প্রতিবেদন : নন্দীগ্রাম সহ পূর্ব মেদিনীপুরে বিধ্বস্ত দলবদলু গদ্দার ও বিজেপি। মাঝরাতে ফলপ্রকাশের পর দেখা গেল জেলা পরিষদে ৫৬-১৪-র বিরাট ব্যবধানে জয়ী হয়েছে তৃণমূল। এমনকী নন্দীগ্রামেও বিরাট ধাক্কা লোডশেডিং বিধায়কের। জেলা পরিষদের হিসেবে নন্দীগ্রামে তৃণমূল কংগ্রেসের লিড ১০৪৫৭। এরপরেই তৃণমূল কংগ্রেস বলতে শুরু করে, এতদিন গদ্দার ফল বেরনোর পর লোডশেডিং করিয়ে ১৯৫৬-র গল্প শোনাত। এবার তো দিনের আলোয় ১০৪৫৭ ভোটে লিড!
আরও পড়ুন-গণদেবতার জয় : অভিষেক
এটা প্রমাণ হয়ে গেল, সেদিনও(২০২১) নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই জিতেছিলেন। কিন্তু দিল্লির সহযোগিতায় কারচুপি করে ফল পাল্টে দিয়েছিলে গদ্দার। বুধবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, পঞ্চায়েত নির্বাচনের যে ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে, যাবতীয় কুৎসা, হিংসা, তৃণমূলকে লক্ষ্য করে যে যে আক্রমণ হয়েছে সেগুলোকে উপেক্ষা করে বাংলার মানুষ তৃণমূলকে বিপুলভাবে সমর্থন করেছে। নিজেদের পরাজয় আলাদা করার জন্য বিরোধীদের একটু রক্ত দরকার ছিল। উন্নয়নের নিরিখে ভোট হয়েছে। কন্যাশ্রী থেকে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার। বিজেপি লাগাতার অত্যাচার করেছে। এবার নন্দীগ্রাম-সহ গোটা পূর্ব মেদিনীপুরে গ্যাস বেলুন ফেটে গিয়েছে। আরও একবার প্রমাণ হয়ে গেল, নন্দীগ্রামের বিধায়কের নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন-শোক মুখ্যমন্ত্রীর, সুখেন্দুশেখরের স্ত্রী প্রয়াত
মঙ্গলবার দুপুরে গণনার পরে নন্দীগ্রামের কিছু জায়গায় তৃণমূলের ফল আশানুরূপ না হওয়ায় বিজেপি ও গদ্দার খুব উচ্ছ্বসিত হয়ে পড়ে। নন্দীগ্রাম ১ ও ২ মিলিয়ে ১৭টি অঞ্চলের মধ্যে তৃণমূল পেয়েছে ৮টি, বিজেপি ৯টি। এরপর কুণাল ঘোষ দুপুরেই বলে দেন, এতে বিজেপির কোনও কৃতিত্ব নেই। এটা তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ সমীকরণের জন্য হয়েছে। মনে রাখতে হবে, এরপর যখন প্রতীকে ভোট হবে তা তৃণমূলের পক্ষেই যাবে। অন্য কোথাও পড়বে না। নন্দীগ্রামে ৭টি পঞ্চায়েত সমিতি জিতে নিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। শুধু তাই নয়, ৩টি জেলা পরিষদের তিনটেতেই জিতেছে তৃণমূল। তবে নন্দীগ্রাম ২-এ অভ্যন্তরীণ সমীকরণের জন্য কিছু আসন এদিক-ওদিক হয়েছে৷ নয়তো বিজেপি আরও ডুবত।
আরও পড়ুন-মুর্শিদাবাদ: জেলা পরিষদ অপ্রতিরোধ্য তৃণমূলেরই
রাতের দিকে বিভিন্ন জায়গা থেকে খবর আসে, জেলা পরিষদে হইহই করে জিতছে তৃণমূল। এরপরই নন্দীগ্রাম, খেজুরি, গোকুলনগর, বাহাদুরপুর, কণ্ঠিবাড়ি, লালগোলা, বাসুলিচক-সহ বেশ কয়েকটি জায়গায় রাতের অন্ধকারে তৃণমূলের জয়ী প্রার্থীদের বাড়িতে হামলা চালিয়েছে বিজেপির দুষ্কৃতীরা। এই নির্বাচনে ভগবানপুর ১ ও ২-এর মতো জায়গাতেও ভাল ফল করেছে তৃণমূল। গদ্দার অধিকারী বলেছিল, ওর স্ট্রাইক রেট নাকি ভাল। তাই অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসে মঙ্গলবার দুপুরে গ্রাম পঞ্চায়েতের কয়েকটি আসনের ফল দেখেই বড় বড় কথা বলতে শুরু করেছিল। তারপর পরিস্থিতি দেখে ইঁদুরের গর্তে ঢুকে গিয়েছে। ও হচ্ছে বাতেলার বৃহস্পতি গ্যাস বেলুন। সিপিআইএম ভোট কাটুয়া।
আরও পড়ুন-চরম অবনতি দিল্লির আইনশৃঙ্খলার, রাস্তায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে মহিলার দেহাংশ
এদিন সিপিএমের বিরুদ্ধেও তোপ দেগে কুণাল বলেন, সিপিআইএম-এর প্রচার স্পনসর করেছে ভারতীয় জনতা পার্টি। বিজেপি নন্দীগ্রামে যেটার লড়াই দেয়নি।
মহম্মদ সেলিমকে গোপনে বিরিয়ানি পাঠাবে গদ্দার অধিকারী। তাঁর আরও সংযোজন, পূর্ব মেদিনীপুরের দুটি লোকসভা আসন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হতেই থাকবে, তার রায় মানুষ দিয়ে দিয়েছে। ফান্দে পড়িয়া গদ্দার কান্দে রে।
আরও পড়ুন-তোপ দেগে মুখ্যমন্ত্রী বললেন, ‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং’ হল ‘বিজেপির উস্কানি কমিটি’
বুধবার ভোর থেকেই কুণাল ঘোষের একের পর এক ট্যুইট আছড়ে পড়তে শুরু করে সোশ্যাল মিডিয়ায়। সেখানে পরিসংখ্যান তুলে ধরে কুণাল তীব্র কটাক্ষে লিখেছেন, যা ফলাফল দেখা যাচ্ছে তাতে লোডশেডিং বিধায়ক তো এখন ব্লকের নেতা হয়ে গিয়েছে। ও আগে নন্দীগ্রাম ১-এর তৃণমূল ব্লক সভাপতি বাপ্পাদিত্য গর্গের সঙ্গে বুঝে নিক। তারপর না হয় আমাদের সঙ্গে লড়বে।