় রেখে তিন ফাস্ট বোলারকে নিয়ে খেলতে চায় ইংল্যান্ড।
বৃষ্টি-বিঘ্নিত এই মাঠে ভারত বাংলাদেশকে ৫ রানে হারিয়েছে। তবে বৃহস্পতিবারের আবহাওয়া রিপোর্ট বেশ ভাল। সকালের দিকে ঈষৎ মেঘলা আকাশ হলেও পরে সেটা পরিষ্কার হয়ে যাবে। বৃষ্টির কোনও আশঙ্কা নেই। কিন্তু এমন মনোরম পরিবেশে ভারতীয় ড্রেসিংরুমে একটু বেশিই চর্চার বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে উইকেটের পিছনের জায়গাটা নিয়ে। ঋষভ পন্থ জিম্বাবোয়ে ম্যাচে খেলেছেন। সেমিফাইনালে তিনি না দীনেশ কার্তিক? রোহিত পরিষ্কার করলেন না। তবে অনেকের মনে হচ্ছে একটা ম্যাচ দেখে ঋষভকে রিজার্ভ বেঞ্চে না-ও পাঠানো হতে পারে। আবার কার্তিকের অভিজ্ঞতাও একটা বড় ফ্যাক্টর এরকম মেগা ম্যাচে।
ইংল্যান্ড যতই ম্যাচের আগে মনস্তাত্ত্বিক খেলায় মাতুক না কেন, তারা সূর্যকুমার যাদবকে নিয়ে ভয় পেয়েছে। এজন্য একটা বিশেষ টিম মিটিংও নাকি তারা করে ফেলেছে। যদি তাই হয়, তাহলে রোহিতরা কিন্তু ম্যাচের আগেই অর্ধেক ম্যাচ জিতে গিয়েছেন!