বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী, আলিপুরদুয়ার : মুখ্যমন্ত্রী যেখানে উত্তরের চা-শিল্পের উন্নয়ন নিয়ে ভাবেন, সেখানে এবারের বাজেটে কেন্দ্রীয় সরকার একটিবারের জন্যও মুখ তুলে তাকাল না এই রুগ্ণ শিল্পের দিকে। যে-সময় কেন্দ্রীয় সরকারের বন্ধু শিল্পপতিদের সুবিধার জন্য কর্পোরেট ট্যাক্স কমানো হল তখন সাধারণ চা-শ্রমিকদের জীবনযাপনের মান উন্নয়নে কোনও দিশাই দেখানো হল না এবারের কেন্দ্রীয় সাধারণ বাজেটে। যার ফলে চরম হতাশা নেমে এসেছে চা-শিল্পে।
আরও পড়ুন-সরস্বতী পুজোতে জমজমাট থিমের লড়াই
এ-বিষয়ে তৃণমূল চা-শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি বীরেন্দ্র ওরাওঁ বলেন, ‘‘আমাদের মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রের অর্থনৈতিক বঞ্চনা সত্ত্বেও উত্তরের চা-শিল্প ও চা-শ্রমিকদের জন্য সবসময় ভাবেন, সেখানে এবারের কেন্দ্রীয় বাজেটে এই শিল্পের প্রাপ্তি শুধুই বঞ্চনা।” অথচ এবার কিন্তু চা-শিল্পকে চাঙ্গা করার যথেষ্ট সুযোগ ছিল। দীর্ঘদিন ধরে পাকিস্তানে চা রফতানি বন্ধ। প্রতি বছর ভারত থেকে একটা বিশাল পরিমাণে চা সেখানে যেত। পাশাপাশি অন্য দেশগুলিতেও রফতানি বৃদ্ধির কোনও পরিকল্পনাই এদিন বাজেটে উঠে এল না। চা-চাষের উপকরণের মূল্যবৃদ্ধির কারণে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ছে ভারতীয় চা।
আরও পড়ুন-তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রকের হিসেব
তার বদলে সেইসব বাজার দখল করেছে অপেক্ষাকৃত সস্তা কেনিয়া ও শ্রীলঙ্কার চা। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের উন্নতিসাধনে আলাদা তহবিলের ঘোষণা করলেও চা-শিল্প সেই তহবিলের সুবিধা পাবে কি না তা স্পষ্ট নয়। অন্যান্য ক্ষেত্রে সহজ শর্তে ঋণের কথা উল্লেখ থাকলেও, চা-শিল্পে নতুন বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এই ধরনের কিছুই দেখা গেল না বাজেটে। এমনকী ক্ষুদ্র চা-চাষিদের উৎসাহ দিতে আলাদা করে কিছু বলা নেই এই বাজেটে। যার ফলে এই বাজেটের পর চরম হতাশা নেমে এসেছে উত্তরের চা-বলয়ে।