এবার তুরস্কের বছর ৬৬-এর স্বঘোষিত ইসলামিক ধর্মগুরুকেই বিরল সাজা শোনাল আদালত। জালিয়াতি, চরবৃত্তি, শিশুদের উপর যৌন লালসা মেটানোর অভিযোগে আদনান ওক্তার (Adnan Oktar) নামের ওই ধর্মগুরুকে সাড়ে ৮ হাজার বছরেরও বেশি সময়ের জন্য কারাবাসের নির্দেশ দিল তুরস্কের ইস্তানবুল আদালত (Istanbul Court)। ২০২১ সালেই তাঁকে ১ হাজার ৭৫ বছরের কারাবাসের দণ্ড দেওয়া হয়েছিল। এবার পুনর্বিচারে তাঁর সাজা ৮ গুণ বাড়িয়ে দেওয়া হল। তবে শুধু ওক্তারই নন, তাঁর পাশাপাশি আরও ১০ জনকে একই সাজা শোনানো হয়েছে।
নিজেকে ধর্মগুরু হিসেবে পরিচয় দিতেন। সারাক্ষণই তাঁর পাশে দেখতে পাওয়া যেত স্বল্পবসনা নারীদের। তাঁদের জীবনের পাঠ দিতেন ধর্মগুরু। যাঁদের আদনান আদর করে ‘কিটেন’ বা ‘বিড়ালছানা’ বলতেন। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা খবর, স্বল্পবসনা নারীদের নিয়ে টেলিভিশনের পর্দায় আবির্ভূত হতেন আদনান (Adnan Oktar)। চড়া মেকআপে সেজে তাঁকে ঘিরে থাকতেন ওই মেয়েরা। আর তাঁদের মধ্যমণি হয়ে বসে টেলিভিশনের পর্দায় মূল্যবোধ সহ একাধিক ইস্যুতে লম্বা চওড়া বক্তব্য দিতেন আদনান। এর আগে, গতবছরেই ধর্মগুরু আদনানকে ১ হাজার ৭৫ বছরের সাজা শোনায় তুরস্কের নিম্ন আদালত। কিন্তু অপরাধের গুরুত্ব বুঝে আদনানের বিরুদ্ধে থাকা মামলাগুলি উচ্চ আদালতে পৌঁছয়। শুরু হয় মামলার পুনর্বিচার। তাতে উচ্চ আদালত নিম্ন আদালতের রায় পাল্টে দেয়। ১ হাজার ৭৫ বছরের পরিবর্তে ৮ হাজার ৬৫৮ বছর কারাবাসের সাজা শোনানো হয়।
আরও পড়ুন: প্রতারণার শাস্তি, প্রেমিকাকে গলার নলি কেটে খুন
তবে তুরস্কের এই ধর্মগুরুর সঙ্গে রাম রহিমের তুলনা টানলে ভুল হবে না। ডেরার দুই শিষ্যাকে ধর্ষণের অভিযোগে রাম রহিমকে কুড়ি বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিল হরিয়ানার পঞ্চকুলা আদালত। যদিও আদনানের সমালোচকরা তাঁকে ধর্মগুরু বলে মানতে নারাজ। তাঁদের অভিযোগ, কুকর্মের জন্যই কিছু মানুষের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন আদনান। টেলিভিশনের পর্দায় তাঁর কুরুচিকর অনুষ্ঠানের গুণমুগ্ধ ভক্ত হয়ে যান অনেকেই। তবে আদনানের বিরুদ্ধে দীর্ঘ দিন ধরেই সরব ছিলেন তুরস্কের ধর্মীয় নেতা-ব্যক্তিরা। অর্থনৈতিক অপরাধ সংক্রান্ত একটি মামলায় ২০১৮ সালে ইস্তানবুল পুলিশ আদনানকে হেফাজতে নেয়। তাঁর সংগঠন এবং অনুগামীদেরও গ্রেফতার করে পুলিশ।