প্রতিবেদন : রাজ্যে অ্যাডিনো ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা নিম্নমুখী। তবে প্রস্তুতিতে কোনও ফাঁক রাখছে না রাজ্য সরকার। বরং রোগ মোকাবিলায় পরিকাঠামোকে আরও মজবুত করে তুলতে গঠন করা হয়েছে উচ্চপর্যায়ের টাস্ক ফোর্স।
মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী শনিবার নবান্নে শিশুদের মধ্যে শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া ও অ্যাডিনো সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেন। পরে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, আগে যেখানে এই রোগে প্রতিদিন আক্রান্তের সংখ্যা ৮০০ থেকে ৯০০-র মধ্যে থাকছিল এখন তা দৈনিক ৫০০ থেকে ৬০০-র মধ্যে থাকছে। মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে ৮ সদস্যের টাস্ক ফোর্সের সদস্যরা হলেন মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়, স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম, নারী শিশু ও সমাজকল্যাণ দফতরের সচিব সংঘমিত্রা ঘোষ, স্বাস্থ্য দফতরের ডিএমই, ডিএইচএস, ডাঃ সুকুমার মুখোপাধ্যায় এবং ডাঃ গোপালকৃষ্ণ ঢালি। এই টাক্স ফোর্স প্রতিদিন সন্ধ্যাবেলা রাজ্যে অ্যাডিনো ভাইরাস এবং ইনফ্লুয়েঞ্জা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবে।
আরও পড়ুন-গর্ভসম্পাত
মুখ্যসচিব এদিন বলেন, এখনও পর্যন্ত অ্যাডিনো ভাইরাস আক্রান্ত হয়ে ১৯টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে ১৩ জন শিশুর কোমর্বিডিটি ছিল। যদিও তাঁর কথায়, একটি শিশুর মৃত্যুও দুর্ভাগ্যজনক। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে শিশুমৃত্যু কমাতে আরও একটি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আশাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি পর্যবেক্ষণে পাঠানো হচ্ছে, কোনও বাড়িতে কোনও শিশু একদিন জ্বরে আক্রান্ত হয়েছে শুনলেই তাদের সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আর জেলা থেকে কলকাতায় রেফার করার সংখ্যাও কমানো হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে ২৪ ঘণ্টার হেল্পলাইন, টেলিমেডিসিন এবং গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে জেলা হাসপাতালে এই রোগের চিকিৎসাগত সমস্ত পরিকাঠামো তৈরি করে দেওয়া হয়েছে এবং তা ইতিমধ্যে কাজ করতে শুরু করেছে বলে মুখ্যসচিব জানালেন। যার ফলে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজগুলিতে অ্যাডিনো আক্রান্তের সংখ্যা কমতে শুরু করেছে। স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সংশ্লিষ্ট সব কর্মীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে। বি সি রায় সহ বিভিন্ন শিশু হাসপাতালে প্রিন্সিপাল থেকে শুরু করে সব চিকিৎসক ২৪ ঘণ্টা ধরে শিশুদের চিকিৎসা করে চলেছেন।
আরও পড়ুন-ভক্তি আন্দোলনের দুই যুগপুরুষ
এরাজ্যে এই ভাইরাস পরীক্ষা অনেক বেশি করানো হচ্ছে বলে আক্রান্তের সংখ্যাও বেশি হচ্ছে। তার মানে এই নয় যে এরাজ্যে অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় আক্রান্ত বেশি হচ্ছে। মুখ্যসচিব আরও বলেন, এই ভাইরাস নতুন কিছু না। প্রতি বছরই একটা সময় এর প্রকোপ মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। তবে বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে ৫ বছরের নিচে শিশুদের ক্ষেত্রে এই ভাইরাস প্রাণঘাতী হয়ে যেতে পারে। অন্যদিকে দেশজুড়ে ইনফ্লুয়েঞ্জার প্রকোপ বাড়ছে। বয়স্কদের জন্য প্রাণঘাতী হতে পারে এই রোগ। তাই টাস্ক ফোর্সকে পরিস্থিতির ওপর নজরদারি রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।