প্রতিবেদন : নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা ধ্বংস করার সমস্ত বন্দোবস্ত করেছে গেরুয়া শিবির। আর এবার খোদ প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করলেও চোখ উল্টে বসে আছে কমিশন। এ নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে চিঠি দিল তৃণমূল কংগ্রেস।
আরও পড়ুন-কথা রাখেনি মোদি সরকার, লাদাখে মাইনাস ১৭ ডিগ্রিতে চলছে প্রতিবাদ
একদিকে দেশের শিল্পপতিদের টাকা লুঠে বিজেপির ভোট বৈতরণী পারের দুর্নীতি নির্বাচনী বন্ড ইস্যুতে সামনে এসে পড়েছে। আর এবার বায়ুসেনার বিমানে ভোটপ্রচারে গিয়ে প্রশাসনকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করার ছবি তুলে ধরলেন খোদ নরেন্দ্র মোদি। নির্বাচন ঘোষণা হওয়ার পর মডেল কোড অফ কন্ডাক্ট চালু হয়ে গেলেও অন্ধ্রপ্রদেশে বায়ুসেনার হেলিকপ্টার ব্যবহার করে ভোটের প্রচার সারেন নরেন্দ্র মোদি। এই কাজ পুরোপুরি বেআইনি ও শাস্তিযোগ্য। অথচ এক্ষেত্রে মুখে কুলুপ এঁটে বসে আছেন নির্বাচন কমিশনাররা। নির্বাচনী আচরণবিধি চালু হওয়ার পরেও মোদির নিয়ম ভাঙার বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ সাকেত গোখেল। এই বিষয়ে কমিশনের উপযুক্ত পদক্ষেপ দাবি করেন তিনি। শনিবার লোকসভা নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। সেইমতো শনিবার থেকেই লাগু হয়ে যায় নির্বাচনী আচরণবিধি। অথচ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রবিবার অন্ধ্রপ্রদেশের পালনাড়ু জেলার চিলাকালুরিপেটে নির্বাচনী প্রচার করতে উড়ে যান ভারতীয় বায়ুসেনার বিমানে। যা পুরোপুরি নিয়মবিরুদ্ধ। কারণ ভোট ঘোষণার পর দলীয় প্রচারে সরকারি পরিবহণ ব্যবহার করতে পারেন না সরকারি পদাধিকারী এবং ভোটের কোনও প্রার্থী।
আরও পড়ুন-ফের প্রেসিডেন্ট পুতিনই, একতরফা ভোটের পর তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের হুমকি!
তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ কমিশনে অভিযোগ জানান, বায়ুসেনার জেডপি ৫২৩৬ টেল নম্বরের হেলিকপ্টারে দেশের একটি লোকসভা কেন্দ্রে ভোটপ্রচারে যান মোদি, যা নির্বাচনী আচরণবিধি বিরোধী। নির্বাচনী আচরণবিধি অনুযায়ী, ভোটপ্রচারে কোনও রাজনৈতিক দল বা নেতা বা প্রার্থী বা নির্বাচনের সঙ্গে যুক্ত কোনও ব্যক্তির কোনও রকম সরকারি পরিবহণ ব্যবহারে সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে। কেন্দ্র, রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল প্রশাসনের, কেন্দ্র বা রাজ্য সরকারের চুক্তিভিত্তিক, দুই সরকারের যৌথ প্রকল্পের অধীন, স্থানীয় প্রশাসন, ব্যবসায়িক সমিতির, সমবায় সমিতি বা স্বশাসিত জেলা পরিষদ বা সরকারি তহবিল থেকে চলা যে কোনও সংস্থার পরিবহণ ব্যবহারের ক্ষেত্রে এই নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে নির্বাচনী আচরণবিধি অনুসারে। তার পরেও প্রধানমন্ত্রী বায়ুসেনার হেলিকপ্টার ব্যবহার কীভাবে করতে পারেন? নাকি মোদির জন্য সমান্তরালভাবে অন্য ব্যবস্থা চালু রেখেছে নির্বাচন কমিশন? প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে কমিশন এই বিষয়ে কী পদক্ষেপ নিচ্ছে তা জানানোর অনুরোধ করেছে তৃণমূল। নিজের সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলে এই অভিযোগপত্র প্রকাশ করে সাকেতের দাবি, এই একইরকম আচরণবিধি ভাঙার জন্য ১৯৭৫ সালে ভোটে লড়া বাতিল হয়েছিল ইন্দিরা গান্ধীর। পাশাপাশি কমিশন শনিবার নির্বাচনী নির্ঘণ্ট প্রকাশের সময় নিয়ম ভাঙলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার যে ঘোষণা করেছিল, তাও কমিশনের কর্তাদের মনে করিয়ে দেন তিনি।