সংবাদদাতা, কাটোয়া : একদা বাম দুর্গ ছিল বর্ধমান। সেখানে এখন তাদের খুঁজেই পাওয়া গেল না। খুঁজে পাওয়া গেল না বিজেপিকেও। তাই রঙের দোকানিরা যেটুকু গেরুয়া আর লাল আবির কিনে রেখেছিলেন, তা যেমন কে তেমন পড়ে রইল। পূর্ব বর্ধমান জেলার রং-বিক্রেতা মহম্মদ নাসিম, লাবু শেখদের মতো দোকানিদের মাথায় হাত। বেলা যত গড়িয়েছে জেলার ছয় পুরসভাতেই জোড়াফুলের (Trinamool Congress) জয়জয়কার। আর দোকানে দোকানে সবুজ আবির কেনার ঢল নেমেছে। কিন্তু লাল আর গেরুয়া আবির কেনার জন্য স্বাভাবিকভাবে কারও দেখা মেলেনি। পুরভোট গণনার ফলের প্রবণতা দেখা যেতেই এত বেশি সবুজ আবিরের চাহিদা বেড়েছে যে, বিক্রেতাদের আফসোস, আরও বেশি বেশি করে সবুজ আবির মজুত করলে হাতে দুটো বেশি পয়সা আসত। ভোটের ফল আর আসন্ন দোল উপলক্ষে পূর্ব বর্ধমান জেলা জুড়ে রং ব্যবসায়ীরা প্রচুর আবির মজুত করেছেন। ভোটের ফল বেরনোর আগে সবুজ আবির ভাল বিক্রি হওয়ায় খুশি তাঁরা। জেলার কাটোয়া, কালনা, বর্ধমান, মেমারি, গুসকরা ও দাঁইহাট পুরসভায় ভোটের দিনই বেলা গড়াতে রণে ভঙ্গ দেওয়া শুরু করেন বিরোধী দলগুলির প্রার্থী ও এজেন্টরা। পরাজয় নিশ্চিত জেনে বহু জায়গায় গণনাকেন্দ্রমুখো হননি বিজেপি নেতৃত্ব। জেলার চারটি পুরসভায় ভোটের দিন দুপুরের পর থেকে বিজেপির সিংহভাগ এজেন্ট ভোটকেন্দ্র ছাড়লেও মেমারি ও দাঁইহাটে শেষ পর্যন্ত বুথে ছিলেন বিজেপির এজেন্টরা। দলের এই হালের জন্য অন্দরে তীব্র ক্ষোভ-বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। তবে সিপিএম বা কংগ্রেস গণনায় যোগ দিয়েছে। তৃণমূলের (Trinamool Congress) জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়ন দেখে জেলার সাধারণ মানুষ আগেই বিরোধীদের প্রত্যাখ্যান করেছেন। তারই প্রতিফলন ঘটল ভোটের ফলে। তাই এখন নানারকম অজুহাত খাড়া করছে। যতবারই ভোট হবে, মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষেই রায় দেবেন।’’ জেলার ৬টি পুরসভার ১১৯টি ওয়ার্ডের ৫৭১টি বুথে ভোট হয়েছে। সবক’টি পুরসভা দখল করে বুধবার সবুজ আবিরে রাঙা হয়ে উঠল গোটা পূর্ব বর্ধমান জেলা।