তুহিন সাজ্জাদ শেখ: বিজ্ঞানের খোঁজের শেষ নেই— বিজ্ঞানীরা নিরন্তর অনুসন্ধান করেই চলেছেন; সেই হেতু সন্ধান পাওয়া গেল পৃথিবীর মধ্যে দীর্ঘতম উদ্ভিদের। পশ্চিমি অস্ট্রেলিয়ার গ্যাসকয়েন এলাকার উপত্যকা অঞ্চলের ‘শার্ক বে’ নামক একটি বিশ্ব পর্যটন কেন্দ্রে এই আশ্চর্য উদ্ভিদটির দেখা পাওয়া গিয়েছে। আসলে এটি একপ্রকার গুল্মজাতীয় সামুদ্রিক ঘাস, যার বিজ্ঞানসম্মত নাম ‘পসিডোনিয়া অস্ট্রালিস’ (Posidonia Australis) ।
পশ্চিমি অস্ট্রেলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও ফ্লিন্ডার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক মিলিতভাবে শার্ক বে অঞ্চলের বিস্তৃত তৃণভূমি খতিয়ে দেখতেই এই আশ্চর্য উদ্ভিদটির সন্ধান মেলে। ‘দ্য প্রসেডিং অফ দ্য রয়েল সোসাইটি বি’ নামে জার্নালে ওঁদের পর্যবেক্ষণ গবেষণা পত্রাকারে প্রকাশিত হলে জানা যায় ওই বিস্তৃত তৃণভূমি আসলে একটি মাত্র উদ্ভিদ থেকেই সৃষ্টি হয়েছে। এই তৃণভূমির বিস্তার প্রায় ২০০০০ হেক্টর জমি জুড়ে, যা লম্বায় প্রায় ১৮০ কিলোমিটার। গবেষণায় এও জানা গিয়েছে যে এই উদ্ভিদটি (Posidonia Australis) প্রায় সাড়ে চার হাজার বছরের পুরনো, সেই হরপ্পা যুগের।
আরও পড়ুন: মৃতকোষ পুনরায় বেঁচে উঠবে
আন্তঃবিস্তৃত এই তৃণজাতীয় উদ্ভিদটির খোঁজ পাওয়ার আগে পর্যন্ত পৃথিবীর দীর্ঘতম উদ্ভিদ হিসেবে পরিচিত ছিল ‘পান্ডো’ । পান্ডো-ও এক জীবন্ত বিস্ময় বৃক্ষ। পৃথিবীর মধ্যে প্রাচীনতম পপলার-বৃক্ষের প্রজাতি এই উদ্ভিদ। আসলে এটিও একটিই গাছ — একটি বীজ থেকেই জন্ম; তারপর অজস্র গুঁড়ি তৈরি হয়ে বহু সংখ্যক শাখা-বৃক্ষের জন্ম হয়েছে। একটি গাছ হলেও দেখতে মনে হয় যেন একটি বিরাট জঙ্গল।
মধ্য উটা’র অন্তর্ভুক্ত ফিশলেক জাতীয় অরণ্যের মধ্যে অবস্থিত এই বিস্ময় বৃক্ষের জন্ম প্রায় বরফ যুগের শেষের দিকে। এই গাছটি চল্লিশ হাজারেরও বেশি শাখা-বৃক্ষের সঙ্গে প্রায় ৪৩.৬ হেক্টর জায়গা জুড়ে বিস্তৃত। বিষয়টি ১৯৭০ সালে সকলের নজরে আসে। বর্তমানে তাহলে এটি দ্বিতীয় দীর্ঘতম উদ্ভিদ। এছাড়াও পশ্চিমবঙ্গের হাওড়া বোটানিক্যাল গার্ডেনের ১.৪১ হেক্টর জায়গা জুড়ে অবস্থিত ভারতের দীর্ঘতম অশ্বত্থ গাছটিও সকলের নজর কাড়ে!