আমেদাবাদ: জাতীয় দলে এই আছেন, এই নেই! তবু কলকাতা তাঁকে চেনে। ইনি প্রসিধ কৃষ্ণ। আইপিএল এলে টিভিতে দেখা যায়। সেটা আর এক নাইট বলে।
তবে বুধবার ছিল অন্যদিন। মোতেরায় না আইপিএল ছিল না কেকেআর। তবু প্রসিধই ম্যাচ জুড়ে থাকলেন। টিভি জুড়েও। ৯ ওভারে ১২ রানে চার উইকেট। ফলে এরকমই হওয়ার কথা। ভারতকে ৪৪ রানে জেতালেন বেঙ্গালুরুর তরুণ। বুমরা, শামি ফিরলে হয়তো ফের আড়ালে চলে যাবেন। কিন্তু নতুন অধিনায়ক, নতুন কোচের জামানায় নতুন মুখের ভিড়ে প্রসিধ নিজের নাম লিখে গেলেন। ফিটনেস-জনিত সমস্যায় হেটমেয়ারকে দেশেই রেখে এসেছে ক্যারিবিয়ানরা। পুরান একদম ছন্দে নেই। অধিনায়ক পোলার্ড আবার চোট নিয়ে ম্যাচের বাইরে। এতে কোথায় যেন ব্যাটিংয়ে ফাঁক থেকেই গিয়েছিল। যার প্রভাব পড়ল বুধ-সন্ধার ব্যাটিংয়ে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের (India vs West Indies) অর্ধেক ব্যাটিং শেষ হয়ে গেল ৭৬ রানে। মোটামুটি এই রানেই প্রথম ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাত উইকেট চলে গিয়েছিল। ম্যাচের ভাগ্য কোনদিকে গড়াচ্ছে, তখনই পরিষ্কার। শেষমেশ ১৯৩ রানে শেষ তাদের ইনিংস। বাকি ছিল ২৪ বল।
সামারা ব্রুকস ৬৪ বলে ৪৪ করে তবু কিছুটা সামাল দিয়েছিলেন। তারপর আকিল (৩৪) আর অ্যালেন (১৩) ছোট্ট পার্টনারশিপ খেলে হাল আরও খারাপ হওয়া আটকেছিলেন। কিন্তু দিনের শেষে ছবিটা বদলায়নি। শেষদিকে পোলার্ডের বদলি ওডিন স্মিথ (২৪) সামান্য ক্যামিও করলেন। কিন্তু প্রসিধ কৃষ্ণ ক্রস সিমের চতুর ব্যবহার করে খান চারেক উইকেট নিয়ে যে ধাক্কা দিয়েছিলেন, ক্যারিবিয়ানরা তা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। ওয়েস্ট ইন্ডিজ দ্বিতীয় ম্যাচেও হেরে গেল। এতে সিরিজও গেল। ০-২ পিছিয়ে থেকে নিয়মরক্ষার শেষ ম্যাচ খেলতে হবে পোলার্ডদের।
আমেদাবাদের এই উইকেটে একটা চোরা বাউন্স আছে। যেটা প্রথম ম্যাচে বোঝা যায়নি। বিরাট ঠিক এতেই নিজের উইকেট দিয়ে গেলেন। দলের আরও কয়েকজন। তবে এই বাউন্সের কথা বলে আর একটা ব্যাটিং ব্যর্থতাকে এড়িয়ে যাওয়া যাবে না। ঋষভ পন্থকে শুরুতে নিয়ে আসার প্ল্যানও এদিন ডাহা ফেল করেছে। ৩৪ বলে ১৮ করে ঋষভ যখন ফিরে গেলেন, ভারত ৩৯/২। তার আগে ৯ রানে রোহিত (৫) ফিরে গিয়েছেন। তারপর ৪৩-এ বিরাট (১৮)। মনে হচ্ছিল আগের ম্যাচের রিপ্লে চলছে।
আরও পড়ুন-নির্বাচনী ইস্তাহার প্রকাশ করল তৃণমূল কংগ্রেস, দার্জিলিং হবে কর্পোরেশন
পোলার্ড চোটের জন্য বাইরে যাওয়ায় এই ম্যাচে (India vs West Indies) ক্যারিবিয়ান দলের নেতৃত্ব দিলেন নিকোলাস পুরান। তিনি টসে জিতে ভারতকে ব্যাট করতে দেওয়ার পর থেকে ঝঞ্ঝাটের শুরু। রোহিতের অফ স্ট্যাম্পের বাইরের বলে সমস্যা আছে। সেভাবেই উইকেটের পিছনে ক্যাচ দিয়ে গেলেন। ঋষভ নাইনথ স্ট্যাম্পের বলকে হুক করে নিজেকে তুলে দিলেন হোল্ডারের হাতে। এরপর বিরাটের পালা। গুড লেংথ ভেবে যে বলকে কভার বাউন্ডারিতে পাঠাতে গিয়েছিলেন, সেটা বাড়তি গতিতে এসে তাঁর ব্যাট ছুঁয়ে চলে গেল উইকেটকিপার শাই হোপের হাতে।
ভারত যে এরপরও ৫০ ওভারে ২৩৭ রান করল, সেটা সূর্য (৬৪) ও রাহুলের (৪৯) জন্য। এই জুটিটা দাঁড়িয়ে না গেলে বোলাররা লড়ার রানই হাতে পেত না। সূর্যর এটা টানা দ্বিতীয় হাফ সেঞ্চুরি। রাহুল প্রথম ম্যাচে খেলেননি। বুধবার খেলেই রান পেলেন। ওপেনিং থেকে তাঁকে পিছনে আনা হয়েছিল মিডল অর্ডারকে স্থিরতা দিতে। সেই প্ল্যানে অবশ্য অনেকটাই সফল দ্রাবিড়ের দল। আর জেতার পর দ্রাবিড়ের মুখে চওড়া হাসি দেখে এটাই বলতে হবে যার শেষ ভাল, তার সব ভাল।