প্রতিবেদন : শুক্রবার রাজ্যসভায় পেশ হল অভিন্ন দেওয়ানি বিধি আইন সংক্রান্ত প্রাইভেট মেম্বার বিল। দেশের সমস্ত জাতি, ধর্ম, বর্ণের বিবাহ, সম্পত্তি মামলার যাতে একটি অভিন্ন বিধির মাধ্যমে ফয়সালা হয়, তার জন্যই অভিন্ন দেওয়ানি বিধি আনতে চায় বিজেপি। এদিন অভিন্ন দেওয়ানি বিধি প্রাইভেট মেম্বার বিল পেশ করেন বিজেপি সাংসদ ক্ষীরোদিলাল মিনা। তবে বিলটির প্রবল বিরোধিতা করে তৃণমূল কংগ্রেস সহ সব বিরোধীরা।
আরও পড়ুন-কোর্টে লড়াই পরাস্ত বিজেপি, মোরবিতে সাকেতের জামিন
তৃণমূল সাংসদ জহর সরকার বলেন, এটি সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক, অনৈতিক, ধর্মনিরপেক্ষ বিরোধী। এটিকে এখন একটি প্রাইভেট মেম্বার বিল হিসাবে উত্থাপন করা হচ্ছে। এটা হল ব্রঙ্কম্যানশিপ। তাঁর সংযোজন, এখনও সময় আছে। সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠতাকে সামনে রেখে ভারতের যে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো তাকে ভাঙার চেষ্টা হচ্ছে। নানা ভাষা, নানা মত, নানা পরিধান—এটাই হল ভারতের ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতীক।
তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ নাদিমুল হকের বক্তব্য, এই বিল দেশের নাগরিকদের স্বাধীনতার ওপর কেন্দ্রীয় সরকারের আক্রমণ। এই বিল দেশের সামাজিক কাঠামোকে ধ্বংস করে দেবে এবং ভারতে এতদিন ধরে অক্ষুণ্ণ থাকা বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্যও ভেঙে পড়বে। বিরোধীদের প্রবল আপত্তির মধ্যেই রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনকড় ভোটাভুটির নির্দেশ দেন। বিলটি পেশের পক্ষে ভোট পড়ে ৬৩টি এবং বিরোধিতায় ভোট পড়ে ২৩টি। ফলে বিরোধীদের আপত্তি খারিজ হয়ে যায় এবং অভিন্ন দেওয়ানি বিধি প্রাইভেট মেম্বার বিল পেশ করেন ক্ষীরোদিলাল মিনা। এর আগেও বিলটি তালিকাভুক্ত হয়েছিল। যদিও বিলটি আনা যায়নি। সুতরাং বিলটির প্রস্তাব গৃহীত হওয়ায় এবার অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়ে আলোচনা হবে সংসদে।
আরও পড়ুন-১৫ বছর পলাতক থাকার পর দিঘা থেকে গ্রেফতার খুনি
গুজরাত নির্বাচনের ইস্তাহারে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বিজেপি।উত্তরাখণ্ড, হিমাচলের মতো রাজ্যগুলি অভিন্ন দেওয়ানি বিধি আনতে কমিটি তৈরি করেছে। কিছুদিন আগেও বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশেও চর্চার বিষয় ছিল অভিন্ন দেওয়ানি বিধি। এই বিধির পক্ষে সওয়াল করা শুরু হয়েছে বিজেপি শাসিত রাজ্য কর্নাটক এবং উত্তরপ্রদেশেও। বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের দাবি, কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার, অযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণের কাজ শেষ হয়ে যাবে ২০২৪ সালের মধ্যে। ফলে, স্বাভাবিকভাবেই পরবর্তী লক্ষ্য অভিন্ন দেওয়ানি বিধি কার্যকর করা। যদিও এটি একটি প্রাইভেট মেম্বার বিল কিন্তু যেহেতু এটি বিজেপি সাংসদ দ্বারা সংসদে পেশ করা হয়েছে। স্বভাবতই, এর পিছনে সরকারের ‘সদিচ্ছার’ আঁচ পাচ্ছেন বিরোধীরা।