মঙ্গলবার শিলিগুড়ির জনসভা থেকে বিজেপিকে নিশানা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার উদ্বোধন হয়েছে কোচবিহার-কলকাতা বিমান পরিষেবা। আর এই পরিষেবার উদ্বোধন নিয়েই এদিন শিলিগুড়ির জনসভা থেকে ক্ষোভ উগরে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমরা ডাবল ইঞ্জিন ফ্লাইট চাই। সিঙ্গল ইঞ্জিন ফ্লাইটে ঝুঁকি আছে। কোনও বিপদ হলে তার দায় কে নেবে? মানুষ বিপদে পড়লে আমরা ছেড়ে কথা বলব না। আমরা করব আর ওরা ঝাণ্ডা নাড়বে?’
আরও পড়ুন-‘বনধ করলে আমরা বনধ সমর্থন করব না’ দার্জিলিং থেকে কড়া বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর
পাশাপাশি এদিন বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দেগে মুখ্যমন্ত্রী বলেন বলেন, কোচবিহার বিমানবন্দর তৈরির জন্য সমস্ত প্রয়োজনীয় কাজ করে দিলাম। আড়াই-তিনশো কোটি টাকা খরচ করে যাবতীয় ব্যবস্থা করে দিলাম। আর এখন বিজেপি বিধায়করা সেই বিমানে উঠে ঘুরে বেড়ালেন। মমতা প্রশ্ন তোলেন, ৯ জন করে যাতায়াত করা যাবে এই বিমান। কী লাভ আছে? এরপরই মমতা জানান, বাগডোগরা বিমানবন্দরকে ঢেলে সাজানো হয়েছে। বালুরঘাট, পুরুলিয়া, মালদহে বিমানবন্দর তৈরি হয়েছে। ইতিমধ্যে রাজ্যে ২৭টি হেলিপ্যাড তৈরি হয়েছে। কিন্তু এসব সত্ত্বেও রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করার চেষ্টা করছে বিজেপি।
আরও পড়ুন-মাধ্যমিকের ফল প্রকাশ কবে? জানাল পর্ষদ
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার সকাল ১০টা ১০ মিনিটে কলকাতা বিমানবন্দর থেকে কোচবিহারের উদ্দেশ্যে উড়ল বিমান। তবে বিমানটিতে আসন সংখ্যা থাকবে মাত্র ৯টি। প্রথম তিন মাস মাত্র ৯৯৯ টাকা খরচ করলেই মিলবে বিমানে চড়ার ছাড়পত্র। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ‘উড়ান প্রকল্প’-এর আওতায় দেশের বিভিন্ন জায়গাগুলির সংযোগস্থাপন করবে এই উড়ান। প্রথম দিনেই যাত্রী হিসাবে বিমানে সফর করেন কোচবিহারের ৫ বিজেপি বিধায়ক। তবে এদিন পরিষেবার উদ্বোধনে বিজেপি বিধায়করা উপস্থিত থাকলেও তৃণমূলের তরফে কোনও প্রতিনিধি ছিলেন না। জানা গিয়েছে, এদিন ন’জনের আসনযুক্ত বিমানে রাজ্যের পাঁচ প্রতিনিধি থাকার কথা ছিল। কিন্তু উড়ানের সব আসন দাবি করে বিজেপি। তাই জটিলতা এড়াতেই শাসক দলের কোনও প্রতিনিধি উপস্থিত হননি।
আরও পড়ুন-প্রবাসী বাঙালিদের জন্য ‘আপন বাংলা পোর্টাল’-এর উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী
তবে একাধিক ত্রুটি ও সমস্যার কারণে কোচবিহার-কলকাতা বিমান পরিষেবা চালুর দিনক্ষণ পিছিয়ে যায়। তবে মঙ্গলবার বিমান যাত্রা শুরু করার পরই জোরকদমে শুরু হয়েছে টিকিট বুকিং। তবে দীর্ঘ টালবাহানার পর বিমান পরিষেবা শুরু হওয়ায় উচ্ছ্বসিত কোচবিহারের মানুষজন। এদিন কোচবিহার বিমানবন্দরে বিমান পরিষেবার সুচনায় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামানিক, কোচবিহারের বিধায়ক নিখিল রঞ্জন দে, বিধায়ক মালতি রাভা, মিহির গোস্বামী ও সুকুমার রায়। এদিন তাঁরাই কলকাতা থেকে কোচবিহারের উদ্দেশে প্রথম বিমানে যাত্রা করেন।
আরও পড়ুন-BSF কমান্ডারের লালসার শিকার মহিলা কনস্টেবল
তবে কলকাতা-কোচবিহার বিমান পরিষেবা শুরু হওয়ার ফলে আরও সহজ হয়ে যাচ্ছে ডুয়ার্স, জলদাপাড়া ও গরুমারায় ভ্রমণ। জানা গিয়েছে এবার কলকাতা থেকে মাত্র ২ ঘণ্টার মধ্যেই পৌঁছে যাওয়া যাবে কোচবিহার। আপাতত বিমানটি ভুবনেশ্বর-জামশেদপুর-কলকাতা-কোচবিহার রুটে চলাচল করবে। তবে এই রুটে বিমান চলাচল লাভজনক হলে, বড় বিমান চলাচলও শুরু করবে। তারপরই ছোট রানওয়ে বাড়ানোর কাজ শেষ করা হবে। আপাতত মাস তিনেক এই ছোট বিমান চলবে। সপ্তাহে ৭ দিনই মিলবে এই বিমান পরিষেবা। আপাতত তিন মাসের জন্য ইন্ডিয়া ওয়ান এয়ার কোম্পানির কোচবিহার থেকে কলকাতা এবং কলকাতা থেকে কোচবিহার বিমানের ভাড়া থাকবে ৯৯৯ টাকা। পরে বিমানের ভাড়া বেড়ে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত করা হবে। ইন্ডিয়া ওয়ান এয়ার-এর ওয়েবসাইটে ক্লিক করলেই বুকিং করা যাবে।