প্রবীর ঘোষাল, দোহা: ‘আই ওয়ান্ট টিকিট’ প্ল্যাকার্ড হাতে হাসিমুখে বিশ্বকাপের অস্থায়ী হেড কোয়াটার্সের সামনে দাঁড়িয়ে ছিল রাশিয়ান সুন্দরী সোয়াকিচ। দোহার ডিআইসিসি অঞ্চল চোখধাঁধানো আধুনিক সারি সারি বহুতলে ঘেরা। সেখানেই ফিফার বিশাল অফিস। সোয়াকিচ সদ্য বিবাহিতা। সুদূর রাশিয়া থেকে আশা নিয়ে এসেছে, লিওনেল মেসির হাতেই বিশ্বকাপ দেখবে বলে। ইতিমধ্যে আর্জেন্টিনার একটি খেলা দেখেছে। পোল্যান্ডের বিরুদ্ধে মেসির খেলা দেখতে, অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে সে টিকিট জোগাড় করেছিল। কিন্তু রবিবারের ম্যাচের টিকিট?
আরও পড়ুন-বিশ্বকাপে আজ তৃতীয় স্থানের লড়াই
কেবল সোয়াকিচ নয়, ফিফা অফিসের সামনে অনেকেই ঘুরছেন। জেড্ডার যুবক সোলেমানও এমন একজন। কিছুদিনের জন্য মুম্বইয়ে চাকরি করে গিয়েছেন। তাঁরও আশা একটা টিকিট ফাইনাল ম্যাচে ঠিক জুটে যাবে। ফিফা অফিসের বাইরে, যাঁদের ডিউটি সেইসব নিরাপত্তারক্ষীরা হিমশিম খাচ্ছেন। টিকিট যে নিঃশেষ সেটাই তাঁরা বোঝাতে চাইছেন।
আরও পড়ুন-পা দিয়ে হাতের কাজ করে সফল রায়নার সুজয়
শুধু ফিফা অফিস নয়, টিকিট নিয়ে আর্জেন্টাইনদের চাহিদা তো সবার ওপরে। আমরা যেখানে আছি, তার কাছেই একটি হোটেলে উঠেছেন মেসির দেশের ফুটবল কর্তারা। সেই হোটেলের বাইরে আজ দুপুর থেকে কয়েকশো সমর্থকের ভিড়। অধিকাংশই মেসি-মারাদোনার নাম লেখা জার্সি গায়ে। আর্জেন্টিনা ফাইনালে উঠেছে দেখে তারা দোহায় হাজির হয়েছে। টিকিট চাই। কর্মকর্তাদের কাছে সেই দাবি নিয়ে হোটেলের বাইরে তারা কার্যত ধরনা দিচ্ছে। কাতার পুলিশও কড়া পাহারায় রেখেছে তাদের। হোটেলের ভিতর বোর্ডাররা ছাড়া কাইকেই ঢুকতে দিচ্ছে না পুলিশ। কাতার জুড়ে চলছে ফাইনালের জন্য টিকিটের এইরকম হাহাকার। দোহা শহরের ঝাঁ চকচকে মলগুলিতেও প্ল্যাকার্ড হাতে অনেক টিকিট প্রার্থীকে শুক্রবার ঘুরে বেড়াতে দেখলাম।
আরও পড়ুন-স্বচ্ছতার কারণে আবাস-তালিকার উপভোক্তাদের বাড়ি সরেজমিনে প্রশাসন
কলকাতা থেকে সুবীর সাহা ছেলে জর্জকে নিয়ে কাতারে বিশ্বকাপ দেখতে এসেছেন। রাশিয়াতে ৪ বছর আগে গিয়েছিলেন। সেই বিশ্বকাপে সুবীরবাবু ফাইনালে টিকিটের এত চাহিদা লক্ষ্য করেননি। মজার বিষয় হল, ফিফা টিকিটের যে টেকনোলজি ব্যবহার করেছে, তাতে বেশি দামের টিকিট যে কেউ অন্যের হাতে দিতে পারবে না। স্টেডিয়ামের গেটে ঢোকার সময় সিকিউরিটি চেকে আটকে যাবে। কারণ হায়া কার্ড স্ক্যান করলে টিকিটের আসল মালিকের ছবি চলে আসছে। সেখানেই অন্য ব্যক্তির হাতে টিকিট থাকলে অবধারিতভাবে সে ধরা পড়বে।
টিকিটের এই চাহিদা কি শুধু মেসির জন্যই? নেই কিলিয়ান এমবাপের ফ্রান্স? কাল থেকে আজ পর্যন্ত দেশি-বিদেশি যেসব ফুটবলপ্রেমীর কাছে জানতে চেয়েছি, কে জিতবে বিশ্বকাপ? অধিকাংশের উত্তরই এক, আর্জেন্টিনা। এটাও বোধহয় মেসি-ম্যাজিক।