নিপুণ মুন্সিয়ানায় জীবন্ত গল্পের দলিল উজানযাত্রা

এ যেন এক মানসিক টানাপোড়েন। বিশ্বায়নের যুগে এই টালমাটাল পরিস্থিতিকে বর্জন করতে চায় বাবু, কিন্তু এই সময়কে আলিঙ্গন করতেও বাধ্য সে

Must read

মৌসুমী বসাক: এ যেন এক মানসিক টানাপোড়েন। বিশ্বায়নের যুগে এই টালমাটাল পরিস্থিতিকে বর্জন করতে চায় বাবু, কিন্তু এই সময়কে আলিঙ্গন করতেও বাধ্য সে। এই পরিস্থিতির শিকার আমরা সকলেই। আর সেই গল্পই ফুটে উঠেছে উজ্জ্বল সিনহার ‍‘উজানযাত্রা’য়। জীবনের ওঠা-পড়া, ডোবা-ভাসা নিয়েই এই গল্পের প্লট এগিয়েছে। নবীন লেখক উজ্জ্বল সিনহার প্রথম এই বই রবিবার প্রকাশ করেন সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়।

আরও পড়ুন-বইমেলায় চলবে বাড়তি মেট্রো

এছাড়াও এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, শিক্ষামন্ত্রী তথা বাংলা অকাদেমির সভাপতি ব্রাত্য বসু, কবি শ্রীজাত, আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রচেত গুপ্ত। উজান যাত্রা অর্থাৎ পেছনে ফিরে যাওয়া। গল্পের মূল চরিত্র বাবুও যেন তাই বারবার পেছনে ফিরে ফিরে যাচ্ছিলেন। আর সেই সঙ্গে তাঁর জীবনে প্রবেশ ঘটছিল একাধিক চরিত্রের। এটি একটি চেনা-অচেনা জীবনের দলিল। বাবু নামে এক বালক, কালো দিঘি, অমলতাস গাছ নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। নিপুণ সাহিত্য মুন্সিয়ানা ফুটে উঠেছে গল্পে। রয়েছে জীবনের উত্থান পতন। মূল চরিত্র হয়তো লেখকেরই আত্মজীবনী। এদিনের অনুষ্ঠানে সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় বলেন, আমার ভালবাসা, সহমর্মিতা জানাই। এমন সহজ ভাবে লিখেছেন যেন লেখার মধ্যে কবিতার সঞ্চার আছে। ব্রাত্য বসু জানান, বাবুর জীবনে দেখা যায় নানান লোক আসছে। বিভিন্ন চরিত্রের আগমন হচ্ছে। যার মধ্যে দিয়ে বিশ্বায়নের আগমন হচ্ছে। নাগরিক জীবন কেবল গ্রাম মফস্বলের কাহিনি বলবে তা নয়। মনস্তাত্ত্বিক কথাও বলছে। এই মুহূর্তের অস্থির সময়ে নিজেকে ফিরে দেখা। তিনি অতীতে যেতে চান। বাবু আমরা সবাই। আমরা এই সময়কে বর্জন করতে চাই। কিন্তু এই সময়কে আলিঙ্গন করতে হবে। আমরা এই উজানযাত্রার লেখককে উৎসাহিত করছি। নস্টালজিক হয়ে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, মফস্বলের পাঠক হিসেবে যোগ করতে পেরেছি নিজেকে। ছিন্নমূল বালকের পদচারণা পেলাম। শেষ পর্যায়ে বইয়ের লেখক যোগ করেন, আমি বিব্রত, কুণ্ঠিত। এই বই লিখতে গিয়ে যাঁদের সাহায্য পেয়েছি তা ভাগ্যের। লেখকের কথায়, আমি বিপণনের কাজ করি। তবে আমার মনে হয়েছিল আমার মনেও বেশ কিছু কথা রয়েছে যা জানানো দরকার। সেই থেকেই লেখার উদ্ভব।

আরও পড়ুন-পরবের শেষে আজ টুসুর ভাসানে মাতবে রাঢ় বাংলা

তিনি জানান, শুভাপ্রসন্ন ভট্টাচার্য প্রথমে বইয়ের কভার করে দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই প্রচ্ছদ দেখে অতীতে ফিরে যাচ্ছিলেন তিনি। যা তাঁকে বেদনা দিছিল। মনে করিয়ে দিত তিক্ত বিস্মৃতি। তাই বদল করেছেন সেই প্রচ্ছদ। দে’জ পাবলিকেশন থেকে প্রকাশিত হয়েছে এই বই। এবারের বইমেলায় পাওয়া যাবে উজানযাত্রা।

Latest article