প্রতিবেদন : শুধু ধর্মের জিগির তুলে আর ঢেকে রাখা যাচ্ছে না আমজনতার দৈনন্দিন দুর্ভোগ ও অপ্রাপ্তি। লোকসভা ভোটের প্রচারে রামমন্দিরের সাফল্য তুলে ধরে তা ইস্যু করতে চেয়েছিল বিজেপি। সেই কারণে অসম্পূর্ণ মন্দিরেই হয়েছে বিগ্রহ স্থাপন। এই কাজ যে শাস্ত্রবিরোধী তা বলছেন স্বয়ং দেশের শঙ্করাচার্যরাও। কিন্তু এত করেও শুধু রামের আবেগে চাপা দেওয়া যাচ্ছে না দেশের বেকারত্ব, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির মতো পরিস্থিতি। সিএসডিএস-লোকনীতি নামে একটি গবেষণাধর্মী সমীক্ষা সংস্থার রিপোর্টে উঠে এসেছে এই ছবি।
সামনের সপ্তাহ থেকেই শুরু হয়ে যাবে লোকসভা নির্বাচন।
আরও পড়ুন-ওঁর মতো অভদ্র নই, নাম না করে দিলীপকে নিশানা কীর্তির
সব রাজনৈতিক দলেরই প্রচার তুঙ্গে। কোন ইস্যুকে প্রচারে সামনে আনছে রাজনৈতিক দলগুলি? ভোটাররাই বা কী কী বিষয়কে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন? এইসব জানতে সমীক্ষা চালায় সিএসডিএস-লোকনীতি। তাতেই যে তথ্য সামনে এসেছে, তা দেখে ঘুম উড়েছে গেরুয়া শিবিরের। কারণ, ঢাক-ঢোল পিটিয়ে উদ্বোধন হওয়া রামমন্দির যে বেকারত্ব-দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির জ্বলন্ত ইস্যুগুলিকে ঢাকতে পারছে না, তা স্পষ্ট। ভোটের বাজারে শীর্ষে রয়েছে কর্মসংস্থানের সমস্যা। এরপরেই রয়েছে লাগাতার দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি। রামমন্দির উদ্বোধনকে সামনে রেখে ভোট বৈতরণী পার করতে চেয়েছিল বিজেপি। কিন্তু মোদি সরকারের আমলেই দেশে বেকারত্ব সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছেছে। এর প্রত্যক্ষ ভুক্তভোগী দেশের যুবসমাজ। সমীক্ষা অনুযায়ী, প্রায় তিন-পঞ্চমাংশ ভোটার মনে করেন, ৫ বছর আগের তুলনায় এখন একটি চাকরি জোগাড় করা খুবই কঠিন। মাত্র ১২ শতাংশ সহজে চাকরি জোগাড় করতে পেরেছেন। ২০১৯-এর পর থেকেই দেশে বেকারি ও মূল্যবৃদ্ধি চরম আকার নিয়েছে বলে মত গ্রামীণ ভোটারদের। ৩২ শতাংশ মানুষ বিশ্বাস করেন উন্নয়নে লাভবান হয়েছেন ধনীরা।
আরও পড়ুন-মুখ্যমন্ত্রীর মাস্টার ব্লাস্টার প্রকল্পে কাঁপছে বিরোধীরা
সমীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী, এবারের ভোটে বেকারত্ব, জিনিসের আকাশছোঁয়া দাম, উন্নয়ন এইগুলির ভিত্তিতেই নিজেদের ভোটাধিকার প্রদান করবেন আমজনতা। এর জেরে বেকারি থেকে মূল্যবৃদ্ধিই বিজেপির মাথাব্যথার কারণ হবে। জনগণ রামমন্দির নয়, কর্মসংস্থানকে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে। অন্যদিকে উঠে এসেছে, মাত্র ৮ শতাংশ ভোটার দুর্নীতি এবং রামমন্দিরকে বড় ইস্যু বলে মনে করছেন। পাশাপাশি কৃষক আন্দোলনও সাধারণ ভোটারদের মধ্যে প্রভাব ফেলেছে। কৃষকদের ন্যূনতম সহায়ক মূল্যর দাবিকে সমর্থন করেছেন ৬৩ শতাংশ ভোটার। সব মিলিয়ে এই সমীক্ষার রিপোর্টে চাপে নরেন্দ্র মোদি সরকার।