ভক্তি আন্দোলনের দুই যুগপুরুষ

‘ভজ’ ধাতু সঞ্জাত শব্দ ‘ভক্তি’। তাই ভক্তি আন্দোলনের মূল কথা হল ভজনা করা। নিরন্তর প্রভুর ভজন, এই হল ভক্তের যাপন।

Must read

দেবু পণ্ডিত: ‘ভজ’ ধাতু সঞ্জাত শব্দ ‘ভক্তি’। তাই ভক্তি আন্দোলনের মূল কথা হল ভজনা করা। নিরন্তর প্রভুর ভজন, এই হল ভক্তের যাপন। সেই যাপন অনুশীলনে দুই পথিকৃৎ শ্রীচৈতন্য ও কবীর। একজন ‘আলোর মানুষ’, অপরজন ‘প্রেম পেয়ালা’। এই দুটি গভীর নামেই দু’জনকে চিহ্নিত করেছেন এযুগের দুই প্রথিতযশা সাহিত্যসেবী, যথাক্রমে ত্রিদিবকুমার চট্টোপাধ্যায় এবং সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়।

আরও পড়ুন-ভূমিকম্পের ভূত-ভবিষ্যৎ

মধ্যযুগীয় রাঢ় বঙ্গভূমির ঐতিহাসিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় প্রেক্ষাপটে শ্রীচৈতন্যের আবির্ভাব বাংলার ইতিহাসে এক যুগান্তকারী অধ্যায়। বাংলা তথা ভারতের নবজাগরণের ক্ষেত্রে নদের নিমাইয়ের গুরুত্ব ও প্রভাব ছিল অপরিসীম। একদিকে মুসলমান শাসন, অন্যদিকে ক্ষয়িষ্ণু হিন্দু সমাজের জাতপাত প্রথার প্রবল বাধ্যবাধকতা— এই দুইয়ের চাপে যখন বাংলার সামাজিক-সাংস্কৃতিক-ধর্মীয় বিপন্নতার প্রহর রচিত হয়েছে, তখনই বিশ্বম্ভর তথা শ্রীচৈতন্যের আবির্ভাব বাংলার সমাজ ও বাঙালির সাংস্কৃতিক চেতনায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন সূচিত করে। শ্রীচৈতন্য ব্রাহ্মণ থেকে শুরু করে নিম্নবর্ণের মানুষদের এক পঙক্তিতে এনে দাঁড় করিয়েছিলেন। এ ছিল এক সমাজবিপ্লব। তাবৎ সঙ্কীর্ণতার ঊর্ধ্বে উঠে যেভাবে তিনি অস্পৃশ্যতা বর্জনের ডাক দিয়েছিলেন, তা সেকালের পক্ষে ছিল রীতিমতো বৈপ্লবিক।

আরও পড়ুন-আর্থিক মন্দার কারণে দেউলিয়া, বন্ধ হল আমেরিকার সিলিকন ভ্যালি ব্যাঙ্ক

শ্রীচৈতন্যের মানবতাবাদ নিঃসন্দেহে ধর্মীয় মানবতাবাদ, কিন্তু তার ধারা বেয়ে উনিশ শতকের বাংলায় নবজাগরণ ও মানবতাবাদ বিকশিত হয়েছিল, এ-বিষয়েও কোনও সন্দেহের অবকাশ নেই।
ইতিহাসের এই সত্যটি উপন্যাসের আকারে পরিবেশিত হয়েছে ‘আলোর মানুষ’-এর পাতায়। কাহিনির সূত্রপাত চৈতন্যর পিতৃদেব জগন্নাথ মিশ্রের শ্রীহট্ট থেকে নবদ্বীপে আগমন-পর্ব দিয়ে। যবন-শাসিত নবদ্বীপে কেন তুর্কি-শাসিত শ্রীহট্ট থেকে চলে এসেছিলেন জগন্নাথ, সে-কথার ব্যাখ্যা এই উপন্যাসে পরিবেশিত হয়েছে অলৌকিক আশ্রয়ে।
দেবী কালিকা রণচণ্ডী মূর্তিতে দেখা দিয়েছেন নবদ্বীপের শাসক ফতেহ্ শাহর স্বপ্নে। তারই পরিণতিতে ফতেহ্ শাহ পরিবর্তিত মানুষ। ফলে, নবদ্বীপে হিন্দুদের নিরুপদ্রব শান্তির প্রতিবেশ প্রায় সুনিশ্চিত। ‘তাই কিছুকাল আগে ব্রাহ্মণেরা নবদ্বীপ ছেড়ে পালিয়ে গেলেও এখন আবার ফিরে আসছেন’। এদেরই একজন জগন্নাথ মিশ্র।

