প্রতিবেদন : বাংলায় এসেই সিএএ নিয়ে হুঙ্কার ছেড়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। যদিও সঙ্গে সঙ্গেই তার তীব্র বিরোধিতা করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, এসব তামাদি আইন দেখিয়ে লাভ নেই। যাঁদের ভোটে জিতে বিজেপি কেন্দ্রে সরকার গঠন করল, নেতারা মন্ত্রী হলেন, তাঁদের ফের নাগরিকত্ব আইনের নামে হেনস্তা করা যাবে না। তৃণমূলনেত্রীর কথায়, এঁরা সবাই নাগরিক বলেই তো ভোট দেন! বিজেপি সাম্প্রদায়িক রাজনীতি আর বিভাজনের স্বার্থে মাঝে মাঝে সিএএ নিয়ে মিথ্যাচার করে।
আরও পড়ুন-ইতিহাস বিকৃতির চেষ্টা সংঘের
ঘটনা হল, শুধু তৃণমূল কংগ্রেস বা অন্য বিরোধী দলই নয়, সিএএ নিয়ে একইরকম উষ্মা ও বিরোধিতা এবার এল বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের কাছ থেকেও। যে নীতীশের দল জেডিইউ হল বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ-র গুরুত্বপূর্ণ শরিক। বিজেপির শরিক হয়েও নীতীশ কুমার বুঝিয়ে দিয়েছেন, সিএএ ইস্যুতে তিনি অমিত শাহদের উল্টো মেরুতে। খোদ শরিক নেতার প্রকাশ্য বিরোধিতার পর চূড়ান্ত অস্বস্তিতে গেরুয়া শিবির।
আরও পড়ুন-পুনর্বিন্যাস চূড়ান্ত
এমনিতেই নীতীশ সচরাচর বিজেপির সব কথায় চোখ বুজে সায় দেন না। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন এবং জাতীয় নাগরিকপঞ্জি নিয়ে তিনি আগেও বিজেপি বিরোধী অবস্থান নিয়েছেন। নীতীশ যে তাঁর অবস্থান বদল করেননি আরও একবার তার প্রমাণ মিলল। বৃহস্পতিবার পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়ির জনসভা থেকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ হুমকি দিয়েছিলেন, করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন চালু হবে। অমিত শাহর ওই হুমকির কয়েক ঘণ্টা পরেই সিএএ নিয়ে নিজের বক্তব্য স্পষ্ট করলেন নীতীশ। এবং তা বিজেপির একেবারে বিপরীত। শুক্রবার জেডিইউ নেতা ও বিহারের মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট বুঝিয়ে দেন, এখন সিএএ নিয়ে কথা বলা অর্থহীন।
আরও পড়ুন-বাচিকশিল্পী পার্থ ঘোষের প্রয়াণে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শোকবার্তা
তাঁর কথায়, করোনার সংক্রমণ ফের বাড়ছে। এখনও দেশের সব মানুষকে টিকা দিয়ে উঠতে পারেনি সরকার। এই মারণ ভাইরাসের হাত থেকে কীভাবে সাধারণ মানুষকে রক্ষা করা যাবে সেটাই এখন সবার আগে চিন্তাভাবনা করা দরকার। মানুষ বেঁচে থাকলে তবেই তো নাগরিকত্ব আইন! মানুষই যদি বেঁচে না থাকে তাহলে কোন আইন কার জন্য করা হবে? নীতীশ কুমার আরও বলেন, করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে যখন আইন কার্যকরের প্রশ্ন উঠবে তখনই তাঁর দল এই বিষয়ে অবস্থান স্পষ্ট করবে। এখন অযথা সিএএ, জাতীয় নাগরিকপঞ্জির মতো বিষয় নিয়ে হইচই করে কোনও লাভ নেই। এসব করে আসলে বিভিন্ন সমস্যা থেকে মানুষের দৃষ্টি ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। সবার আগে ভাবতে হবে, কী করে মানুষকে করোনার হাত থেকে রক্ষা করা যায়। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, নীতীশ কুমার তাঁর বক্তব্যের মধ্য দিয়ে সরাসরি নাম করে অমিত শাহকে কটাক্ষ করেছেন। তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন সিএএ নিয়ে বিজেপি মানুষকে ভাঁওতা দিয়ে চলেছে। ভুল বোঝাচ্ছে। এই ইস্যুতে বিজেপির পাশে তিনি নেই।