বাংলার বাণিজ্যে বাংলার মেয়ে

আজ ওয়ার্ল্ড মেনস্ট্রুয়াল ডে। মেনস্ট্রুয়াল হাইজিন নিয়ে কাজ করছেন বাংলার প্যাড উইমেন খ্যাত পল্লবী সাউ। তাঁকে নিয়ে লিখছেন রিনিকা দাস

Must read

বিভিন্ন পেশায় মহিলাদের স্থানের সংখ্যা তো এগিয়েই, কিন্তু মহিলা ব্যবসায়ী তাও বাংলায়, চমকপ্রদ ব্যাপার। বাণিজ্য বিনিয়োগে আরও এক পা এগিয়ে বাংলা। এবছর বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিট-এ প্রতিবছরের মতো সাক্ষী ছিলেন মহিলাদের এক উজ্জ্বল প্রেরণা, বাংলার প্যাড উইম্যান পল্লবী সাউ (World Menstruation Day- Pallavi Shaw)। তাঁর কথায়, ‘‘বাংলা শক্তির পীঠ, আর সেই শক্তির সাক্ষী হল মা-মাটি-মানুষ।”

তামিলনাড়ুর অরুণাচলম মুরুগানানথামের থেকেই অনুপ্রাণিত হয়ে স্যানিটারি ন্যাপকিন তৈরির স্বপ্নের দানা বাঁধেন এই প্যাড উইমেন। হুগলি জেলা শিল্প কেন্দ্রের সহায়তায় সমাজের অনগ্রসর মহিলাদের নিয়ে দলবদ্ধভাবে এগিয়ে গেছে সম্পূর্ণা। জেলা শিল্প মেলা থেকে রাজ্যস্তরে এমএসএমই-এর সম্মেলন ছাড়াও বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিট-এর দরবারে পৌঁছে গেছে বাংলার তৈকি স্যানিটারি ন্যাপকিন (World Menstruation Day- Napkin) সম্পূর্ণা।

সমাজে পিছিয়ে পড়া মহিলাদের কাজের সুযোগ করে দিয়েছেন প্যাড উইমেন পল্লবী সাউ। হুগলির আদিসপ্তগ্রাম-এ ন্যাপকিন কারখানায় স্বাস্থ্যকর ও কম খরচের স্যানিটারি ন্যাপকিন উইংস তৈরি করে এক অভিনব উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি।

আরও পড়ুন: ফুটবল রাজপুত্রের স্মৃতিতে তৈরি আস্ত বিমান

বাংলার প্যাড উইমেন বিজনেস সামিট-এর অভিজ্ঞতায় জানাচ্ছেন, মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে বাংলায় ব্যবসা এগোবেই; তাতে কোনও আপস নেই। বাংলায় জলব্যবস্থা, যাতায়াত ব্যবস্থা, আমদানি-রফতানি এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা সমস্ত কিছুই হাতের মুঠোয়। ফলে বিনিয়োগ ঘটালে উন্নয়ন ঘটবেই।

মুখ্যমন্ত্রীর প্রেরণায় ‘দিয়া’ প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সম্পূর্ণা। জেলা থেকে অত্যন্ত গ্রামে-গঞ্জে ঘরে ঘরে পৌঁছে গেছে সম্পূর্ণা। ‘দোকানদার থেকে ব্যবসায়ী’ হয়ে ওঠার অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। ব্যবসার উদ্যোগে বিজনেস সামিট-এর কথায় তিনি জানাচ্ছেন, মুখ্যমন্ত্রীর কথায় বাংলাদেশ যদি গার্মেন্টস সেক্টর এগিয়ে থাকতে পারে তাহলে বাংলা কেন পারবে না। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-এর উদ্যোগে ব্যবসার ক্ষেত্রে সমস্ত ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর বিষয়গুলি খুঁটিয়ে দেখা হচ্ছে এবং সমস্যার সমাধান করা হচ্ছে। পল্লবী সাউ আগ্রহের সঙ্গে বলেন, বাংলার জননেত্রী থালা সাজিয়ে মুখের কাছে খাবার তুলে দিচ্ছেন, শুধু খেতে হবে নিজেকে। বাংলার মানুষকে নব-উদ্যোগী হতে হবে, নতুন জিনিস সম্পর্কে ভাবতে হবে। চাকরির ভাবনা থেকে বেরিয়ে ব্যবসাও যে এক রোজগারের পন্থা সেটা জানতে হবে।

গ্রামবাংলার প্রান্তিক মানুষের কাছে স্যানিটারি প্যাড কেনাটা বিলাসিতা ছাড়া আর কিছুই না— এই চিন্তাধারাকে বদলানোর কথা মাথায় রেখেই সম্পূর্ণা স্যানিটারি তৈরির কারখানা গড়ার সিদ্ধান্ত। বর্তমানে স্যানিটারি ন্যাপকিন-এর বাজার মূল্যের থেকে অনেক সস্তায় এবং স্বাস্থ্যকর ন্যাপকিন তৈরি করা এবং অনগ্রসর মহিলাদের আর্থিক রুজি-রোজগারের ব্যবস্থা করাই অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। এমনকী করোনাকালেও বহু মেয়েকে কাজ শিখিয়ে অন্নের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন পল্লবী সাউ। বাংলার প্যাড উইমেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে আরও বলছেন, ‘‘বাংলার নেত্রী খাদ্য দিচ্ছেন, খাদ্য থেকে পোশাক, পোশাক থেকে শিক্ষা দিচ্ছেন, শিক্ষা থেকে সাইকেল এবং সাইকেল থেকে স্কলারশিপ- কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার; আর কী দেবেন।”

ব্যবসা মানেই শুধু মুনাফা নয়, এমনই তাৎপর্যপূর্ণ দিশা দেখিয়েছেন মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ব্যবসা মানে মুনাফার সঙ্গেও বেকার মানুষদের কাজ দেওয়া, অভাবের সংসারে খাদ্য জোগান দেওয়া, হাজার হাজার শিশুর শিক্ষার ব্যবস্থা করে দেওয়া। তাই ব্যবসায় এগিয়ে আসুন এবং এগিয়ে নিয়ে যান বাংলাকে।
বাংলায় বাণিজ্য-বিনিয়োগ করা সঠিক জায়গা। বাংলায় রয়েছে বহু পর্যটনকেন্দ্র, পাট শিল্প এছাড়াও কত কী। তাই বাংলায় বিনিয়োগের খাতা খুললে বাণিজ্য এগোবে। শুধু বাণিজ্য এগোতে, এগিয়ে আসতে হবে বাংলার মানুষকেই।

Latest article