৭.৫ লক্ষ কোটির দুর্নীতিই মোদি সরকারের ভূষণ

এমনকী সাধারণ মানুষের কথা না ভেবে জাতীয় সড়কে টোল আদায়ের নিয়ম ভেঙে যাত্রীদের থেকে ১৫৪ কোটি টাকার টোল আদায় করা হয়েছে

Must read

নবনীতা মণ্ডল, নয়াদিল্লি : দুর্নীতিই মোদি সরকারের ভূষণ। ক্যাগ রিপোর্ট প্রকাশের পর দুর্নীতি আর বিজেপি সরকার কার্যত সমার্থক হয়ে উঠেছে। ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে কম্পট্রলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল বা ক্যাগের রিপোর্টে প্রশ্নের মুখে মোদি সরকারের কাজকর্ম। গত সপ্তাহেই সংসদে পেশ হয়েছে ক্যাগ রিপোর্ট। সেই সরকারি রিপোর্টেই ফাঁস মোদি জমানার ৭.৫ লক্ষ কোটি টাকার দুর্নীতি।

আরও পড়ুন-চাঁদের দেশের দোরগোড়ায় পৌঁছে গেল চন্দ্রযান-৩, আলাদা হল ল্যান্ডার বিক্রম

মোদি সরকারের ন’বছরের শাসনে বিভিন্ন প্রকল্প মিলিয়ে এই দুর্নীতি হয়েছে। কোনও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান নয়, সরকারি সংস্থা ক্যাগ এই বেনিয়মের তথ্য সংসদে পেশ করেছে। যেকোনও ইস্যুতে বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলির সমালোচনা করে বিজেপি, অথচ নিজেরাই লক্ষ কোটির দুর্নীতি করে নির্বিকার! এখনও পর্যন্ত শাসকপক্ষের তরফে এনিয়ে একটি শব্দও ব্যয় করা হয়নি। রিপোর্ট সামনে আসতেই মোদি সরকারের বিরুদ্ধে সরব তৃণমূল সহ বিরোধীরা।

আরও পড়ুন-বাংলা থেকে মার্কিন মুলুকে রফতানি বেড়েছে ৫৫ শতাংশ

আয়ুষ্মান ভারত, ভারতমালা, অযোধ্যা উন্নয়ন প্রকল্প, গরিব পেনশন প্রকল্পসহ একাধিক কেন্দ্রীয় সরকারি প্রকল্পে এই দুর্নীতির রিপোর্ট প্রকাশ করেছে ক্যাগ। কেন্দ্রীয় সরকারের ‘স্বদেশ দর্শন’ প্রকল্পের অন্তর্গত অযোধ্যা শহরের উন্নয়নে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে বলে জানিয়েছে সিএজি। যার মধ্যে রয়েছে ঠিকাদারদের বিশেষ সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার স্বার্থে ব্যাপক হারে দুর্নীতি।

আরও পড়ুন-মোদির ৬-জি জুমলার নমুনা

২০১৫’র জানুয়ারি থেকে ২০২২-এর মার্চ পর্যন্ত সময়ে স্বদেশ দর্শন প্রকল্পের অডিট রিপোর্ট তৈরি করেছে কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল। সেখানে উঠে এসেছে ব্যাপক দুর্নীতি। তবে শুধু অযোধ্যাই নয়, বিজেপির ডবল ইঞ্জিন সরকারের বহুল প্রচারিত দ্বারকা এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের ক্ষেত্রেও দুর্নীতি প্রকাশ পেয়েছে। ক্যাগ রিপোর্টে জানানো হয়েছে, ৬টি রাজ্যের ৬টি প্রকল্পে যুক্ত ঠিকাদারদের বেআইনিভাবে ১৯.৭৩ কোটি টাকার সুবিধা পাইয়ে দেওয়া হয়েছে। এই ৬টি প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে অযোধ্যা শহরের আধুনিকীকরণও।

আরও পড়ুন-মৃত্যু ও ধ্বংসের উপত্যকা, প্রধানমন্ত্রীকে চিঠিতে ক্ষোভ ১০ কুকি-জো বিধায়কের

রিপোর্ট অনুযায়ী, দিল্লি-গুরুগ্রাম সংযোগকারী ৪৮ নম্বর জাতীয় সড়ক যানজটমুক্ত করতে ১৪ লেনের রাস্তা তৈরিতে কিলোমিটার প্রতি ১৮.২০ কোটি টাকা বরাদ্দ করে অর্থনৈতিক বিষয়ক ক্যাবিনেট কমিটি। যদিও কিলোমিটার প্রতি ২৫০.৭৭ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। সারা দেশেই ‘ভারতমালা’ প্রকল্পে রাস্তা তৈরিতে অনুমোদিত অর্থের থেকে ৫৮ শতাংশের বেশি খরচ করা হয়েছে।
ক্যাগ রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতমালা, অযোধ্যা উন্নয়ন ছাড়াও আয়ুষ্মান ভারত প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্য প্রকল্পে একটি মাত্র মোবাইল নম্বরে ৭.৫ লক্ষ মানুষের নাম যুক্ত করা হয়েছে। এমনকী মৃতদের নামেও স্বাস্থ্যবিমায় চিকিৎসার অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের পেনশন প্রকল্প থেকে ২ কোটি ৮৩ লক্ষ টাকা অন্য প্রকল্পের প্রচারে খরচ করা হয়েছে।

আরও পড়ুন-মেডিক্যাল কলেজে অ্যান্টি র‍্যাগিং স্কোয়াড

রাস্তায় অর্থ সংস্থা হ্যালে বিমানের ইঞ্জিনের নকশা এবং উৎপাদনে খামতির জন্য ১৫৯ কোটি টাকার লোকসান হয়েছে। এমনকী সাধারণ মানুষের কথা না ভেবে জাতীয় সড়কে টোল আদায়ের নিয়ম ভেঙে যাত্রীদের থেকে ১৫৪ কোটি টাকার টোল আদায় করা হয়েছে। আর এতকিছুর পরেও নির্লজ্জ সরকার বিরোধীদের দিকে আঙুল তোলে, বকেয়া আটকে রাখে।

Latest article