প্রতিবেদন : বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশে জঙ্গলরাজ কায়েম হয়েছে। প্রকাশ্য দিবালোকে বাড়ির সামনে যেভাবে উমেশ পাল নামে এক ব্যক্তিকে দুষ্কৃতীরা গুলি করে খুন করেছে তা জানলে শিউরে উঠতে হয়। উমেশের খুনের ঘটনায় স্পষ্ট হয়ে যায়, যোগীরাজ্যে আইনশৃঙ্খলা বলে বস্তুটাই নেই। শুক্রবার বিকেল ৫টা নাগাদ প্রয়াগরাজে উমেশ একটি সাদা রঙের এসইউভি থেকে তাঁর বাড়ির সামনে এসে নামেন। গাড়ি থেকে নামার সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে লক্ষ্য করে পরপর কয়েকটি গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা। মাত্র ৪৭ সেকেন্ডের মধ্যে গোটা অপারেশনটি শেষ করে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। শুক্রবার বিকেলের এই খুনের ঘটনা গোটা উত্তরপ্রদেশে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। যোগীরাজ্যে মাফিয়ারা কীভাবে বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে এ ঘটনা তারই প্রমাণ। উমেশকে খুনের অভিযোগ উঠেছে প্রাক্তন সাংসদ আতিক আহমেদের বিরুদ্ধে। ইতিমধ্যেই তাঁর দুই ছেলেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। প্রশ্ন হল, কেন উমেশকে এভাবে খুন হতে হল?
আরও পড়ুন-১৫০ বর্ষপূর্তিতে আজ ট্রাম প্যারেড
জানা গিয়েছে, ২০০৪ সালে সমাজবাদী পার্টির টিকিটে ফুলপুর লোকসভা কেন্দ্রে জয়ী হয়েছিলেন আতিক। সাংসদ হওয়ার আগে তিনি ছিলেন এলাহাবাদ পশ্চিম কেন্দ্রের ৫ বারের বিধায়ক। তিনি সাংসদ হওয়ায় ওই আসনটিতে উপনির্বাচন হয়। উপনির্বাচনে তাঁর ভাই খালিদ আজিম সপার টিকিটে লড়াই করেন। অন্যদিকে ওই আসনে বহুজন সমাজ পার্টির টিকিটের দাঁড়িয়েছিলেন রাজু পাল। আজিমকে হারিয়ে জয়ী হন রাজু। এ ঘটনা থেকেই আতিকের সঙ্গে রাজুর শত্রুতা। রাজুকে নিয়মিত হুমকি দিতেন আতিক। ২০০৫ সালের ২৫ জানুয়ারি একটি অনুষ্ঠানে যাচ্ছিলেন বিধায়ক রাজু। সেই সময় তাঁর গাড়ি আটকে তাঁকে পরপর গুলি করে দুষ্কৃতীরা। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় রাজুর। রাজুকে খুনের অভিযোগ ওঠে আতিক ও তাঁর ভাইয়ের দিকে। এই রাজু এক সময় আতিকের ডান হাত ছিলেন।
আরও পড়ুন-জলের উপর পানি না পানির উপর জল?
রাজু খুনের একমাত্র সাক্ষী হিসেবে লড়াই শুরু করেছিলেন তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধু উমেশ। যাঁরা ওই খুনের সাক্ষী ছিলেন আতিকের ভয়ে তাঁরা সকলেই সাক্ষ্য দেওয়া থেকে বিরত থাকেন। এমনকী, রাজুর স্ত্রী পূজাও সাক্ষ্য দেননি। কিন্তু উমেশ চেয়েছিলেন তাঁর বন্ধুর খুনিদের শাস্তি দিতে। এজন্য আতিকের লোকজন তাঁকে অপহরণ করে। তাঁকে নিয়মিত হুমকিও দিতে থাকে। এজন্য তিনি আতিক ও তাঁর ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। শুক্রবার সেই মামলার শুনানি ছিল। শুনানি শেষে আদালত থেকে ফিরছিলেন উমেশ। বাড়ির সামনেই এই ঘটনা ঘটে। পুলিশ জানিয়েছে, দুষ্কৃতীরা আদালত থেকেই উমেশকে অনুসরণ করেছিল।