প্রতিবেদন : শুক্রবারের পর শনিবার। পরিষেবার উন্নয়নের নামে রেলের তুঘলকি সিদ্ধান্তে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন শিয়ালদা মেন শাখার নিত্যযাত্রীরা। অসংখ্য ট্রেন বাতিল এবং অস্বাভাবিক দেরিতে চলার কারণে দুর্ভোগের সীমা নেই সাধারণ মানুষের। রেলের পূর্ব ঘোষণামতো এই কাজ চলবে আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত।
আরও পড়ুন-ধর্মঘটে কেন এলেন না? অভিভাবক বিক্ষোভে শিক্ষকরা
সেক্ষেত্রে কীভাবে সপ্তাহের প্রথম ও দ্বিতীয় কাজের দিনে কর্মস্থলে পৌঁছবেন তা নিয়ে এখন থেকেই দুশ্চিন্তাগ্রস্ত ওই শাখার যাত্রীরা। সোমবার আইসিএসইর পরীক্ষাও রয়েছে। মঙ্গলবার থেকেই শুরু হচ্ছে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা। রেলের এই স্বেচ্ছাচারিতায় পরীক্ষার্থীদের মধ্যেও তৈরি হয়েছে উদ্বেগ। এই উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে হাওড়া-বর্ধমান শাখায় ফের একগুচ্ছ ট্রেন বাতিলের ঘোষণা। ওই শাখার বেলমুড়ি ও চেরাগ্রাম স্টেশনের মাঝে লাইনে রক্ষণাবেক্ষণের কারণ দেখিয়ে আজ রবিবার, আগামী বৃহস্পতিবার ও সামনে সপ্তাহে রবিবার হাওড়া-বর্ধমান কর্ড শাখায় একাধিক ট্রেন বাতিল থাকছে বলে রেলের তরফে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন-দিনের কবিতা
রেলের দাবি, এই রক্ষণাবেক্ষণের কাজ শেষ হলে পরিষেবার মান আরও ভাল হবে। তবে সাধারণ মানুষ ও নিত্যযাত্রীদের বক্তব্য, রেলের উচিত আরও সংবেদনশীলতার সঙ্গে সুষ্ঠু পরিকল্পনা তৈরি করে এ ধরনের কাজে হাত দেওয়া। যাতে যাত্রীদের এরকম চরম ভোগান্তিতে পড়তে না হয়। পূর্ব রেলের শিয়ালদা ডিভিশনের নৈহাটি-কল্যাণী স্টেশনের মাঝে নন ইন্টারলকিংয়ের কাজ চলছে। তার জন্য পাঁচদিন বহু ট্রেন বাতিল করেছে রেল। খাতায়-কলমে কাজ হওয়ার কথা গভীর রাত থেকে ভোরবেলা পর্যন্ত যাতে যাত্রীদের অসুবিধা কম হয়। কিন্তু অভিজ্ঞতা বলছে অন্য কথা। অজস্র ট্রেন বাতিল করা হয়েছে তো বটেই, উপরন্ত প্রতিটি ট্রেন গড়ে, দেড় থেকে দু’ঘণ্টা দেরিতে চলছে। অনেক নিত্যযাত্রীরা সামাজিক মাধ্যমে নিজেদের এই দুর্বিষহ যন্ত্রণার কথা তুলে ধরেছেন।
আরও পড়ুন-মেয়েদের ভবিষ্যৎ ভেবে ২৯ বছর পর দ্বিতীয়বার বিয়ে কেরলের দম্পতির
শনিবার সন্ধ্যায় ট্রেনে উঠে মধ্যরাত পার করে বাড়ি ফিরেছেন বহু নিত্যযাত্রী। ভিড় ঠাসা ট্রেনে ও প্লাটফর্মে গলদঘর্ম হয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে তাদের। শুক্রবার রাতের পরে শনিবার সকাল থেকেই আরও বেড়েছে ভোগান্তি। সকাল থেকে বিভিন্ন স্টেশনে দীর্ঘ সময় আটকে থাকা যাত্রীদের ভিড় চোখে পড়েছে। ট্রেন দেরিতে চলার কারণে শনিবার সকালে বহু যাত্রীই নির্দিষ্ট সময়ে নিজেদের গন্তব্যে পৌঁছতে পারেননি। এদিন রবিবার আরও বেশি সংখ্যক ট্রেন বাতিল থাকার কথা। ফলে এই দু’দিন যাত্রীদের যন্ত্রণা যে আরও তীব্র হয়ে উঠবে সে-কথা বলাই বাহুল্য।
আরও পড়ুন-১২১ হাসপাতালে ৫ হাজার বেড, অ্যাডিনো রুখতে তৈরি টাস্ক ফোর্স
এই বিষয়ে পূর্ব রেলের সিপিআরও কৌশিক মিত্র বলেন, নন-ইন্টারলকিংয়ের কাজ করা মানে পরবর্তীতে পরিষেবা আরও ভাল হবে। উচ্চমাধ্যমিক ও মাধ্যমিকের মাঝখানে আমরা এই সময়টা বেছে নিয়েছি যাতে কারও কোনও সমস্যা না হয়। জানি মানুষের হয়ত একটু সমস্যা হচ্ছে, কিন্তু ছাত্র ছাত্রীদের সমস্যা হবে না বলে এই সময়টা বেছে নিয়েছি। রাতের দিকে আমরা কাজ শুরু করি। হয়ত সকালের দিকে কাজ শেষ করতে একটু দেরী হচ্ছে। ২ দিন একটু কষ্ট করতে হবে। তাহলে ভবিষ্যতে আমরা অনেকটা সুবিধা পাব।