নয়াদিল্লি: বাংলার মানুষকে ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করে কোন যুক্তিতে রাজভবনের নাম বদলে লোকভবন রাখা হল? কোনও আলোচনা না করেই কোন অধিকারে এভাবে রাজভবনের নাম পরিবর্তন করা হল? রাজ্য সরকারকে না জানিয়েই এই নাম বদল কেন? বুধবার রাজ্যসভায় এই প্রশ্ন তুলে মোদি সরকারকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ শানালেন তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন এবং সাংসদ দোলা সেন। বাংলার মানুষকে কীভাবে ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করে চলেছে নির্লজ্জ বিজেপি, তা রীতিমতো তথ্য এবং পরিসংখ্যান দিয়ে এদিন তুলে ধরে তৃণমূল। মনে করিয়ে দিল বাংলার ন্যায্য পাওনা ২ লক্ষ কোটি টাকা আটকে রেখেছে রাজনৈতিক প্রতিহিংসাপরায়ণ কেন্দ্রীয় সরকার। মোদি সরকারের নিশানা করে তীব্র শ্লেষাত্মক ভাষায় ডেরেক বুঝিয়ে দেন, বাংলাকে দিতে ওদের ভাল লাগে না। তাই এই বঞ্চনা। তিনি জানিয়ে দেন, এবার থেকে বাংলার বঞ্চনার কথা তাঁরা বাংলাতেই তুলে ধরবেন সংসদে। বঞ্চনার বিরুদ্ধে রাজ্যসভায় সুর চড়ান তৃণমূলের ২ সাংসদ সাকেত গোখেল এবং সুস্মিতা দেবও। লোকসভাতেও বাংলার বঞ্চনা নিয়ে সরব হন তৃণমূল সাংসদ জুন মালিয়া। ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, বাংলার ৫৯ লক্ষ শ্রমিককে ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত করছে মোদি সরকার। হাইকোর্টের নির্দেশ সত্ত্বেও আটকে রেখেছে ৪৩,০০০ কোটি টাকা। সরব হন অপর দুই সাংসদ মিতালী বাগ এবং রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। সবমিলিয়ে বাংলার বঞ্চনার বিরুদ্ধে সংসদের উভয়কক্ষে বুধবার প্রতিবাদের ঝড় তুলল তৃণমূল। লোকসভায় বিজেপির বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক ভূমিকায় দেখা যায় প্রবীণ তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়কেও। রাজভবনের নাম বদল নিয়ে রাজ্যসভায় তৃণমূল সাংসদের সঙ্গে এদিন তীব্র বাদানুবাদ হয় বিজেপি সাংসদের।
আরও পড়ুন-এসআইআর: মোদির মুখোশ খুলতে প্রস্তুত তৃণমূল
মোদি সরকারের প্রতি রীতিমতো আক্রমণাত্মক ভাষায় তৃণমূল সাংসদ দোলা সেন রাজ্যসভায় মন্তব্য করেন, রাজভবনের নাম লোকভবন করে কোন গল্প শোনাচ্ছে মোদি সরকার? কিন্তু বাস্তবই প্রমাণ করছে, কীভাবে সাংবিধানিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বাংলার মানুষ। তথ্য এবং পরিসংখ্যান দিয়ে বাংলার প্রতি বঞ্চনার প্রকৃত ছবি তুলে ধরেন দোলা সেন। মনরেগা খাতে ৪৩,০০০ কোটি টাকা, বুলবুল-আম্ফান-যশের মতো ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষয়ক্ষতিবাবদ ৪২,৬০০ কোটি, গ্রামীণ আবাস যোজনা খাতে ২৪,২০০ কোটি টাকা, গ্রাম সড়ক যোজনায় ২৭,০০০ কোটি, সমগ্র শিক্ষা যোজনায় ১৯,০০০ কোটি এবং জলজীবন মিশন খাতে ২৫০০ কোটি টাকা বাংলাকে দেয়নি কেন্দ্র। সবমিলিয়ে প্রায় ২ লক্ষ কোটি টাকা আটকে রেখেছে মোদি সরকার। দোলার বক্তব্যকে জোরালো ভাষায় সমর্থন জানিয়ে মোদি সরকারকে এক হাত নেন ডেরেক।