আরও পড়ুন-একুশতলা থেকে পড়ে OYO কর্ণধারের বাবার রহস্যমৃত্যু, শুরু তদন্ত

ইতিহাস বলছে, পতিতপাবন শ্রীচৈতন্যের ভক্তিডোরে বাঁধা পড়ে বাঙালি জাতি নতুন করে প্রাণ ফিরে পায়। তাঁর কীর্তনের গীতপ্রবাহ বহুধাবিভক্ত বাঙালির ধর্মকারার প্রাচীরে আঘাত হানে, ভক্তির এক অভিন্ন ধারায় মিলিয়ে দেয় বৃহত্তর বাঙালি সমাজকে। ভক্তিমার্গের প্রতি আকৃষ্ট মানুষ ভক্তিগীতের অভিন্ন মিছিলে অংশ নেওয়ার ফলে কীর্তন একটা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করে। নগর সংকীর্তন বৈষ্ণবদের কাছে একটা অবশ্যপালনীয় ধর্মীয় কর্ম হিসেবে পরিগণিত হয়। ঢোল, করতাল, মৃদঙ্গ, মন্দিরা সহযোগে নৃত্যগীত ও কৃষ্ণভক্তির মিছিলে নবদ্বীপের পথঘাট মুখরিত হয়ে ওঠে। এভাবে সমাজের সব ধর্মের মানুষ অচিরেই গৌড়ীয় বৈষ্ণবধর্মের কীর্তন মিছিলের সদস্য হয়ে উঠেছিল।
সেই কীর্তনানন্দে বিভোর নিমাইয়ের ছবি ত্রিদিব এঁকেছেন অনবদ্য সারল্যে, অথচ সেই সারল্যে অন্তর্লীন অনবদ্য দীপ্রপ্রভা। ত্রিদিব লিখছেন, “দেশের দিকে ফিরে চলেছেন অন্য নিমাই। অন্য এক মানুষ- শ্রীচৈতন্য। তাঁর চপলতা, অহংকার, ক্রোধ সব মুছে গেছে। আয়ত চক্ষুদুটি ভাবাবেশে বিহ্বল। বিভোর তিনি কৃষ্ণনামে, কৃষ্ণপ্রেমে— ‘কৃষ্ণ রে বাপ রে প্রাণ জীবন হরি / কোন দিকে গেলে তোর প্রাণ করি চুরি’। বজরা মুখরিত হয়ে ওঠে সমবেত নামগানে, ‘হরি হরয়ে নমঃ কৃষ্ণ যাদবায় নমঃ’। সকাল পেরিয়ে দুপুর হয়। সূর্য ঢলে পড়ে পশ্চিমে, সন্ধ্যা নামে… কীর্তনগান চলতেই থাকে অবিরাম।”

আরও পড়ুন-আর নয় বডি শেমিং

ইতিহাস জানাচ্ছে, তথাকথিত ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলির পিছনে সমাজের বিত্তবান শ্রেণির পৃষ্ঠপোষকতা থাকলেও চৈতন্যদেব তেমন কোনও সহযোগিতা লাভ করেননি। বরং তিনি ছিলেন সেসময়কার সমাজপতি ব্রাহ্মণ্য ধর্মের রক্ষক ও ধনী বিষয়ভোগীদের চক্ষুশূল। চৈতন্যের মানবতাবাদ প্রচারকে তারা কখনওই ভাল চোখে দেখেনি, প্রতি পদে পদে তারা চৈতন্যের চলার পথকে কণ্টকাকীর্ণ করে তুলতে সর্ব সচেষ্ট ছিলেন।
দিব্যপুরুষ শ্রীচৈতন্যকে মানব বিশ্বম্ভর হিসেবে এঁকেছেন ত্রিদিব। ইতিহাসের এতটুকু অপলাপ না করেই তিনি এই কাজটি করেছেন সুচারুভাবে।
এই নিমাই হয়ত আমাদের চেনা চৈতন্য নন।
তবে এই নিমাই ইতিহাসসম্মত।

আরও পড়ুন-কোচিতে ফের লকডাউন!

ত্রিদিব চৈতন্যাবতারের নন, ‘আলোর মানুষ’ বইতে মানুষ নিমাইয়ের ছবি লিখেছেন।
“সাধো সহজৈ কায়া সোধো। যৈছে বটকা বীজ তাহি মেঁ, পত্র ফল ফুল ছায়া। কায়া মদ্ধে বীজ বিরাজে, বীজ মদ্ধে কায়া।। অগ্নি, পবন, পানি পিরথী নভ, তা বিন মিলৈ নাঁহী। কাজি পণ্ডিত করো নিরনয়, কো ন আপা মাঁহী।”
সাধক! সবার আগে সরল উপায়ে দেহটাকে পবিত্র করো। দ্যাখো, বটগাছে বীজ আছে। ওই বীজের ভেতরেই ফল, ফুল আর ছায়া, সব আছে। ঠিক একইরকমভাবে, দেহের ভেতর বীজ আর বীজের মধ্যে কায়ার অবস্থান। আগুন, বাতাস, জল, ক্ষিতি, ব্যোম, কোনও কিছুই তাঁকে ছাড়া পাওয়া যায় না। আরে কাজি, পণ্ডিত, তোমরা ভাল করে শোনো, সেই আত্মার ভেতর কী না আছে!
এসব চৈতন্যদেবের কথা নয়।
সন্ত কবীর দাসের কথা।

