প্রতিবেদন : মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে লাগামহীন কুৎসা করে গ্রেফতার হতে হল কংগ্রেস নেতা কৌস্তভ বাগচিকে। গত কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেল, সোশ্যাল মিডিয়ায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে একের পর এক চূড়ান্ত অশালীন মন্তব্য করতে থাকেন কৌস্তভ। এখানেই ক্ষান্ত না থেকে এমনকী সাংবাদিক বৈঠক করেও নানা অশালীন মন্তব্য ও কুৎসা চালিয়ে যান এই কংগ্রেস নেতা। এরপরই তাঁর বিরুদ্ধে বড়তলা থানায় অভিযোগ জমা পড়ে।
আরও পড়ুন-শ্রদ্ধায়-স্মরণে ষষ্ঠীপদ চট্টোপাধ্যায়
স্বাভাবিক ভাবেই পুলিশ সেই অভিযোগ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়। শনিবার ভোরে গ্রেফতার করা হয় কৌস্তভকে। ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হলে শুনানির পর প্রথমে রায়দান স্থগিত রাখলেও বিকেলের পর বিচারকের রায়ে জামিন পান কৌস্তভ। তবে মাতৃসমা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এই ধরনের কুৎসিত-কুরুচিকর মন্তব্য করার জন্য দলের তরফে এর তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা করা হয়। মন্ত্রী শশী পাঁজা শনিবার বিকেলে তৃণমূল ভবনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রীতিমতো পর্দায় কৌস্তভের বলা ভিডিও দেখিয়ে প্রশ্ন তোলেন, একজন মহিলা-মুখ্যমন্ত্রী সম্পর্কে কীভাবে এই কংগ্রেস নেতা এই ধরনের কুৎসিত ও অশালীন মন্তব্য করলেন? মন্ত্রীর কথায়, এটা ক্ষমাহীন অপরাধ। রোদ্দুর রায়ের সঙ্গে কৌস্তভের কোনও তফাত নেই। দু’জনেই একই ধরনের নিম্নরুচির মানুষ। তৃণমূল কংগ্রেস এ-জিনিস বরদাস্ত করবে না।
আরও পড়ুন-রাজ্যে রাজ্যে ইনফ্লুয়েঞ্জার থাবা, আক্রান্ত বড়রাও, ওষুধে সতর্কতা
তৃণমূল সাংসদ ডাঃ শান্তনু সেনও তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে কৌস্তভের কড়া সমালোচনা করেছেন। গুজরাতের মোরবিতে সেতু বিপর্যয়ে বহু মানুষের প্রাণ যাওয়ার পরে তৃণমূল কংগ্রেসের জাতীয় মুখপাত্র সাকেত ট্যুইট করে প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করায় যখন তাঁকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করে রাখা হয় তখন এসব সমালোচনা কোথায় থাকে? প্রশ্ন শান্তনুর। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে সবমহল। কোনও রাজনৈতিক দলের কর্মী একজন মহিলা-মুখ্যমন্ত্রী সম্পর্কে এত নিম্নরুচির কথা বলতে পারে তা বিশ্বাস করা কঠিন!
আরও পড়ুন-শুধু আন্তর্জাতিক পুরস্কার নয়, বাংলার পর্যটন দেশে মডেল
কৌস্তভের বিরুদ্ধে একাধিক জামিন-অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ (১২০বি/১৫৩/৩৫এএ/৫০৪/৫০৫/৫০৬/৫০৯)। টেলিভিশনে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে কুমন্তব্য করার পর শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠক করেও সেই একই কাজ করেন কৌস্তভ। কংগ্রেস নেতাকে ভোররাতে তার বারাকপুরের বাড়ি থেকে গ্রেফতারের পর বড়তলা থানায় বিক্ষোভ দেখায় কংগ্রেস। এমনকী আদালতেও তুমুল হইহট্টগোল করে কংগ্রেসের নেতা-কর্মী ও একশ্রেণির আইনজীবী। হইহট্টগোলের মাঝে বিচারককে চুপ করে বসে থাকতে হয় একটা সময়। গোটা ঘটনার তীব্র নিন্দা করে মন্ত্রী শশী পাঁজা বলেন, ওই রাজনৈতিক কর্মী যে দল থেকে এসেছেন সেখানেও শীর্ষে মহিলারাও আছেন। সোনিয়া গান্ধী, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী (ভাদরা) আছেন। কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব কি ওই নেতার বক্তব্য সমর্থন করেন? স্মৃতি ইরানি যখন সোনিয়া গান্ধীকে আক্রমণ করে, তখন প্রতিবাদ করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস।
আরও পড়ুন-অ্যাডিনো-সামলাতে হল ১৬ শয্যার শিশু ইউনিট
জামিন পাওয়ার পরে ক্ষমা চাওয়া উচিত কৌস্তভের। তিনি এআইসিসিতে সুযোগ পাননি বলে, তিনি নিজের হতাশা এভাবে ওগরাবেন সেটা হয় না। তাঁর সংযোজন, অধীর চৌধুরীর মেয়ের মৃত্যু হল অস্বাভাবিক। অধীরবাবুও ক্ষমার অযোগ্য, নিন্দনীয় মন্তব্য করেছেন। বাম জমানায় এ-জিনিস ঘটলে তার দেহ খালে পাওয়া যেত। এটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিবর্তনের সরকার তাই আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সাফ কথা মন্ত্রীর।