ঈর্ষা, পরশ্রীকাতরতা এবং প্রতিহিংসার রাজনীতির চরম উদাহরণ তৈরি করল কেন্দ্রীয় সরকার৷ রোমে বিশ্ব শান্তির বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে যাওয়ার অনুমতি দিল না বিদেশমন্ত্রক৷ কারণ হিসেবে বলা হল, এই অনুষ্ঠান মুখ্যমন্ত্রী পদের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়৷ যা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে প্রবল সমালোচনার মুখে দিল্লির সরকার৷
রোমে শান্তি সম্মেলন
ইতালির একটি সংগঠনের তরফে ৬ ও ৭ অক্টোবর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল৷ আন্তর্জাতিক স্তরে দু’দিনের এই শান্তি সম্মেলনে রোমে যাওয়ার ব্যাপারে অনেক আগেই কথা দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী৷ ভবানীপুরের উপনির্বাচনের ফল বের হবে ৩ অক্টোবর৷ তার পরেই পুজোর আগে রোম যাত্রার কথা ছিল৷ কিন্তু শনিবার নবান্নে চিঠি পাঠিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার তাঁকে অনুমতি দিল না৷ ওই সম্মেলনে জার্মানির চ্যান্সেলর, কায়রোর গ্রেট ইমাম এবং খ্রিস্টান অর্থোডক্স চার্চের প্রধানও থাকবেন৷ আন্তর্জাতিক রাজ্য ছাড়িয়ে দেশ, দেশ ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পৌঁছনো কোনও একটি অঙ্গরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে বিরাট বিষয়৷
এই নিয়ে তিনবার
বেজিং, শিকাগো এবং রোম৷ পরপর তিনবার বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক আমন্ত্রণে বাধা দিল কেন্দ্রীয় সরকার৷ কেন? কীসের জন্য? কোন কারণে? প্রশ্ন এখানেই৷ যে অনুষ্ঠানে দুটি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান থাকছেন, ধর্মগুরুরা থাকছেন, সেখানে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ তো দেশের গর্বের বিষয়৷ তা হলে? আসলে প্রতিহিংসার রাজনীতি, স্বার্থের রাজনীতি৷ দেশে মোদি বিরোধী মুখ এখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ রোম যাত্রা নিশ্চিতভাবে তাঁর মুকুটে আরও পালক যুক্ত করত৷ সেখান থেকেই বোধহয় ঈর্ষার রাজনীতি শুরু৷ তাই পরপর তৃতীয় বাধা।
আরও পড়ুন: দিল্লি দখল করতে দিদির হাত শক্ত করুন, দিল্লিতে চাই দিদিকেই : দেব
বিস্ফোরক মুখ্যমন্ত্রী
শনিবার জোড়া নির্বাচনী সভায় কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ বলেছেন, দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে ইতালি আমন্ত্রণ জানিয়েছিল৷ চক্রান্ত করে যেতে দিল না৷ কোভ্যাকসিন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী আমেরিকা যেতে পারেন, আমার ক্ষেত্রে বাধা কেন? কী কারণ? কোন যুক্তিতে? কোভ্যাকসিন এখনও হু–র অনুমোদনপ্রাপ্ত নয়৷ তাহলে নরেন্দ্র মোদি কীভাবে যান? এভাবে আমাদের আটকে রাখতে পারবে না৷ হিন্দু মহিলাকে বিশ্বশান্তি সম্মেলেন যেতে দিল না। এই তোমাদের হিন্দুত্ব? খেলা হবে৷ গোয়া থেকে উত্তরপ্রদেশ, ত্রিপুরা থেকে অসম, দিল্লিতেও খেলা হবে৷
কেন্দ্র যেন সেলফিস জায়ান্ট
রাজ্য–রাজনীতিতে বারবার বিজেপি হেরে যাচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে৷ মোদি–শাহরা ডেলি প্যাসেঞ্জারি করেও বাংলায় দাঁত ফোটাতে পারেননি৷ এবারও ভরাডুবি হবে৷ বিলক্ষণ জানেন দিল্লির নেতারা৷ তাই পরশ্রীকাতরতা৷ বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর কাছে রাজনৈতিক লড়াইয়ে হেরে প্রতিহিংসা চরিচার্থ করতে নেমেছে৷ অনেকটা হিংসুটে দৈত্যের মতো৷ নেত্রী তাই বলেছেন, মৃতদেহের ওপর নাচলে মানবাধিকার কমিশন দেখতে পায় না। কিন্তু দেশের মানুষ দেখছেন। ভবানীপুর থেকে জবাব শুরু হবে।