আরও পড়ুন-জ্যোৎস্না রাতে অমৃতসুধার সন্ধানে

জগতের জঙ্গমতার কথা। জীবনের বহমানতার কথা। চতুর্দিকে পরিবর্তনশীল পৃথিবীর অনুভবের কথা।
“ক্যা মাগো কিছু থির ন রহাঈ। দেখন নৈঁন চলা জগ জাঈ। ইকলখ পূত সওয়া লাখ নাতি। তিহি রাবণ ঘর দিয়া ন বাতি।। লংকা সা কোট সমুঁদ সী খাঈ। তিনি রাবণ ক খবরি ন পাঈ।।”
কিছুই তো স্থির নয় গো, কিছুই তো স্থির নয়। চোখের সামনে দেখছি জগৎ চলে যাচ্ছে। রাবণের ছেলের সংখ্যা ছিল একলাখ আর নাতির সংখ্যা সওয়া লাখ। সেই রাবণ রাজার ঘরে বাতি দেওয়ার মতোও কেউ আজ নেই। চারধারে সমুদ্রের পরিখা, তার মধ্যে রাবণের দুর্গ। সেই রাবণেরও আজ আর কোনও খবর নেই।
তাই কবীর বলছেন, “আওয়ত সংগ ন জাত সংগাতী”। আসার সময় তোমার সঙ্গে কেউ আসেনি, যাওয়ার সময়েও তোমার সঙ্গে কেউ যাবে না। জুয়ারি যেমন শেষ দানে হাত ঝেড়ে দিয়ে চলে যায়, ঠিক সেই রকম জীবনের শেষ দিনে আয়ুর শেষ চালে, তোমারও শূন্য হস্তে যাতায়াত নিশ্চিত। ‘কহৈ কবীর অন্ত কী বারী। … হাথঝারি জৈসৈঁ চলা জুয়ারী’।
এহেন কবীরের কথা লিখতে বসে রসরাজ সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় প্রশ্ন তোলেন, ‘কবীর মুসলমান, জোলা, তাঁত বোনে, তাঁর পূর্বপুরুষ ইসলাম হয়েছিল, স্বেচ্ছায়? না পাঠান শাসনের চাপে? জোর করে মুসলমান করা হয়েছিল?’
তারপর ইতিহাসের অলিগলি খুঁজে উত্তর এনে দেন নিজেই। অনবদ্য অক্ষর বিন্যাসে তৎকালীন সমাজের প্রান্তিক মানুষগুলোর আত্ম-বিপন্নতার খবর ফুটিয়ে তোলেন।

আরও পড়ুন-খারাপ সময় পিছু ছাড়ছে না, ফের বিপাকে ইমরান

“ওপরতলার লাগাতার গালিবর্ষণে একদল মানুষ কীটে পরিণত হল। পল্লির প্রান্তে ঝুপড়িতে দলবদ্ধ অবস্থান। নিজেরাই বলতে লাগল, ছুঁয়ো না, ছুঁয়ো না, ছিঃ, আমি চণ্ডাল, ব্রাত্য, অন্ত্যজ।”
আর সেই হীনমন্যতা জাগিয়ে তোলা প্রহরে ইসলামের আগমন ঘটল ভারতে। ‘নতুন ধর্ম, নতুন বার্তা, নতুন শাসক।’ ইসলাম ধর্মে অন্তর্লীন সাম্য, হিন্দু সমাজের মতো জাতের নামে বজ্জাতি না-থাকা, ‘বাদশা থেকে ভিখারি সব মুসলমান একই সঙ্গে আল্লার উপাসনার অধিকারী’ এই চেতনার প্রগাঢ়তা, এসবের আকর্ষণেই তো, ‘সম্মানজনক জীবনের আঙিনায় বসার সুযোগ পাওয়া যাবে, এই অনুভবেই ব্রাত্য, অন্ত্যজ হিন্দু সমাজ ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিল। শাসকের রক্তচক্ষুতে ত্রস্ত হয়ে শুধু নয়, ইসলামের সমতাবিধান গুণের আকর্ষণও এই ধর্মান্তরিত হওয়ার পিছনে ক্রিয়াশীল ছিল।
এভাবেই মুসলমান হয়েছিলেন বলেই বোধহয় সন্ত কবীর অবলীলায় উচ্চারণ করতে পারেন, “প্রেম গহৌ নিরভয় রহৌ / তনিক ন আবৈ পীর / যহ লীলা হৈ মুক্তিকী / গাওত দাস কবীর।”
প্রেম, প্রেমই সব। জীবনে প্রেম, জীবে প্রেম। প্রেমকেই গ্রহণ করব আর ভয়ডর থাকবে না। লেশমাত্র পীড়াবোধ জাগবে না। কবীর দাসের এই কথাটাই মুক্তির সহজলীলায় অনায়াসবোধ্য সহজিয়া সূত্র।

