আগামী ১৬ আগস্ট থেকে রাজ্যে শুরু হয়ে যাচ্ছে ‘দুয়ারে সরকার’ শিবির। এই শিবিরে ১৫টি সরকারি স্কিমে আবেদন করা যাবে।
‘দুয়ারে সরকার’ ও ‘পাড়ায় সমাধান’ প্রকল্পকে রাজ্যের স্থায়ী কর্মসূচির অন্তর্গত করতে চান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এখন থেকে বছরে দু’বার হবে এই প্রকল্প দু’টির কাজ। প্রথম পর্ব শুরু হচ্ছে আগস্টে। দ্বিতীয়টি নভেম্বর-ডিসেম্বরে।
আরও পড়ুন-ফোন হ্যাকিংকাণ্ড: ‘সীমাহীন সুবিধাবাদী’কে সরাসরি চ্যালেঞ্জ কুণাল ঘোষের
রাজ্যব্যাপী ‘দুয়ারে সরকার’ ও ‘পাড়ায় সমাধান’ কর্মসূচির জন্য ত্রিস্তরীয় টাস্কফোর্সও গঠন করা হয়েছে। মুখ্যসচিবকে মাথায় রেখে স্টেট লেভেল অ্যাপেক্স কমিটি গড়া হয়েছে। এই টাস্ক ফোর্সের নেতৃত্ব দেবেন পরিকল্পনা, পরিসংখ্যান ও কর্মসূচি রূপায়ণ দফতরের প্রধান সচিব। এ ছাড়াও ১৯টি গুরুত্বপূর্ণ দফতরের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব বা প্রধানসচিবরা এই কমিটির সদস্য। প্রয়োজন দেখা দিলে কমিটির বাইরে থাকা দফতরগুলির প্রধানদেরও কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হবে৷ পাশাপাশি জেলা ও ব্লকস্তরেও দু’টি করে টাস্কফোর্স তৈরি করা হয়েছে। জেলাস্তরে কমিটির প্রধান করা হয়েছে জেলাশাসককে। ব্লকস্তরের কমিটির প্রধান হবেন বিডিওরা। রাজ্যের মুখ্যসচিব এ সংক্রান্ত নির্দেশিকাও জারি করেছেন। ১৬ আগস্ট থেকে শুরু হয়ে যাচ্ছে ‘দুয়ারে সরকার’ শিবির।
এই শিবিরে ১৫টি সরকারি স্কিমে আবেদন করা যাবে। প্রতিটির জন্য পৃথক টেবিল থাকবে।
‘দুয়ারে সরকার’ ও ‘পাড়ায় সমাধান’ কর্মসূচি সুষ্ঠুভাবে রূপায়ণ করতে মুখ্যসচিবের নির্দেশিকা জেলায় জেলায় পাঠানো হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, ২০২০-’২১ সালে ‘দুয়ারে সরকার’ ও ‘পাড়ায় সমাধান’ কর্মসূচি অভূতপূর্ব সাড়া ফেলেছে। সেই কারণেই প্রতি বছরে দু’বার এই কর্মসূচি নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। গ্রাম পঞ্চায়েত ও পুরসভা এলাকায় ওয়ার্ডভিত্তিক ওই শিবির হবে। গোটা কর্মসূচির রূপায়ণ এবং নজরদারির জন্য জেলাস্তরের টাস্ক ফোর্স কমিটিতে পুলিস কমিশনার বা পুলিস সুপার, অতিরিক্ত জেলাশাসক, মহকুমা শাসক, প্রতিটি দপ্তরের নোডাল অফিসার, জেলা তথ্য ও সংস্কৃতিক আধিকারিক প্রমুখ থাকবেন। ব্লকস্তরের কমিটিতে রাখা হয়েছে থানার আইসি বা ওসি, বিভিন্ন দপ্তরের ব্লকস্তরের অফিসার ও ব্লকের এক্সটেনশন অফিসারদের।
জানা গিয়েছে, এবার বেশ কয়েকটি নতুন পরিষেবার সুযোগ মিলবে।
আরও পড়ুন-ফ্রান্সের সরকারি সংস্থাই প্রথম স্বীকার করল পেগাসাসের মাধ্যমে হ্যাক হয়েছে ফোন
এবার মানুষের দরজায় প্রশাসনকে নিয়ে গিয়ে যাবতীয় সরকারি পরিষেবা দান এবং সমস্যার সমাধান করার এই কর্মসূচি চলবে অন্তত দেড় মাস ধরে। ১৬ আগস্ট থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ‘দুয়ারে সরকার’-এর শিবির চলবে। আবেদনগুলি খতিয়ে দেখা হবে ৮ থেকে ২৩ সেপ্টেম্বর। ২৪ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর আবেদনকারীদের হাতে শংসাপত্র ও পরিষেবা দেওয়া হবে। একইভাবে ১৬ থেকে ৩১ আগস্ট ‘পাড়ায় সমাধানের’ও শিবিরও চলবে। যে সব কাজের তালিকা জমা পড়বে, তা নিয়ে প্রজেক্ট শুরু হবে ১ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে। ১-৮ অক্টোবর বেরবে ওয়ার্ক অর্ডার, তারপর আনুষ্ঠানিকভাবে কাজের সূচনা হবে। এবার খাদ্যসাথী, ডিজিটাল রেশন কার্ড, স্বাস্থ্যসাথী, কাস্ট সার্টিফিকেট, শিক্ষাশ্রী, তফসিলি বন্ধু, জয় জোহার, কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, মানবিক, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, কৃষকবন্ধু (নিউ), একশো দিনের কাজ, স্টুডেন্টস ক্রেডিট কার্ড, ঐক্যশ্রী, ব্যাঙ্কিং বিষয়ক সমস্যা, আধার কার্ড, জমির রেকর্ড সংশোধন ও সামাজিক সুরক্ষা যোজনা নিয়ে আবেদন করা যাবে।
আরও পড়ুন-১৫ অগাস্টের কুচকাওয়াজে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, স্টুডেন্টস ক্রেডিট কার্ডের ট্যাবলো
এর আগে গত বছর ১ ডিসেম্বর থেকে ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত রাজ্যব্যাপী তিন দফায় ‘দুয়ারে সরকার’-এর শিবির হয়েছে। সেবার স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড করানোর ব্যাপারে সবচেয়ে বেশি সাড়া পড়েছিল। এবার লক্ষ্মীর ভাণ্ডার নিয়ে সাড়া পড়বে বলে সরকারি অফিসাররা মনে করছেন। পাশাপাশি স্টুডেন্টস ক্রেডিট কার্ডের জন্যও আবেদন জমা পড়ার সম্ভাবনা।