কেশবরঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়: অপ্রত্যাশিত। আমি ভাবতেই পারছি না। মাত্র ৫২। এটা চলে যাওয়ার কোনও বয়স হল!
শ্যেন ওয়ার্নকে আমি সর্বকালের সেরাদের তালিকাতেই রাখব। আমি কেন, যার সামান্যতম ক্রিকেট-বুদ্ধি রয়েছে, সে এটাই করবে। অসাধারণ স্পিনার। কি সব বল করেছে, যা এমনিতে ভাবাই যায় না। মাইক গ্যাটিংকে রাউন্ড দ্য লেগ বোল্ড করেছিল । শতাব্দীর সেরা বল বলা হয় একে। তবে আমি আরও অনেক বলের কথা মনে করতে পারি, যাতে ওয়ার্ন ব্যাটসম্যানকে বোকা বানিয়ে ছেড়েছে।
আরও পড়ুন-প্রয়াত কিংবদন্তি স্পিনার শেন ওয়ার্ন
বহু বছর ধরে ক্রিকেটের সঙ্গে জড়িয়ে আছি। পরপর সব মনে পড়ে যাচ্ছে। শারজায় শচীনের সেই মরু-ঝড়। পরপর দুদিন ওয়ার্নকে উড়িয়ে ম্যাচ জিতিয়ে দিয়েছিল। তবে এটা মুদ্রার একটা পিঠ। অন্য পিঠ হল ওয়ার্নেরও পাল্টা দেওয়া। ও নিজেও অনেকবার শচীনকে বোকা বানিয়েছে। দুই গ্রেটের মধ্যে এই লড়াই আমরা, ক্রিকেটপ্রেমীরা তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করেছি।
আরও পড়ুন-পরীক্ষার্থীদের পাশে তৃণমূল
আমি নিজে ক্রিকেট কোচিং করি বলে বুঝতে পারছি, এটা ক্রিকেটের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। ওয়ার্নের আরও অনেক কিছু দেওয়ার ছিল। মনে হয় ক্রিকেট ছাড়ার পর ওর ফিটনেসজনিত সমস্যা ছিল। এটা অনেকের হয়। বলছি না ওয়ার্নকে একজন ক্রিকেটারের মতো ফিটনেস রাখতে হত। কিন্তু কোথায় যেন সমস্যা ছিল। জানি না শরীরের যত্ন নিয়েছে কিনা! নিয়মিত শারীরিক পরীক্ষা করিয়েছে কিনা। ওয়ার্নকে দেখে কিন্তু মনে হয়েছে ও অনেক মুটিয়ে গিয়েছিল। জানি এখন এসব বলে কোনও লাভ নেই। কিন্তু ধাক্কাটা মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে। ওয়ার্ন নেই, এটা ভাবা যায়।
পরিসংখ্যানে দেখলাম ১৪৫টি টেস্ট খেলেছে। ৭০৮টি উইকেট। এরপর আর কি বলার থাকতে পারে। অসাধারণ বোলার। স্পিন বোলিংয়ের ধারাটাই যেন বদলে দিয়েছিল ওয়ার্ন। গত কয়েক সপ্তাহে পরপর মৃত্যুতে সব এলোমেলো হয়ে গিয়েছে। প্রার্থণা করি, আর কোনও দুঃসংবাদ যেন শুনতে না হয়!
(মহেন্দ্র সিং ধোনির কোচের এই লেখাটি সাক্ষাৎকার-ভিত্তিক)