আরও পড়ুন-খারাপ সময় পিছু ছাড়ছে না, ফের বিপাকে ইমরান

প্রেমরসে উপচীয়মান কবীরের পেয়ালা।
শুধু কবীরের কথা নয়, তাঁর জীবনের কথাও বলেছেন সঞ্জীব। জানিয়েছেন না জানা অনেক কথা। কবীরের সন্তানের কথা।
“ডুবা বংশ কবীরকা, জো উপজা পুত কমাল। হরিকা সুমিরণ ছাড়ি কে, ঘর লে আয়া মাল।।” এই দোঁহার সূত্র ধরে সঞ্জীব জানিয়েছেন, “পিতার পথ থেকে পুত্র সরে এসেছিলেন। পিতার ধর্মমত, পথ গ্রহণ করেননি।” আবার উল্লিখিত দোঁহার ভিন্ন ব্যাখ্যা শোনাতেও দ্বিধা করেননি। কবীরপুত্র কমাল পিতার শিষ্যদের নিয়ে পৃথক সম্প্রদায় গড়তে চাননি, কারণ কবীর ছিলেন ‘ঘোরতর সম্প্রদায় বিরোধী’ সাধক। তখন, যারা তাঁর কাছে সম্পদায় গড়ার প্রস্তাব নিয়ে এসেছিল, তারাই বলেছিল, ‘ডুবা বংশ কবীরকা জো উপজা পুত্র কমাল’। একথা তাদের, কবীরের নয়।
এরকম অসংখ্য কথা আর কাহিনি। টুকরোগুলোকে জুড়ে জুড়ে দুর্দান্ত কোলাজ নির্মাণ।
বইটির শুরুতেই তাই, ভূমিকা লিখতে বসে, সংস্কৃতজ্ঞ অধ্যাপক লোকনাথ চক্রবর্তীর সঠিক উচ্চারণ, “কবীরের কথা এখানে ওখানে ছড়িয়ে ছিল। তাতে ইতিহাস ও সাহিত্যের আলো প্রক্ষেপণ করে লেখক (সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়) মূল চরিত্রটিকে (কবীর) আমাদের আমাদের আরও কাছে নিয়ে এসেছেন।”

আরও পড়ুন-চাপ সামলাতে শিখেছি : ইগা

সেই কাজ করতে গিয়ে কবীরের বলা শব্দ-সাধনার পরামর্শ রবীন্দ্রনাথে কীভাবে তরঙ্গায়িত হয়েছে তা যেমন দেখিয়েছেন, তেমনই কবীরের ভাবাদর্শ বোঝাতে হাত ধরেছেন রামকৃষ্ণ-বিবেকানন্দের। কালের তাঁতে আলোর চাদর বুনে কবীর কীভাবে অমর হয়েছেন, সেটা বোঝাতে ওঙ্কারনাথ থেকে রুমি, সবার প্রসঙ্গ উত্থাপন করেছেন। এ এক অত্যাশ্চর্য পন্থা অবলম্বন।
সব মিলিয়ে, ‘আলোর মানুষ’ ও ‘কবীরের প্রেম পেয়ালা’ ভারতের ভক্তি আন্দোলনের প্রবাহে দুটি যুগপুরুষের জীবন ও ভাবনা আজকের ও আগামীর কাছে অনুভববেদ্য করে তোলার জন্য অতি দরকারি সাহায্য হয়ে উঠেছে।

আরও পড়ুন-জার্মানির গির্জায় বন্দুকবাজের হামলা, মৃত ৮

বই : আলোর মানুষ
ত্রিদিবকুমার চট্টোপাধ্যায়
প্রকাশক: পত্রভারতী
দাম: ২৭৫ টাকা

বই : কবীরের প্রেম পেয়ালা
সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়
প্রকাশক: কমলা-গীতা-বীণা প্রকাশনী, বরানগর
একমাত্র পরিবেশক: পত্রভারতী
দাম: ১৭০ টাকা

Latest article