দেবর্ষি মজুমদার, বীরভূম : যেভাবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে সটান তৃণমূল কংগ্রেসের (Trinamool Congress) দলীয় কার্যালয়ে হাজির হয়ে বিরোধী প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থক নিয়ে যোগদানের হিড়িক চলছে জেলা জুড়ে, তাতে কেউ বলতে পারছে না, আদপে জেলার পাঁচটি পুরসভার ক’টিতে ভোট হবে! ইতিমধ্যে সিউড়ি পুরসভার আটটি ওয়ার্ড বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তৃণমূলের দখলে চলে এল বলে সূত্রের খবর। ওয়ার্ডগুলি হল ৬, ৭, ৮, ১৫, ১৬, ১৭, ২০,২১। ৮ নং ওয়ার্ডের পর অধিক রাত্রে সিউড়ির ১৬ নং ওয়ার্ডে বিজেপি প্রার্থী অপর্ণা দাস বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরির হাত ধরে তৃণমূলে যোগদান করেন।
অপর্ণা দাস বলেন, তিনি আগে তৃণমূলে ছিলেন। প্রলোভনের ফাঁদে পড়ে বিজেপির প্রার্থী হন। শুক্রবার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করবেন। সিউড়িতে আট ও ষোলোর পর আরও ছ’টি ওয়ার্ডে বিনাপ্রতিদ্বন্দিতায় জয়ী হল তৃণমূল। প্রতিক্রিয়া চাইলে সিউড়ির বিধায়ক তথা জেলাপরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরি বলেন, এখন সবাই গান গাইছে ‘আমায় একটু জায়গা দাও। তোমার মন্দিরে বসি।’ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবই, তবে বিরোধীশূন্য পুরসভা চাই না। কাজের সমালোচনা না হলে ভাল লাগে? কিন্তু বিরোধীদের সংগঠন নেই। পেশাদারিত্ব নেই। শখের দল করলে হবে? মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে। স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে চিকিৎসার জন্য পাঁচ লক্ষ টাকা ভরে দেওয়া। মহিলাদের হাতখরচ দেওয়া। এসব কোন দল করতে পেরেছে? রামপুরহাটেও একইভাবে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তৃণমূলে (Trinamool Congress) যোগদান করেন সিপিএম প্রার্থী রূপা হাজরা। পাশাপাশি মনোনয়নপত্রে তথ্য গোপন করার জন্য বাছাইপর্বে চার নং ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী হেমা হরিজনের মনোনয়ন বাতিল ঘোষণা করেন মহকুমা রিটার্নিং অফিসার তথা মহকুমা শাসক সাদ্দাম নাভাস।
আরও পড়ুন – পানিত্রাসের শরৎমেলার থিম হল লোকশিল্প
শুক্রবার রামপুরহাট পুরসভার এগারো নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী সন্দীপ চক্রবর্তী বাড়ি থেকে বাইক চালিয়ে সটান রামপুরহাট দলীয় কার্যালয়ে হাজির হয়ে তৃণমূলে যোগদানের ইচ্ছা প্রকাশ করেন। সন্দীপবাবু বলেন, আমি নিজেই চলে এসে আমাকে দলে নেওয়ার জন্য অনুরোধ করি। এর ফলে এগারো নং ওয়ার্ডে থাকল শুধুমাত্র কংগ্রেস প্রার্থী অমল শেখ। তিনি আগে তৃণমূলে ছিলেন। তাঁর পুরানো দলে ফিরে আসার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে বলে সূত্রের খবর। পাশাপাশি এদিন রামপুরহাট পুরসভার আঠারো নং ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী দীনেশ মণ্ডলের নির্বাচনী এজেন্ট নারায়ণ মণ্ডল, ওই ওয়ার্ডের বিজেপি যুব মোর্চার সম্পাদক শুভজিৎ মণ্ডল তৃণমূলে যোগদান করেন। অন্যদিকে, রামপুরহাট পুরসভার লোকো পাড়ার ত্রিশজন এবং শ্রীফলা এলাকার ষোলোজন বিজেপি কর্মী তৃণমূলে যোগদান করেন। বিজেপির জেলা সহসভাপতি শ্রাবস্তী বন্দ্যোপাধ্যায় মুখোপাধ্যায় ষোলো নং ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, আমাকে একাই প্রচার করতে হবে। কর্মী-সমর্থক কেউ থাকল না। দুবরাজপুর পুরসভার আপাতত পাঁচ, আট, নয়, চোদ্দো, পনেরো-সহ মোট পাঁচটি ওয়ার্ডে তৃণমূল বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয় বলে জানান, তৃণমূল নেতা প্রভাত চট্টোপাধ্যায়।