সুস্মিতা মণ্ডল, মথুরাপুর: করোনা ভ্যাকসিন তৈরিতে অবদানের জন্য এবার দেশের স্বীকৃতি পেতে চলেছে বাংলার ছেলে শুভাশিস নাটুয়া। করোনা ভ্যাকসিন কোভিশিল্ড যখন তৈরি হচ্ছিল, তখন গবেষণার জন্য ডাকা হয় শুভাশিসকেও। সেখানেই ‘কোভিশিল্ড ভ্যাকসিন ডায়াগনস্টিক
আরও পড়ুন : দল বিরোধী কাজ বরদাস্ত নয় : উদয়ন
ডেভলপমেন্টে’-র কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন বাংলার এই গবেষক। মধ্যপ্রদেশের অন্যতম গবেষণা কেন্দ্র IISER ভোপাল থেকে একটি ১৫ জনের বিজ্ঞানী দল গঠন করা হয়। একজন RNA বিশেষজ্ঞ হিসেবে ওই দলে কাজের সুযোগ পান শুভাশিস। করোনা ভাইরাসের বিভিন্ন স্ট্রেনের জেনেরিক গঠন ও বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর মধ্যে সংক্রমণের হারের পার্থক্য নিয়ে গবেষণা করেন তিনি।
আরও পড়ুন : “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যুবশ্রী প্রকল্পের টাকায় আমি আজ স্বনির্ভর”
সেই কাজের জন্য এ বার কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে স্বীকৃতি পাচ্ছেন মথুরাপুরের কৃষ্ণচন্দ্রপুর হাই স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র শুভাশিস নাটুয়া। ১০ ও ১১ সেপ্টেম্বর কোয়েম্বাটুরে আয়োজিত ‘ইন্টারন্যাশনাল সাইন্টিস্ট অ্যাওয়ার্ড অন ইঞ্জিনিয়ারিং সাইন্স অ্যান্ড মেডিসিন’-র স্বীকৃতি প্রদান অনুষ্ঠান। সেখানেই করোনা ভ্যাকসিন ‘কোভিশিল্ড’ নিয়ে গবেষণার স্বীকৃতি হিসেবে ভারত সরকারের কাছ থেকে পুরস্কার পাচ্ছেন বাংলার প্রত্যন্ত গ্রামের এক যুবক। মথুরাপুরের দরিদ্র পরিবারে জন্ম শুভাশিস নাটুয়ার। বাবা ব্রজেন্দ্র নাথ নাটুয়া বাজারে সবজি বিক্রি করতেন। মা গৃহবধূ। দুই ছেলে দেবাশীষ ও শুভাশিস। ছোট থেকেই অভাবের সংসারে বড় হয়েছে শুভাশিস। সংসার চালাতে নিজেও সবজি বিক্রি করেছে। ছোট থেকেই পড়াশোনায় মেধাবী ছিলেন মথুরাপুরের এই যুবক। স্বপ্ন দেখতেন বিজ্ঞানী হওয়ার। সংসারের আর্থিক অনটন বাধা হয়ে দাঁড়ায়। তখনই কৃষ্ণচন্দ্রপুর হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক চন্দন মাইতি ও সহ শিক্ষকরা সবরকম সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন স্কুলের এই দুস্থ মেধাবী ছাত্রের দিকে। স্কুলের তরফ থেকেই বৃত্তির ব্যবস্থা করা হয়। ২০১২ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার পর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব রিসার্চ সায়েন্স এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারে ভর্তি হন শুভাশিস। তারপর আর ফিরে তাকাতে হয়নি দরিদ্র কৃষক পরিবারের ছেলে শুভাশিসকে। একের পর এক গবেষণা করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। বর্তমানে আমেরিকাতে ক্যানসারের কোষ নিয়েও গবেষণা করছেন এই যুবক। শুভাশিসের এই সাফল্য নিয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক চন্দন মাইতি বলেন,‘ ছোট থেকে শুভাশিস মেধাবী। অভাব কখনও দমিয়ে রাখতে পারেনি। শুভাশিস বাংলার ছেলেমেয়েদের রোল মডেল। আরও এগিয়ে চলুক।’