দেশে প্রতিবছর পথ দুর্ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু কেন বাড়ছে কেন্দ্রের কাছে তার জবাব চাইলেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ অভিষেক সড়ক পরিবহণ মন্ত্রী নীতীন গড়করির কাছে লিখিত প্রশ্নের মাধ্যমে জানতে চান, পথ দুর্ঘটনা কমাতে সরকার কি কোনও ব্যবস্থা নিয়েছে? সড়ক নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করে তোলার জন্য কী পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে? পথ নিরাপত্তা বৃদ্ধি করতে এবং এই বিষয়ে মানুষকে সচেতন করে তুলতে কি কোনও প্রচার কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে?
আরও পড়ুন-মহারাজ প্রদ্যোত কিশোরের সঙ্গে বৈঠক: সৌজন্যসাক্ষাৎ, বললেন কুণাল
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশ্নের জবাবে কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহন মন্ত্রী নীতীন গড়করি বলেন, দুর্ঘটনা কমিয়ে আনতে এবং পথ নিরাপত্তা বৃদ্ধি করতে সরকার একাধিক ব্যবস্থা নিয়েছে। শিক্ষা, ইঞ্জিনিয়ারিং এনফোর্সমেন্ট এবং এমারজেন্সির মত বেশ কয়েকটি পৃথক জিনিসের উপর ভিত্তি করে এই নিরাপত্তা বৃদ্ধির চেষ্টা চলছে। মন্ত্রী জানিয়েছেন, বিভিন্ন বৈদ্যুতিন মাধ্যমে পথ নিরাপত্তার বিষয়ে প্রচার চালানো হচ্ছে। একই সঙ্গে চলছে মানুষকে সচেতন করে তোলার কাজ। সংবাদপত্র এবং বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকেও এই কাজে লাগানো হয়েছে। জাতীয় সড়কগুলিতে দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকাগুলিকে চিহ্নিত করা হচ্ছে। দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকাগুলিতে যাতে দুর্ঘটনার সংখ্যা কমিয়ে আনা যায় সেজন্য স্থানীয় প্রশাসনিক কর্তাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও জাতীয় সড়কগুলিতে পথচারী এবং বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তিরা যাতে নিরাপদে চলাচল করতে পারেন তার জন্য পৃথক ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা চলছে।
পাশাপাশি রাস্তায় চলা যানবাহনগুলিকে আইনি মেনে চলার কথা বলা হয়েছে। বেঁধে দেওয়া হচ্ছে গাড়ির সর্বোচ্চ গতিবেগ। পথ নিরাপত্তা বাড়াতে পাশ করা হয়েছে মোটর ভেহিকেল সংশোধনী আইন ২০১৯। এই আইন অনুযায়ী, পথ নিরাপত্তা সংক্রান্ত নিয়ম ভাঙলে মোটা অঙ্কের জরিমানা আদায়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। নতুন আইনে যে সমস্ত যানচালক যথাযথ নিয়ম মেনে পথ চলবেন তাঁদের পুরস্কৃত করা এবং যারা নিয়ম ভাঙবেন তাঁদের শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন-পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রীর প্রধান উপদেষ্টার পদ থেকে পদত্যাগ করলেন পিকে
গড়করি আরও জানিয়েছেন, পথ নিরাপত্তায় জখম ব্যক্তিদের নগদহীন চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। জখম ব্যক্তিদের চিকিৎসার জন্য প্রতিটি টোলপ্লাজায় অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করেছে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। এখনও পর্যন্ত ২৯৭টি অ্যাম্বুলেন্সকে অত্যাধুনিক করে তোলা হয়েছে। ওইসব অ্যাম্বুলেন্সে রয়েছে সব ধরনের জীবনদায়ী ব্যবস্থা। পথ নিরাপত্তা সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করে তুলতে ২০২০-২১ অর্থবর্ষে সরকার ৪০.৯৯ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। এছাড়াও পথ নিরাপত্তা সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করে তুলতে একটি সংসদীয় কমিটিও তৈরি করা হয়েছে। গত সপ্তাহে দিল্লি এসেছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দিল্লি এসে মুখ্যমন্ত্রী দেখা করেছিলেন গড়করির সঙ্গে। বাংলার রাস্তার উন্নয়ন নিয়ে গড়করিকে একাধিক দাবিও জানিয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো।