প্রতিবেদন : পাহাড় থেকে সমুদ্র— কিছুরই অভাব নেই এই বাংলায়। আছে ছবির মতো নদীও, যা নিমেষের মধ্যে আপন করে নিতে পারে দেশ-বিদেশের ভ্রমণপিপাসুদের। তাই গোয়া, রাজস্থান কিংবা ওড়িশার সঙ্গে পাল্লা দেওয়াটা অসম্ভব নয় মোটেই। প্রকৃতির এই আমন্ত্রণে সাড়া দিতেই বাংলাকে পর্যটন-কেন্দ্রিক রাজ্য হিসেবে গড়ে তোলা এখন নবান্নের অগ্রাধিকার তালিকার প্রথমদিকেই। এই লক্ষ্যেই সামনের উৎসব-মরশুমকে নিপুণভাবে ব্যবহার করতে চায় রাজ্য।
প্রকৃতির হাতছানিকে মানুষের হৃদয়ে পৌঁছে দিতে মহানগরীর সবচেয়ে আকর্ষণীয় পুজোগুলোকে ব্র্যান্ড হিসেবে ব্যবহার করার উদ্যোগ নিয়েছে পর্যটন দফতর। বিভিন্ন মণ্ডপে থ্রিডি পিলার লাগিয়ে রাজ্যের পর্যটন মানচিত্রে বিশেষ বিশেষ জায়গাগুলো তুলে ধরার পরিকল্পনা নিয়েছে রাজ্য। থাকবে এল আকৃতির গেট এবং অবশ্যই তথ্যসমৃদ্ধ হোর্ডিংও। রাজ্যের পর্যটন নিয়ে বিস্তারিত তথ্য পরিবেশনের জন্য সমস্ত বড় পুজোমণ্ডপের কাছাকাছি কিয়স্ক বসানোরও পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। পরিকল্পনার রূপরেখা তৈরির জন্য পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে পর্যটন-বিশেষজ্ঞ এবং ট্যুর-অপারেটরদেরও। সৌন্দর্য-পিপাসুদের নানা প্রশ্নের জবাব দিয়ে কৌতূহল মেটাতে মণ্ডপে উপস্থিত থাকতে পারেন প্রশিক্ষিত গাইডরাও। পুজো কমিটিগুলোর জন্য বিশেষ পুরস্কার এবং ট্রফি দেওয়ার বিষয়টিও প্রাধান্য পাচ্ছে পরিকল্পনায়।
আরও পড়ুন-ভাঙনরোধে অসহযোগিতা কেন্দ্রের
ইউনেস্কোর স্বীকৃতির দৌলতে এবারে বিশেষ মাত্রা পেয়েছে দুর্গাপুজো। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে এবারে একমাস আগেই সূচনা হয়েছে উৎসবের। ১ সেপ্টেম্বর ইউনেস্কোকে ধন্যবাদ শোভাযাত্রা নজর কেড়েছে দেশবিদেশের মানুষের। ভিনরাজ্য এবং ভিনদেশের মানুষ এবারে অনেক বেশি সংখ্যায় আসার সম্ভাবনা কলকাতার পুজো দেখতে। বাংলার অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির লক্ষ্যে দুর্গাপুজোর এই বিশ্বায়নের উদ্যোগকেই এবারে বাংলার পর্যটনের সঙ্গে যুক্ত করতে চায় রাজ্য।
আরও পড়ুন-খুলছে তিন চা-বাগান
লক্ষ্যণীয়, রাজ্যের বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্রের উন্নয়ন এবং বিকাশের পাশাপাশি নতুন নতুন পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তুলতেও বিশেষ উৎসাহী রাজ্য। নতুন জায়গা খুঁজে বের করে সেগুলির সম্ভাবনা নিয়ে দ্রুত রিপোর্ট পেশ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জেলাশাসকদের। গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে ‘থিম টুরিজম’-এর উপর। ইকো টুরিজম, হেরিটেজ ট্যুরিজম, রুরাল ট্যুরিজম, ওয়েলনেস ট্যুরিজম, বিচ ট্যুরিজম এবং কনফারেন্স বা মিটিং ট্যুরিজমও বিশেষ গুরুত্বের তালিকায়। জোর দেওয়া হচ্ছে স্থানীয় মানুষের কর্মসংস্থানের সম্ভাবনাকেও। এইসব পরিকল্পনারই প্রতিফলন ঘটতে চলেছে পুজোর আনন্দোৎসবে।