সুমন করাতি, হুগলি: তাঁর কারখানার ট্রান্সফর্মার ব্যবহার করা হচ্ছে ফুটবল বিশ্বকাপে। নিজেরও ইচ্ছা ছিল কাতারের আল বায়েত স্টেডিয়ামে দর্শকের আসনে বসে বিশ্বকাপ ফুটবল দেখার, কিন্তু কালের নিয়তিতে তাঁকে টেলিভিশনেই খেলা দেখতে হল। তিনি হুগলির উত্তরপাড়ার বাসিন্দা সুবোধকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়। ৬৬ বছর বয়সি সুবোধ কলকাতায় ট্রান্সফর্মার তৈরির একটি কারখানা ‘বিএমসি ইলেকট্রোপ্লাস্ট’-এর মালিক। কলকাতার ঠাকুরপুকুরে এই কারখানা রয়েছে তাঁর।
আরও পড়ুন-গুজরাত ভোটে বিদেশি প্রচার! বিজেপির বিরুদ্ধে সরব তৃণমূল
কাতার বিশ্বকাপের সঙ্গে তিনি অন্তরঙ্গ ভাবে জড়িত। বিশ্বকাপের জন্য যে তিন হাজার ট্রান্সফর্মার ব্যবহার করা হচ্ছে, তার সব-ই সুবোধের কারখানা থেকে পাঠানো। কলকাতার রাস্তায় যে ট্রান্সফর্মার দেখা যায়, এগুলি তার থেকে আলাদা। এগুলি সুইচ গিয়ার বোর্ডের সঙ্গে লাগানো থাকে। সুবোধবাবু বলেছেন, “এগুলির মূলত দুটো কাজ থাকে। কত পরিমাণ বিদ্যুৎ খরচ হয়েছে তা পরিমাপ করা যায় এই যন্ত্রের সাহায্যে। তা ছাড়া শর্ট সার্কিট হলে এই ট্রান্সফর্মার থেকেই বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়।” সুবোধবাবু বলেন, শেষ পর্যন্ত টেলিভিশনের পর্দায় খেলা দেখতে হয়। কারণ ২০২১ সালে বাড়িতে পা পিছলে পড়ে যান। বাঁ হাঁটু ভেঙে যায়। তারপর থেকে ওয়াকার-ই তাঁর সর্বক্ষণের সঙ্গী। তিনি আরও জানিয়েছেন, প্রায় ৩ হাজার ট্রান্সফর্মার মালয়েশিয়ার টামকো সুইচগিয়ার সংস্থার মাধ্যমে কাতারে পাঠিয়েছেন। ফুটবলের সঙ্গে সম্পর্ক এই প্রথম, তা একেবারেই নয়। ছোটবেলায় নিয়মিত মোহনবাগান মাঠে যেতেন। ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের বন্ধু শান্তনু মিত্রের সঙ্গে ১৯৮০ সালে এই কারখানা তৈরি করেন। বন্ধু প্রয়াত হয়েছেন। প্রায় ১০০ কর্মী কাজ করেন কারখানায়। সুবোধ দুর্গাপুরের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি থেকে ১৯৭৭ সালে ইলেকট্রিকাল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করেছিলেন।