প্রতিবেদন : সভ্যতার সংকট। বিশ্ব জুড়ে জলবায়ুর খামখেয়ালি চলনের জন্য দায়ী মানুষই। প্যারিসে ঢাকঢোল পিটিয়ে সম্মেলন হয়েছিল ২০১৫ সালে। বিশ্বের তাবড় দেশের নেতারা বসেছিলেন আলোচনায়। জলবায়ু পরিবর্তনের কুপ্রভাব থেকে কীভাবে পৃথিবীকে বাঁচানো যায়, কীভাবে শিল্পায়নের আগের পৃথিবীর নিরিখে আধুনিক বিশ্বে তাপমাত্রা বাড়ার গড় ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখা যায়— এসবই ছিল আলোচ্য বিষয়।
আরও পড়ুন-মালালার প্রতিবাদ
প্যারিস চুক্তি সইও হয়ে যায়। বিশ্বনেতারা আবহবিদদের সঙ্গে একমত হন যে, ২ ডিগ্রি তো কিছুতেই না, এমনকী ১.৫ ডিগ্রির তাপমান বৃদ্ধিই বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে। তাই সব দেশই এই লক্ষ্যে কাজ করবে, যাতে কার্বন ফুটপ্রিন্ট কমানো যায়। তাপমাত্রায় রাশ টানা যায়। লক্ষ্যমাত্রা ঠিক হয়, বছরে গড়ে ১.১ ডিগ্রি তাপমাত্রা বরদাস্ত করা যাবে। এর বেশি নয়। কিন্তু বিশ্ব জলবায়ু সংস্থা বা ওয়ার্ল্ড মেটিওরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশন তাদের সাম্প্রতিক রিপোর্টে বলেছে, প্যারিস চুক্তি ব্যর্থ হতে চলেছে। কারণ, আগামী পাঁচ বছরের মধ্যেই যে কোনও একবছর বিশ্বের গড় তাপমান বাড়বে ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি। এখনও পর্যন্ত ২০১৬ সালকে আধুনিক সভ্যতার ইতিহাসের উষ্ণতম বছর হিসেবে ধরা হয়। সেই রেকর্ড ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা ৯৩ শতাংশ।
আরও পড়ুন-মালালার প্রতিবাদ
গ্লোবাল ডেকাডেল টু অ্যানুয়াল ক্লাইমেট আপডেট শীর্ষক ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০২২ থেকে ২০২৬ সালের মধ্যে ১.৫ ডিগ্রির লক্ষ্মণরেখা টপকানোর সম্ভাবনা ৫০ শতাংশ। রিপোর্টের মূল প্রবক্তা আবহাওয়াবিদ লিও হারমেনসনের বক্তব্য, ছোট্ট সময়ের জন্য এই লক্ষ্মণরেখা টপকালে তেমন ভয় নেই। কিন্তু, এই তাপমাত্রার পরিবর্তন দীর্ঘমেয়াদি হলে অবিশ্বাস্য ক্ষতি হবে। ভেঙে পড়বে পরিবেশগত ভারসাম্য। বহু প্রজাতির জীবজন্তু অবলুপ্ত হয়ে যাবে। বিশ্ব জলবায়ু সংস্থার মহাসচিব পেত্তেরি তালাস জানিয়েছেন, আমরা পরিবেশে গ্রিনহাউস গ্যাস ছেড়েই যাচ্ছি। ফলে তাপমাত্রা বাড়বেই। মেরুপ্রদেশে বরফ গলবে। সমুদ্র হয়ে উঠবে অ্যাসিডিক। এর জেরেই লা নিনা প্রেসার প্যাটার্ন তৈরি হওয়া জারি থাকবে। ঠিক এই কারণেই ভারতে এমন ভয়ঙ্কর তাপপ্রবাহ চলছে। এখনই সচেতন না হলে ভবিষ্যৎ হতে চলেছে মারাত্মক।