পূর্ণেন্দু রায়, নয়াদিল্লি : ২০১৯ সালের ৯ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্ট উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যায় রামমন্দির নির্মাণের অনুমতি দিয়েছিল। ওই নির্দেশের পর দেশের মানুষের অন্যতম আকর্ষণের কেন্দ্রস্থল হয়ে উঠেছে অযোধ্যা। বিনিয়োগে লাভের গন্ধ পেয়ে অনেকেই তাই অযোধ্যায় জমি কেনার প্রতিযোগিতায় শামিল হয়েছেন। তবে এই ক্রেতারা কেউই সাধারণ মানুষ নন। জমির ক্রেতাদের মধ্যে রয়েছে বিপুল সংখ্যক বিজেপি বিধায়ক ও তাঁদের আত্মীয়রা, যোগীরাজ্যের পদস্থ আমলা ও তাঁদের পরিবার–পরিজনরা।
আরও পড়ুন-আবার ধাক্কা খেল বিজেপি
সর্বভারতীয় এক সংবাদমাধ্যমের অন্তর্তদন্তে উঠে এসেছে, অযোধ্যায় নিযুক্ত সরকারি কর্মকর্তা থেকে শুরু করে স্থানীয় ও শীর্ষস্তরের বিজেপি নেতাদের মধ্যে অযোধ্যায় জমি কেনার কার্যত প্রতিযোগিতা চলছে। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর সকলেই অযোধ্যা সংলগ্ন জমির বাজারমূল্যের হিসেব কষে রামমন্দিরের ৫ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে জমি কিনছে। যেহেতু রামমন্দির নির্মাণের পর অযোধ্যা দেশের অন্যতম ধর্মীয় পর্যটনস্থল হয়ে উঠবে এবং এই এলাকায় পরিকাঠামোগত প্রচুর সুযোগ–সুবিধে মিলবে, তাই এখানে জমি কেনাবেচায় ঝাঁপিয়ে পড়েছে কিছু প্রভাবশালী মানুষ। বলাই বাহুল্য এদের সিংহভাগই শাসকদল বিজেপির ঘনিষ্ঠ বা পদাধিকারী৷
আরও পড়ুন-শিক্ষায় বাজেট-বরাদ্দ কমেছে, সংসদে স্বীকার করল কেন্দ্র
ইতিমধ্যেই জমি কেনাবেচাকে কেন্দ্র করে নানা অনিয়মের অভিযোগও উঠেছে। যেমন, মহর্ষি রামায়ণ বিদ্যাপীঠ ট্রাস্ট (এমআরভিটি) স্থানীয় দলিত গ্রামবাসীদের কাছ থেকে অবৈধভাবে বহু জমি কিনেছে বলে অভিযোগ। আবার এই অনিয়মের অভিযোগের তদন্তে যে সরকারি অফিসারদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, সেই অফিসারদের আত্মীয়রাই অযোধ্যায় জমি কিনে অনৈতিক সুবিধা নিয়েছেন বলে অভিযোগ।
অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বিজেপি নেতা, বিধায়ক বা দলীয় পদাধিকারীরা পরিবারের অন্য সদস্যের নামে জমি কিনে রেখেছেন৷ আবার সরকারি আমলাদের ক্ষেত্রেও একই ছবি৷ জমি কেনা হয়েছে আত্মীয়দের নামে৷ যাঁরা নিজের নামে কিনেছেন, তাঁদের অনেকেই যুক্তি দিচ্ছেন অবসরের পর অযোধ্যায় থাকার পরিকল্পনা থেকেই এই সিদ্ধান্ত৷ সব মিলিয়ে অযোধ্যার জমি নিয়ে চূড়ান্ত নয়ছয়ের ছবি সামনে আসছে৷ দুর্নীতি আর স্বজনপোষণ হাত ধরাধরি করে চলেছে যোগীরাজ্যে৷