প্রতিবেদন : ঐতিহ্যের বিশ্বভারতী থেকে এবার বাদ গেলেন বিশ্বকবিই। হেরিটেজ ফলক থেকে রবী ঠাকুরের নাম বাদ সেখানে লেখা হল শুধু প্রধানমন্ত্রী ও উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর নাম। আর এই ঘৃণ্য কাজটি করেছেন বিজেপির বংশবদ বিদ্যুৎ নিজেই। তার এই নির্লজ্জ-বেহায়াপনার রাজনীতিকরন দেখে স্তম্ভিত সকলে। এই ঘটণায় সর্বত্র নিন্দার ঝড় উঠেছে। বিশেষ করে শিক্ষা জগতের সঙ্গে জড়িতরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন-তেজ নিম্নচাপে ৬ জেলায় বৃষ্টি
রবীন্দ্রনাথের আদর্শ-শিক্ষার পথ অনুসরণ করে ১৩৫ বছর ধরে গর্বের ঐতিহ্য নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে শান্তিনিকেতন। ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য স্বীকৃতির পর বিশ্বভারতীর হেরিটেজ ফলকে আচার্য তথা প্রধানমন্ত্রী ও উপাচার্যর বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর নাম। বিশ্বভারতীর উপাসনা গৃহ, রবীন্দ্রভবন, কলাভবন, সংগীত ভবন, ছাতিমতলা, আশ্রম প্রাঙ্গণ সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের আনাচে-কানাচে যে শ্বেত পাথরের ফলক বসানো হয়েছে সেখানে উল্লেখ রয়েছে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য সাইট। কিন্তু কোনও এক অজানা কারণে সেই ফলকেই নেই রবীন্দ্রনাথের নাম। যা। দিয়ে বেজায় চটেছেন পড়ুয়া থেজে প্রাক্তনী আশ্রমিকরাও। গত ১৭ সেপ্টেম্বর ইউনেস্কো শান্তিনিকেতনকে বিশ্ব হেরিটেজ তকমা দিয়েছে। বিশ্বে এই প্রথমবার একটি চালু বিশ্ববিদ্যালয়কে ইউনেস্কো হেরিটেজ স্বীকৃতি দিয়েছে। সেই কৃতিত্ব মোদির নামে চালানোর নোংরা রাজনীতি শুরু করেছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ ও উপাচার্য।
আরও পড়ুন-দিনের কবিতা
এই ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে নৃসিংহ প্রসাদ ভাদুড়ি বলেন, রাজনৈতিক কারণেই ইচ্ছে করে রবীন্দ্রনাথকে ভুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। বিজেপি ও বিশ্বভারতীর বর্তমান ভিসি বোঝাতে চান এরাই সবটা করেছেন। রবীন্দ্রনাথ বলে কেউ ছিলেন না। গোটা দেশ যাকে নিয়ে গর্ব করে সেই মানুষটাকে তার কাজকে সরিয়ে দিতে চাইছে। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য ওমপ্রকাশ মিশ্র বলেন, এটা আশ্চর্য শুধু নয় লজ্জারও। বিজেপির মদতে এই উপাচার্য সব ঐতিহ্য সংস্কৃতি ধ্বংস করে দিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর মহিমাকীর্তন করতে গিয়ে বিশ্বকবির বিশ্বভারতীকে জলাঞ্জলি দিচ্ছে। কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত বিভাগের অধ্যাপক পার্থ দে বলেন, এই ঘটনা ভাবা যায় না। বাঙালির ভাবাবেগে আঘাত করা হলো। আমাদের চিন্তা- চেতনায় রবীন্দ্রনাথ রয়েছেন। তাঁকেই বাদ দিয়ে দিচ্ছে এরা। ধিক্কার জানাই।
আরও পড়ুন-বিদ্যাধরীর তীরে পির গোরাচাঁদের মাজার শরিফে সম্প্রীতির দুর্গাপুজো
জেনে রাখা দরকার, বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কোনও উদ্বোধনী ফলক বা কোনও স্বীকৃতি ফলক বসানোর রীতি নেই। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়কে গৈরিকিকরণ করতেই সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবেই নামের বিজ্ঞাপনের জন্যই এই ফলক বসিয়েছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। যেখানে রবীন্দ্রনাথকে ব্রাত্য করার স্পর্ধা পর্যন্ত দেখাতে শুরু করেছেন বিজেপি পোষিত উপাচার্য। যেখানে রবীন্দ্র আদর্শটাকেই ভুলিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বিজেপির এমন সস্তার প্রচার ও নোংরা রাজনীতির নিন্দার ভাষা নেই বলছেন রবীন্দ্রপ্রেমীরা।