একুশে জুলাইয়ের আগে তৃণমূলপন্থী দুই অধ্যাপক সংগঠনকে এক ছাতারতলায় নিয়ে এলেন অধ্যাপক তথা রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। উদ্দেশ্য, রাজ্যজুড়ে অধ্যাপক সংগঠনকে ঢেলে সাজানো ও প্রসার-বিস্তার। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূল কংগ্রেসের ভাবাদর্শ সকলস্তরের অধ্যাপক-অধ্যাপিকাদের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া। সরকারি ও সরকার অনুমোদিত দুই সংস্থা ABSGCTA এবং WBCUPA, এই দুই অধ্যাপক সংগঠন এখন থেকে নিজেদের স্বতন্ত্রতা বজায় রেখেই একসঙ্গে কাজ করবে বলে জানালেন ব্রাত্য বসু।
২০১২ সালে WBCUPA প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর থেকে এই সংগঠন সক্রিয়ভাবে রাস্তায় নেমে, সামাজিক মাধ্যমে, বিভিন্ন সময় সাংবাদিক সম্মেলন করে তৃণমূল দল ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের সমর্থনে সরব হয়েছে। রাজ্যের কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে সদস্য সংগ্রহের পাশাপাশি দলীয় কর্মসূচিতে যোগদান ও সেগুলির রূপায়নের মাধ্যমে নিজেদের অবস্থান সুনির্দিষ্ট করেছে।
অন্যদিকে, ABSGCTA রাজ্যের সরকারি কলেজগুলির তৃণমূলপন্থী সংগঠন বলে নিজেদের দাবি করে। এখন থেকে এই সংগঠনও WBCUPA-এর মতো তৃণমূল পার্টি ও রাজ্য সরকারের প্রচারে সক্রিয়ভাবে দেখা যাবে বলে জানান হয়।
আরও পড়ুন: সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ-এর ৬ বছর পূর্তি: কী বার্তা দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক?
এদিন তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠকে ২১ জুলাইয়ের মাহাত্ম তুলে ধরে ব্রাত্য বসু জানান, “এই মুহূর্তে অধ্যাপক সংগঠনগুলির সামনে সবচেয়ে বড় কর্মসূচি ২১ জুলাই। এই কর্মসূচির সার্থক রূপায়নে দুই সংগঠনকে পারস্পরিক বোঝাপড়ার মাধ্যমে এগিয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে।”
এছাড়াও সরকারি কলেজ, সরকার সাহায্য প্রাপ্ত কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শে অনুপ্রাণিত প্রতিটি অধ্যাপক ও শিক্ষককে বিভেদকামী, সাম্প্রদায়িক, গণতন্ত্রের হানিকারক শক্তির বিরুদ্ধে সার্বিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের ছাতার নিচে সংগঠিত হওয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে।
ব্রাত্য বসু আরও জানান, প্রত্যেক শুক্রবার তিনি তৃণমূল ভবনে থাকেন। যেখানে ছাত্র সংগঠন, স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা, অশিক্ষক কর্মীদের সঙ্গে সংগঠন নিয়ে বৈঠক করেন। এখন অধ্যাপক-অধ্যাপিকাদের সঙ্গেও শুক্রবার করে বৈঠক করবেন তিনি। একুশে জুলাইয়ের মঞ্চেও যাতে কিছু সংখ্যক অধ্যাপক-অধ্যাপিকা যেতে পারেন তা নিয়েও তিনি দলনেত্রীর কাছে আবেদন করবেন। কারণ, তৃণমূল কংগ্রেস মনে করে অধ্যাপক, শিক্ষকরা জাতির সম্পদ। তৃণমূল তাঁদের সর্বদা গুরুত্ব দেয়। এছাড়াও আগামিদিনে অধ্যাপক সংগঠন প্রশাসনের চোখ হিসেবে কাজ করবে। কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়-সহ শিক্ষাঙ্গনে কোনও সমস্যা, চাহিদা থাকলে তাঁরা দৃষ্টি আকর্ষণ করবে সরকারের।
এদিন তৃণমূল ভবনে এই সাংবাদিক বৈঠকের আহবায়ক ছিলেন প্রাক্তন অধ্যাপক তথা ABSGCTA-এর উপদেষ্টা সদস্য শিবরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়। যিনি এই দুই তৃণমূলপন্থী অধ্যাপক সংগঠনের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। দুই সংগঠনকে এক ছাতারতলায় নিয়ে আসার জন্য এদিন শিবরঞ্জনবাবু ধন্যবাদ জানিয়েছেন ব্রাত্য বসুকে। এছাড়াও ABSGCTA-এর তরফে ছিলেন অধ্যাপক স্বপন সরকার।
WBCUPA-এর পক্ষ থেকে সংগঠনের সভানেত্রী কৃষ্ণকলি বসুও ব্রাত্য বসুর প্রশংসা করেন। কারণ, ব্রাত্য বসুর জন্যই গত কয়েক বছরে তৃণমূলপন্থী অধ্যাপক সংগঠন রাজ্যজুড়ে ব্যাপক বিস্তার লাভ করেছে। এদিন সাংবাদিক বৈঠকে WBCUPA-এর পক্ষ কৃষ্ণকলি বসু ছাড়াও ছিলেন নর্থবেঙ্গল ইউনিভার্সিটির তরফে অধ্যাপক রথীন বন্দ্যোপাধ্যায়।