সংবাদদাতা, জঙ্গিপুর : বাংলার লোকসংস্কৃতির অন্যতম অঙ্গ ভাদুগান। একসময় গ্রাম বাংলায় ভাদ্র মাসে একাধিক ভাদুগানের দলকে দেখা যেত। গরিব লোকশিল্পীরা গ্রামে গ্রামে ঘুরে এই গান গাইতেন। স্মার্ট ফোনের যুগে বাংলার এই সংস্কৃতির অস্তিত্ব সঙ্কটে। বিলুপ্তপ্রায় লোকগানকে বাঁচিয়ে রাখতে মুর্শিদাবাদের নবগ্রাম থানার কল্যাণগঞ্জের তিনকড়ি মার্জিত, কানাই পাল, মাথু বায়েন, চাঁদু পাল তারক হাঁজরা ও সুকুমার মণ্ডলরা গোটা ভাদ্র মাস মুর্শিদাবাদ ও বীরভূমের বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে ভাদু গান শোনান।
আরও পড়ুন-হাসপাতালে চালু ওয়াটার এটিএম
শিল্পীরা বলেন, এখন ভাদু গান গেয়ে তেমন রোজগার হয় না। তবু এই লোকগানের প্রতি ভালবাসা, দায়বদ্ধতা এবং একে বাঁচিয়ে রাখার তাগিদে ভাদ্র মাসে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে পড়ি। কিছু রোজগার হয়েছে। ভাদু গানের উৎপত্তি পুরুলিয়ায়। পাশাপাশি বাঁকুড়া, বীরভূম, মেদিনীপুর এবং ঝাড়খণ্ডের একটা অংশে ভাদু গান জনপ্রিয়। এই জেলাগুলিতে একাধিক ভাদু গানের দল রয়েছে। মুর্শিদাবাদের নবগ্রাম এবং কান্দি ব্লকেও ভাদু গানের দল রয়েছে। ভাদু গানের বিষয়বস্তু হল, রাজকন্যা ভদ্রেশ্বরীর কুমারী জীবন, ইচ্ছা, আশা-আকাঙ্ক্ষা, স্বামীর আগমনের অপেক্ষায় বিয়ের আসরে কনে সেজে অপেক্ষা এবং অকালমৃত্যু। মেয়ে সেজে তিনকড়ি ভাদুকে কোলে নিয়ে গানের তালে তালে নাচেন কুড়ি বছরের বেশি। প্রায় চার দশকের বেশি সময় ধরে গান বেঁধে চলেছেন সুকুমার মণ্ডল।