মণিপুরকে কাশ্মীর বানাতে চান? তৃণমূলের প্রশ্নে ফাঁপরে শাহ

সর্বদলীয় বৈঠকেও তিনি আগের সরকারের নাম না নিয়ে বলেন, ১৯৯২ থেকে এখনও পর্যন্ত সেখানে ১৬০০ মানুষের প্রাণ গিয়েছে।

Must read

প্রতিবেদন : মণিপুরকে কি কাশ্মীর বানাতে চাইছে সরকার! ওখানে যে ভুল হয়েছে তা স্বীকার করে নিয়ে ঠিক পথে হাঁটা শুরু করুক কেন্দ্রীয় সরকার। সরকারকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে তারা মণিপুরে বিভাজন তৈরি করতে চায়, নাকি সেখানে শান্তি ও স্থিরতা ফেরাতে চায়। আমরা এখানে রাজনীতি করতে আসিনি, এখানে আমরা এসেছি গঠনমূলক প্রস্তাব দেওয়ার জন্য। শনিবার মণিপুর নিয়ে কেন্দ্রের ডাকা সর্বদল বৈঠকে অমিত শাহ সহ সরকারি দলের প্রতিনিধিদের এভাবেই চেপে ধরলেন তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন।

আরও পড়ুন-দিনের কবিতা

এই প্রশ্নে রীতিমতো ফাঁপরে পড়েন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সহ বিজেপি নেতারা। মণিপুর জ্বলছে গত দু’মাস ধরে। জাতিদাঙ্গায় প্রাণ ও সম্পত্তিহানি হয়েছে প্রচুর। সেনা নামিয়েও পরিস্থিতি আয়ত্তে আনা যায়নি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর মণিপুর সফরের পর পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে। এই অবস্থায় বাধ্য হয়েই সর্বদল বৈঠক ডেকেছে সরকার। কিন্তু সেই বৈঠকে এদিন বিস্তর অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে অমিত শাহকে। বিরোধীদের তরফে ধেয়ে এসেছে একের পর এক প্রশ্নবাণ। তারপরেও অবশ্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর স্বভাবসিদ্ধ ঔদ্ধত্য নিয়েই বৈঠক থেকেছেন। ভাবটা এমন সব বুঝে নেব। কীভাবে সমস্যার সমাধান সম্ভব হবে সেসব আলোচনা না করে শনিবার সর্বদল বৈঠকে প্রথমেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের পক্ষ থেকে একটি প্রেজেন্টেশন দেওয়া হয়। যেখানে দেখানো হয় মণিপুরের ভৌগোলিক অবস্থান, মণিপুরের ইতিহাস এবং মায়ানমার।

আরও পড়ুন-বিজিপিএমের দাপটে ছন্নছাড়া বিজেপি

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ কতবার মণিপুরে গিয়েছেন, কীভাবে গিয়েছেন, ক’টা ক্যাম্প ভিজিট করেছেন মণিপুর সমস্যা নিয়ে সর্বদলীয় বৈঠকে প্রথমেই দেখানো হয় এই সমস্ত জিনিস। সে সময় বিরোধীরা কার্যত প্রতিবাদ করে বলেন, আমরা যে বিষয়ে আলোচনার জন্য এসেছি তা নিয়ে আলোচনা করা হোক। তৃণমূল কংগ্রেস, কংগ্রেস সহ সমস্ত বিরোধী দল সমস্বরে বলে, মণিপুরে যা চলছে এখনই তা থামানো দরকার। তৃণমূলের পক্ষ থেকে এক সপ্তাহের মধ্যে প্রতিনিধি দল পাঠানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়। বিরোধীদের একের পর এক প্রস্তাবে সমাধানের জন্য কোনও আলোচনা ছাড়াই, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ঔদ্ধত্যের সঙ্গে বলেন, তাঁর ৪০ বছরের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা আছে তাই তিনি জানেন এরকম পরিস্থিতিকে কীভাবে সামলাতে হয়।

আরও পড়ুন-বিরোধীরা আদালতেই থাকুন মানুষ থাকবে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে

সর্বদলীয় বৈঠকেও তিনি আগের সরকারের নাম না নিয়ে বলেন, ১৯৯২ থেকে এখনও পর্যন্ত সেখানে ১৬০০ মানুষের প্রাণ গিয়েছে। বিরোধীদের প্রশ্ন সেখানেই, যদি বিরোধীদের সঙ্গে কোনও আলোচনাই না হয় তাহলে তিনি সর্বদলীয় বৈঠক ডাকলেন কেন? একটি রাজ্যে যেখানে প্রায় দু’মাস ধরে সন্ত্রাস চলছে, যেখানে দেড়শো মানুষের মৃত্যু মিছিল হয়েছে, যেখানে প্রতিদিন কারফিউ চলছে, অনির্দিষ্টকালের জন্য ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ, সেই রাজ্যের শান্তি ফেরানোর জন্য বৈঠকে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এত ঔদ্ধত্য কেন? বৈঠকে একাধিক বিরোধীদলের পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংয়ের পদত্যাগের দাবি জানানো হয়। আগামী বর্ষাকালীন অধিবেশনেও মণিপুর নিয়ে যে বিরোধীরা সোচ্চার হতে চলেছে তার ইঙ্গিত এদিনই সর্বদলীয় বৈঠকে পাওয়া যায়।

Latest article