সোমবার দেশপ্রিয় পার্কে ভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলা গানে-কবিতায় একুশে উদযাপন হয়। অনুষ্ঠানে প্রয়াত শিল্পীদের কথা স্মরণ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তিনি বলেন, “বাংলা ভাষায় নিয়ে কথা বলতে গিয়ে খুবই খারাপ লাগে। সন্ধ্যা দি চলে গেলেন। সুচিত্রা সেন থেকে সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়, মাধবী মুখোপাধ্যায়, শর্মিলা ঠাকুর সকলের কণ্ঠে তিনি গান গেয়েছেন। সংগীতের স্বর্ণযুগ ছিল সেটি। কোনওদিনও সেই দিন আর ফিরে আসবে না। কোনও বিকল্প নেই তাঁর। এখন তো কত বাদ্যযন্ত্র, প্রযুক্তি আছে। তখন তো এতকিছু ছিল না।শুধু তাঁদের গলার জোরেই তাঁরা গান গেয়েছেন। সুরের সরস্বতীকে আর ফিরে পাওয়া যায় না।”
এরপর প্রয়াত সঙ্গীত শিল্পী লতা মঙ্গেশকর ও বাপ্পি লাহিড়ী র কথা স্মরণ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “লতা মঙ্গেশকরও হারিয়ে গেলেন। লতাকণ্ঠী কোয়েল, দোয়েলকে খুঁজে পাওয়া যায় না। বাপ্পি লাহিড়ীও ছাত্র যৌবনের মন কেড়েছিলেন। যে গানগুলি আজকালকার ছেলেমেয়েরা পছন্দ করে, সেগুলিই গেয়েছেন তিনি। তাছাড়াও মঙ্গলদীপ জ্বেলে গেয়েছিলেন তিনি। আমার সঙ্গে বাপ্পিদার দেখা হলে বলতেন মমতা আমাকে দু’টো গান লিখে দিও। আমি গাইব। আমি গানও দিয়েছিলাম। হয়ত কোনও কারণে ওঁর গেয়ে ওঠা হয়নি।”
সদ্য প্রয়াত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, “সাধনদাও মারা গেলেন, সুব্রতদাও মারা গিয়েছেন। সু্ব্রতদা প্রতিবার এই অনুষ্ঠানে আসতেন।” এদিন ভাষা দিবসে বঙ্কিমচন্দ্র থেকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, কাজী নজরুল ইসলামের কথা স্মরণ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বাংলায় জন্মেছি, গর্ববোধ করি। আমাদের জাতীয় সংগীত জন গণ মন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা। বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত আমার সোনার বাংলাও কবিগুরুর লেখা। আবার আমাদের রাষ্ট্রগীতি বন্দেমাতরম বঙ্কিমচন্দ্রের লেখা। সবক্ষেত্রেই কিন্তু বাংলা ভাষা রয়েছে। সবসময় মনে রাখা দরকার এই ভাষা দিবসের ইতিহাস। একুশে ফেব্রুয়ারি আমরা যেন ভুলতে নাড়ি।”
আরও পড়ুন – দলের নির্দেশ অমান্য দক্ষিণে বহিষ্কার
মাতৃভাষা দিবসে সকল ভাষার মানুষকে সম্মান জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আজ মাতৃভাষা দিবসে সব ভাষাভাষি মানুষকে অভিনন্দন জানাই। আমাদের ভাষার অবলুপ্তি যেন না ঘটে সেটা মাথায় রাখতে হবে। সব ভাষাকে ভালোবাসব। কিন্তু, নিজে যে ভাষায় মা বলতে শিখেছি সেটাকে একটু বেশি ভালোবাসতে হবে। বাচ্চাদের কোনও দোষ নেই বাবা-মায়েরাই তাদের বাংলা শেখানোর চেষ্টা করেন না।”
এরপর বাংলার আরও এক গর্ব দুর্গাপুজোর প্রসঙ্গ উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমরা দুর্গাপুজোর কার্নিভাল করি। এবার পুজোর আগেই একটা মিছিল হবে। ১ সেপ্টেম্বর ওই র্যালি হবে। এতে ক্লাবগুলো আগে থেকেই উদ্যম পাবে। আবার পুজোর শেষেও মিছিল হবে।”